শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৫৩ অপরাহ্ন

উপ-সম্পাদক :: দিদার সরদার
প্রধান সম্পাদক :: সমীর কুমার চাকলাদার
প্রকাশক ও সম্পাদক :: কাজী মোঃ জাহাঙ্গীর
যুগ্ম সম্পাদক :: মাসুদ রানা
সহ-সম্পাদক :: এস.এম জুলফিকার
প্রধান নির্বাহী সম্পাদক :: মামুন তালুকদার
নির্বাহী সম্পাদক :: সাইফুল ইসলাম
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক :: আবুল কালাম আজাদ
সংবাদ শিরোনাম :
খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও তারেক রহমানের সুস্থতা কামনায় গৌরনদীতে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত গৌরনদীতে এতিমখানা ও মাদ্রাসার দরিদ্র, অসহায় শিক্ষার্থীদের মাঝে ঈদ বস্ত্র বিতরণ ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত বরিশালে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কারাবন্ধী ও রাজপথে সাহসী সৈনিকদের সম্মানে ইফতার দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত আদালতে মামলা চলমান থাকা অবস্থায়, দখিনের খবর পত্রিকা অফিসের তালা ভেঙে কোটি টাকার লুণ্ঠিত মালামাল বাড়িওয়ালার পাঁচ তলা থেকে উদ্ধার, মামলা নিতে পুলিশের রহস্যজনক ভূমিকা গলাচিপা উপজেলা প্রেসক্লাবের কমিটি গঠন, সভাপতি হাফিজ, সম্পাদক রুবেল চোখের জলে বরিশাল প্রেসক্লাব সভাপতি কাজী বাবুলকে চির বিদায় বিএনপি নেতা জহির উদ্দিন স্বপন কারামুক্ত উচ্চ আদালতে জামিন পেলেন বরিশাল মহানগর বিএনপির মীর জাহিদসহ পাঁচ নেতা তসলিম ও পিপলুর নেতৃত্বে বরিশাল জেলা উত্তর ও দক্ষিণ যুবদলের বরিশাল নগরীতে কালো পতাকা মিছিল হিউম্যান ফর হিউম্যানিটি ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে গৌরনদীতে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে বই বিতরণ
সুষম খাবার, আন্ত:প্রজনন রোধ, ভ্যাক্সিনেশন আর কৃত্রিম প্রজনন অত্যন্ত জরুরী, মহিষে ঘুরতে পারে চরের অর্থনীতির চাকা

সুষম খাবার, আন্ত:প্রজনন রোধ, ভ্যাক্সিনেশন আর কৃত্রিম প্রজনন অত্যন্ত জরুরী, মহিষে ঘুরতে পারে চরের অর্থনীতির চাকা

তৌহিদ হোসেন উজ্জ্বল, বাউফল ॥ মহিষে ঘুরতে পারে চরাঞ্চলের অর্থনীতির চাকা। উপকূলীয় চরবাসীর জীবনমানে আসতে পারে ইতিবিাচক পরিবর্তণ। তবে এই মহিষের উৎপাদন আর উন্নয়নে আন্ত:প্রজনন রোধ, কৃত্রিম প্রজনন, সুষম খাবার, ভ্যাক্সিনেশন আর মোটাতাজা করণের বিষয় অত্যন্ত জরুরী দাবি পটুয়াখালীর বাউফলের কৃষক, সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তা আর প্রাণী বিশেষজ্ঞদের।
