বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০:১১ পূর্বাহ্ন

উপ-সম্পাদক :: দিদার সরদার
প্রধান সম্পাদক :: সমীর কুমার চাকলাদার
প্রকাশক ও সম্পাদক :: কাজী মোঃ জাহাঙ্গীর
যুগ্ম সম্পাদক :: মাসুদ রানা
সহ-সম্পাদক :: এস.এম জুলফিকার
প্রধান নির্বাহী সম্পাদক :: মামুন তালুকদার
নির্বাহী সম্পাদক :: সাইফুল ইসলাম
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক :: আবুল কালাম আজাদ
সংবাদ শিরোনাম :
খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও তারেক রহমানের সুস্থতা কামনায় গৌরনদীতে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত গৌরনদীতে এতিমখানা ও মাদ্রাসার দরিদ্র, অসহায় শিক্ষার্থীদের মাঝে ঈদ বস্ত্র বিতরণ ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত বরিশালে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কারাবন্ধী ও রাজপথে সাহসী সৈনিকদের সম্মানে ইফতার দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত আদালতে মামলা চলমান থাকা অবস্থায়, দখিনের খবর পত্রিকা অফিসের তালা ভেঙে কোটি টাকার লুণ্ঠিত মালামাল বাড়িওয়ালার পাঁচ তলা থেকে উদ্ধার, মামলা নিতে পুলিশের রহস্যজনক ভূমিকা গলাচিপা উপজেলা প্রেসক্লাবের কমিটি গঠন, সভাপতি হাফিজ, সম্পাদক রুবেল চোখের জলে বরিশাল প্রেসক্লাব সভাপতি কাজী বাবুলকে চির বিদায় বিএনপি নেতা জহির উদ্দিন স্বপন কারামুক্ত উচ্চ আদালতে জামিন পেলেন বরিশাল মহানগর বিএনপির মীর জাহিদসহ পাঁচ নেতা তসলিম ও পিপলুর নেতৃত্বে বরিশাল জেলা উত্তর ও দক্ষিণ যুবদলের বরিশাল নগরীতে কালো পতাকা মিছিল হিউম্যান ফর হিউম্যানিটি ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে গৌরনদীতে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে বই বিতরণ
বর্জ্য পানিতে করোনার অগ্রিম পূর্বাভাস!

বর্জ্য পানিতে করোনার অগ্রিম পূর্বাভাস!

বর্জ্য পানি পরীক্ষা করে জানা সম্ভব সেখানে কী পরিমাণে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি রয়েছে।

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকার নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির এক গবেষণায় বর্জ্য পানিতে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে।

বলা হচ্ছে, নিয়মিত বর্জ্য পানি পরীক্ষা করোনাভাইরাসের উপস্থিতি সম্পর্কে অগ্রিম পূর্বাভাসের একটি ব্যবস্থা হতে পারে।

গবেষণাটি যেভাবে হয়েছে

জুলাই মাসের ১০ তারিখ থেকে ২৭শ আগস্ট পর্যন্ত সময় জুড়ে নোয়াখালীতে অবস্থিত একটি আইসোলেশন কেন্দ্রের আশপাশে কয়েকটি জায়গার ড্রেন থেকে বর্জ্য পানির নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়েছে।

গবেষকদের একজন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির জিনোম রিসার্চ ইন্সটিটিউটের প্রধান ড. মুহাম্মদ মাকসুদ হোসেন বলছেন, ‘ধরুন একটা ছাকনির মতো যেখানে সংগ্রহ করা বর্জ্য পানির ভাইরাসগুলো আটকে যাবে, সেগুলোকে পরীক্ষা করা হয়েছে। ঠিক যেভাবে মানুষের শরীরের নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করা হয় সেরকমই রিয়াল-টাইম পিসিআরে পরীক্ষা করে আমরা সংগ্রহ করা বর্জ্য পানিতে করোনাভাইরাসের কয়েকটি জিনের অস্তিত্ব পেয়েছি।’

তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশে করোনাভাইরাস শনাক্তকরণে ইতোমধ্যেই যে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে, সেগুলো দিয়েই এই পরীক্ষা খুব কম খরচে করা হয়েছে।

‘একটি ফিল্টার যার দাম কয়েক হাজার টাকা, পরীক্ষার জন্য দরকারি রি-এজেন্ট পলিথাইলিন গ্লাইকনের জন্য আমাদের খরচ হয়েছে ১৫ হাজার টাকার মত। রিয়াল-টাইম পিসিআর মেশিন আছে, এমন যে কোনো ল্যাবে এই পরীক্ষা করা যাবে।’

করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারি শুরুর পর থেকে প্রতিদিন এই ভাইরাসটি সম্পর্কে নতুন নতুন নানা ধরনের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। করোনাভাইরাস বাতাস, হাঁচি, কাশির মাধ্যমে ছড়ায়।

ড. হোসেন বলছেন, পানি থেকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কোনো তথ্য এখনো জানা নেই। কিন্তু বর্জ্য পানিতে করোনাভাইরাসের জিন শনাক্ত হওয়ার বিষয়টি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত বহন করে।

অগ্রিম পূর্বাভাস ব্যবস্থা ও পরিকল্পনা

এর আগে ইতালি, স্পেন, ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্যে সুয়ারেজ থেকে সংগ্রহ করা পানি পরীক্ষা করে করোনাভাইরাস উপস্থিতি পাওয়া গেছে।

বাংলাদেশে স্বল্প পরিসরে করা গবেষণাটির সাথে যুক্ত ছিলেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক ফিরোজ আহমেদ।

যুক্তরাজ্যের সেন্টার ফর ইকোলজি অ্যান্ড হাইড্রোলজি বলছে, বর্জ্য পানি পরীক্ষা করে জানা সম্ভব সেখানে কী পরিমাণে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি রয়েছে।

কমপক্ষে এক সপ্তাহ আগে একটি এলাকায় কী ধরনের সংক্রমণ হতে যাচ্ছে সেটির সম্ভাব্য পরিস্থিতি আঁচ করা সহজ করে দিতে পারে বর্জ্য পানি গবেষণা।

তিনি বলছেন, বর্জ্য পানি পরীক্ষার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে এর মাধ্যমে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ সম্পর্কে অগ্রিম পূর্বাভাস দেয়া সম্ভব।

বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তিনি বলছেন, ‘করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির উপসর্গ দেখা দিতে কয়েকদিন সময় লাগে। তারপর টেস্ট করতে আরো কয়েকদিন। কিন্তু শরীরে করোনাভাইরাস প্রবেশের পর মানুষের মলে এর উপস্থিতি থাকে এবং উপসর্গ দেখা দেয়ার অনেক আগেই এই ভাইরাস মলের মাধ্যমে বর্জ্য ব্যবস্থায় চলে যায়।’

অধ্যাপক ফিরোজ আহমেদ বলছেন, ‘বিভিন্ন এলাকার বর্জ্য পানি পরীক্ষার মাধ্যমে একটি ম্যাপিং করা সম্ভব। কোন এলাকায় এর উপস্থিতি কত বেশি রয়েছে সেই অনুযায়ী সরকার আগেভাগে পরিকল্পনা ও ব্যবস্থা নিতে পারবে। কোথায় লকডাউন লাগবে বা কোথায় আর একটু সহজ ব্যবস্থা নিলেই হবে সে ব্যাপারে আগে থেকেই প্রস্তুতি নেয়া সম্ভব।’

তিনি