নিজ বাথানের মহিষ মোটাতাজা করণের কাজসহ জাত উন্নয়নে স্থানীয় একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার মাধ্যমে খুলনার বাগেরহাটের মহিষ প্রজনন খামার থেকে আনা ২ বছর ৮ মাস বয়সী একটি মুরা জাতের চেলা মহিষ পালন শুরু করেছেন নিমদী গ্রামের কৃষক আব্দুল আলী মাতবর। তিনি জানান, দিনে দিনে মহিষের মাংস ও দুধের চাহিদা বাড়ছে। সারা বছর মহিষের দুধের দাম গরুর দুধের চেয়ে লিটার প্রতি কমপক্ষে ১০-১৫ টাকা বেশি থাকে। মহিষের বাচ্চা মৃত্যুর হার কমলে আর জাত উন্নয়নের মাধ্যমে কাঁচাঘাসসহ পর্যাপ্ত সুষম খাবারের ব্যাবস্থা করতে পারলে বাড়বে দুধ উৎপাদন। লাভবান হবেন তিনি। তিনি আরো জানান, বিভিন্ন চরের কৃষকরা ঝুঁকছেন দুধ উৎপাদন আর মহিষ মোটাতাজা করণে। কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে জন্ম নেওয়া মহিষের বাছুর (বাচ্চা) লালন-পালনেও নজর দিচ্ছেন অনেকে। চারণভূমি সৃষ্টির মাধ্যমে ফসল মৌসুমেও মহিষের পর্যাপ্ত সুষম খাবারের নিশ্চয়তা, কৃষক-কৃষাণীর সচেতনতা, ভ্যাক্সিনেশন, আন্তপ্রজনন রোধ আর প্রজনন কেন্দ্র গড়ে তুলতে পারলে মহিষ পালনে চাঙ্গা হবে চরাঞ্চলের অর্থণীতি।
চন্দ্রদ্বীপের নিমদী চরের কৃষক হাবিবুর রহমান মৃধা জানান, তেঁতুলিয়ার বুকচিরে জেগে ওঠা বাউফলের ২০-২২টি চরভূম দাবরে বেড়ায় কালো-ধুসর মহিষের পাল। চরভূমে জন্মানো হাইচা, পারা, বোগরা, হোয়াজালি, খরমা, এলি, ব্যাঙের খাঁচা, কচুরিপানা এসব ঘাসই এদের খাবার। পালে পালে এরা খাবার সেরে পানিতে গা ডুবায় তেঁতুলিয়ার কুলে কুলে। দিনের শেষে এক সঙ্গে মিশে যায় বাথানে (একই সঙ্গে অনেকগুলো মহিষ) এসে। আবার চাষ মৌসুমে এই মহিষ চরের কাঁদামাটি গায়ে মেখে লাঙলের ফলা ঘুরায় কৃষকের জমিনে। তবে ফসল মৌসুমে লাঙল টেনে বিভিন্ন চরে কোনমতে বেঁচে আছে কেবল স্থানীয় জাতের অনুন্নত কাঁচা ঘাস নির্ভর এই মহিষগুলো। আন্ত:প্রজনন রোধ করে উন্নত জাতের সঙ্গে প্রজনন ঘটিয়ে অথবা কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে জাত উন্নয়ন করতে পারলে মহিষেও ভাগ্য খুলতে পারে। ঘুরতে পারে অবহেলিত জরবাসীর ভাগ্যের চাকা। তিনি আরো জানান, মাত্র এক থেকে দেঁড় লিটার দুধ পাওয়া যায় বিশাল দেহের একটি গাভী মহিষ থেকে। সনাতন পদ্ধতিতে হাতে বাঁট (মহিষের দুধ) টেনে জগ কিংবা বাঁশের চোঙে দুধ বের করায় পরিপূর্ণ মাত্রায় দুধ পাওয়া সম্ভব হয় না। এরপরেও প্রতিদিন রায়সাহেব ও তার পাশের চরমিয়াজান, চরওয়াডেল, মমিনপুর, চরকচুয়া, নিমদীচরসহ কয়েকটি চরে গরু-মহিষ মিলে শতাধিক মন দুধ উৎপাদন হয়। স্থানীয় চাহিদা পূরন করে প্রতিদিন পাশের জেলা ভোলা, বাকেরগঞ্জ, পটুয়াখালীসহ বিভিন্ন উপজেলায়ও পাঠানো হয় মহিষের দুধ। একটি উন্নত হলিস্টিন বা জার্সি জাতের গরু থেকে যে দুধ পাওন যায় নিতান্ত অবহেলায় পালিত একটি মহিষ থেকেও প্রায় সমপরিমান দুধ পাওয়া সম্ভব। তবে এ ক্ষেত্রে কৃত্রিম প্রজনন বা উন্নত জাতের সঙ্গে ক্রসে পাওয়া জাতের মহিষ হতে হবে। এ সময় হাবিবুর রহমান মৃধার সঙ্গে থাকা ঘাসের জন্য মহিষের পাল নিয়ে আসা পাশের ভোলা জেলার রোহান উদ্দিনের সাছরা ইউনয়নের দরুন বাজার এলাকার পঞ্চাশোর্ধ কাওছার আহম্মেদ জানান, কালীতারা, ময়ফুল, জয়তারা, জয়ফুল, কালাফুল, জয়মালা, ময়না, লালু, সাবু, দিবিয়াল, জয়ন্তী, জইতা, সাগর, যুবরাজ এসব নামে ডাকেন তাদের প্রিয় মহিষগুলোকে। ডাক শুনে রীতিমতো সারাও দেয় তাদের পোশা এই প্রাণীগুলো। তেঁতুলিয়ার বুকফুরে রঙিন আভায় রায়সাহেবের চরের বিস্তৃর্ণ সবুজ ঘাসে সূর্য উকি দিতেই দেখা মিলবে ঘোসা আর ঘোয়ালা তাদের অতিত ঐতিয্যের প্রতীক পিতলের কারুকাজ করা বাঁশের চোঙ হাতে ছুটছে দুধ দুইতে মহিষের বাথানে। দেখা মিলবে সম্ভাবনার আশা জাগানিয়া মানব উপকারী কালো-ধুসর মহিষের একাধিক পাল। রায়সাহেবচরসহ এখানকার বিভিন্ন চরভূমে বাথানে ২৫-৩০ বছর আগেও মহিষ থাকত আরও অনেক বেশি। মাঝে-মধ্যে দেখা যেত দু’একটি সাদা মহিষও। মহিষের বিচারণে এখানে বিশাল এক এলাকার নাম করণও হয়েছে মৈষাদী। তিনি আরো জানান, জলাভূমি ও উপকুলীয় নদ-নদী এলাকার মহিষের মধ্যে চাসবাসের উপযোগি লাঙ্গল টানা স্থানীয় জাতের মহিষ দেখা যায়। নাগপুরী, সুরতি, রাভী, মোহসেনা, নীলি, মুরা, কুনতি, ভাদোয়ারী, ইতালিয়, জাফরাবাদীসহ ১৮ জাতের মহিষের কথা জানা গেলেও রায়সাহেবচর, চরবাসুদেবপাশা, মমিনপুরের চর, চরফেডারেশন, চরওয়াডেল, চরমিয়াজান, অমরখালীসহ বাউফলের চরাঞ্চলে কেবল মুরা, নীলি আর রাবি জাতের মহিষের দেখা মিলে।
বাউফলে জনপ্রিয় মদনপুরা গ্রামের আবুলের দোকানের রসগোল্লার কারিগর (বর্তমান মালিক) মাসুদ মল্লিক জানান, মহিষের দুধে তৈরী বাউফলের মিষ্টি এখন রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বাহিরেও যাচ্ছে বিভিন্ন উপায়ে। প্রায় দুইশ’ বছর আগে বানিজ্যে এসে জমিদার দক্ষিনা রঞ্জন রায়ের দুই ছেলে মহেন্দ্র রায় ও রাজেন্দ্র রায় অভিভূত হন রায়সাহেব চরের ‘মৈষা দৈ’ (মহিষের দুধে তৈরী টক দধি) খেয়ে। প্রচলিত আছে কোষায় চড়ে মহিষের পাল দেখতে দুভাইয়ের চর ভ্রমনের কারণে ওই চরের নামকরণ হয় রায়সাহেবের চর। পুরো উপজেলা ও তার আসপাশের বিভিন্ন গ্রামে বিয়ে বিংবা কুলখানির মতো উৎসব-পার্বণে ভোজন রসিকদের মুখে হাসির রেখা ফুটে ওঠে আত্মীয়-স্বজনের হাতে মৈষা দৈ আর মিষ্টির প্যাকেটের আগমণী বার্তায়। মিষ্টিসহ বাউফলের চরাঞ্চলের দুধ আর দুদ্ধজাত খাদ্য পন্যের আছে অপার সম্ভাবনা। পৌর সদরসহ উপজেলার বিভিন্ন বন্দর আর ব্যাবসা কেন্দ্রগুলোতে গড়ে উঠেছে ছোট বড় মিলে তিন শতাধিক মিষ্টির দোকান। এসব সুইটমিট, মিষ্টি-ময়রার দোকানের রসগোল্লা, রসমালাই, ছানা, দধি, সন্দেশ, মাখন, ঘি ইত্যাদি জনপ্রিয়। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ক্যামিকেলযুক্ত ছানা. মিষ্টি, দই এখন আর মানুষ গ্রহণ করে না। দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে রায়সাহেব চরের মহিষের দুধে তৈরী মৈষা দৈ আর মিষ্টি।
পিকেএসএফ ও ইফাদের সহোযোগিতায় ২০২০ সালে চরাঞ্চলের মহিষের উৎপাদন বৃদ্ধি ও বাজার জাত করণের মাধ্যমে কৃষক ও খামারির আয় বৃদ্ধিতে কাজ করা স্থানীয় গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থার সহকারি ভ্যালু চেইন ফ্যাসিলিটেটর সাব্বিার হোসেন খান জানান, আন্ত:প্রজনন মহিষের দুধ কমায়। আন্ত:প্রজনন রোধ, ডি-ওয়ার্মিং, ভ্যাকসিনেশন, মোটাতাজা করণ, কিল্লা ও বজ্রনিরোধক, বাছুর মহিষকে কাফ স্টার্টার দেয়া, উন্নত জাতের ঘাসের জোগানসহ খামারী ও কৃষাক-কৃষাণীর মহিষ পালনে দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে চরবাসীর ভাগ্য পারিবর্তণ সম্ভব। ইতিমধ্যে সংস্থাটি প্রশিক্ষণ পরিচালনা করে দুধ উৎপাদন বৃদ্ধি আর জাত উন্নয়নে অর্ধেক মূল্য পরিশোধ ও বাকী অর্ধেকের সহজ কিস্তিতে খুলনার বাগের হাট এলাকার মহিষ প্রজনন খামার থেকে এনে মুরা জাতের ৬টি চেলা মহিষ বিতরণ করেছে খামারিদের। ভর্তূকি মূল্যে বিতরণ করা হয়েছে ৮ হাজার কৃমিনাশক বোলাস। ১৫ হাজার ডোজ ভ্যাকসিন দেয়ার কারণে ভাইরাস জনিত মহিষের মৃত্যুর হার ২-৩ সার্সেন্টে নেমেছে। এ ছাড়া মহিষ মোটাতাজা করণের প্রশিক্ষণের কারণে ৩৮ জন খামারি ১ কোটি ২৮ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকায় ১১০টি মহিষ বিক্রির মাধ্যমে মহিষ প্রতি গড়ে ৩৩ হাজার টাকা লাভ করেছেন খামারিরা। প্রকল্পের মাধ্যমে নিমদী ও রায়সাহেব চরে কিল্লাস্থাপন ও বজ্রনিরোধক প্রধানেরও পরিকল্পনা আছে। মোটাতাজা করণ ও উন্নত জাতের সঙ্গে ক্রসের সুযোগ ও বাজারজাত করার সুযোগ সৃষ্টিতে মহিষ পালনে ঝুঁকছেন চরের খামারি ও কৃষকরা। মহিষের মাংস রপ্তানির চেস্টা চলছে বিদেশের বাজারেও।
পটুয়াখালী সরকারী কলেজের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যপক (অব:) পিযুষ কান্তি হরি জানান, একটি পূর্ণবয়স্ক মহিষের দিনে ২০-২৫ কেজি পুষ্টিকর খাবারের মধ্যে তিন ভাগের দুই ভাগ আঁশযুক্ত আর এক ভাগ দানাদার খাবার প্রয়োজন। চরের মহিষগুলো বেলে মাটিতে গজানো স্থানীয় জাতের পারা, বোগরা, হোয়াজালি, খরমা, এলি, কচুরীপানা কিংবা হাইচার মতো কাঁচাঘাস ছাড়া কিছুই পায় না। বর্ষায় চরভূম রোপা আমনে ছেঁয়ে গেলে খাদ্যাভাব দেখা দেয় মহিষের। নদী-খাল ভরাট, নোনা পানি প্রবেশ, পরিবেশের বিরূপ প্রভাব ছাড়াও খাল-বিল, নদ-নদী ও জলাশয় সংরক্ষণ না করা, মহিষের খাদ্য বা ঘাস উৎপাদন কমে যাওয়া, চারণ ক্ষেত্র বিনষ্ট করে রাস্তা ঘাট তৈরী, ট্রাক্টরের ব্যাবহার, নদী দূষণ, জমিতে মাত্রাতিরিক্ত সার ও কীটনাশক প্রয়োগসহ যান্ত্রিকতার মতো স্থানীয় কারণে দিন দিন জগত প্রকৃতির এই মানব উপকারী প্রাণীটির বেঁচে থাকার অনুকুল পরিবেশ বিনস্ট হচ্ছে। বিভিন্ন চরের কৃষক-কৃষাণীর দেওয়া তথ্যমতে ১২ হাজারের ওপরে মহিষ আছে বাউফলে। তিনি আরো জানান, ২০১৩ সালের ২৯ এপ্রিল পাশের ভোলা জেলায় মহিষের কৃত্রিম প্রজনন কার্যক্রম ও প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়। কৃত্রিম প্রজননে ২০-৩০ কেজি ওজন নিয়ে জন্মানো মহিষের বাচ্চা ৭-৮ মাসে ৫০-৬০ কেজি ওজন লাভ করে। বাউফলের মুন্সির চরে মো. ইলিয়াস মিয়া ও বোরাহানউদ্দন থেকে চরব্যারেটের মুসা বিশ্বাস দু’টি বাচ্চা কিনে নিয়ে লালন পালন করছেন। কৃষকের আগ্রহের কথা উল্লেখ করে তিনি জানান, দূর্গম চর থেকে নির্দিষ্ট সময় গরম হওয়া মহিষ নিয়ে দূরের কোন প্রজনন কেন্দ্রে নিয়ে আসা কস্টসাধ্য ব্যাপার। মহিষের কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে এখানে। কৃত্রিম প্রজননে (ইনসিমেন করা গেলে) পঞ্চম জেনারেশনে গিয়ে বাউফলের চররায়সাহেবের মতো জায়গায় ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের মিরাট শহরের গবাদিপশু প্রদর্শণীতে ৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা দাম হাকানো ‘যুবরাজের’ মতো মহিষ পাওয়া সম্ভব। কৃত্রিম প্রজননের ফলে ফাস্ট জেনারেশনের মহিষ থেকেই ১০-১২ লিটার দুধ পাওয়া যাবে।
তিনি বলেন, ‘উপকূলীয় প্রাণী বৈচিত্র্যে করোনা পরিস্থিতির শিক্ষা নিয়ে শহরভিত্তিক শিল্প সমৃদ্ধির দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তণ আর দক্ষ ব্যাবস্থাপনায় উপযুক্ত পরিচর্যা করা গেলে চরাঞ্চলেও দুধ ও দুদ্ধজাত খাদ্যপন্ন উৎপাদনে মিল্কভিটা, ডানো, আড়ং কিংবা এর চেয়েও বড় কোন বিশ্বমানের দুধ ও দুদ্ধ প্রক্রিয়াজাত শিল্প-প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠতে পারে চরাঞ্চলে মহিষ পালনকে কেন্দ্র করে। কৃষকের ক্ষেতে মহিষে লাঙ্গলের ফলা ঘুরানোর মতো ঘুরে যেতে পারে চরের অর্থনীতির চাকাও। বাউফলের তেঁতুলিয়ার বুকে জেগে ওঠা রায়সাহেব চরে আরো জেগে উঠতে পারে মহিষের মাংস, দুধ ও দুদ্ধজাত খাদ্যপন্যের উৎপাদন সম্ভাবনার স্বপ্নরাজ্য।’
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. হাফিজুর রহমান বলেন, ‘বিচ্ছিন্ন চর মিলে উপজেলায় মহিষের সংখ্যা ৮৬৪০টি। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি হওয়ায় মহিষের রোগবালাই কম। তবে মাঝে-মধ্যে গলাফুলার মতো সংক্রামক রোগ আর গোলকৃমির আক্রমনে বাচ্চা মহিষের মৃত্যুর হয়। এখানে মহিষের কৃত্রিম প্রজননের সুযোগ না থাকলেও উপজেলা প্রাণীসম্পদ কার্যালয় থেকে খোঁজ-খবর রেখে নিয়মিত মহিষের চিকিৎসা দেয়া হয়।’

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Dokhinerkhobor.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com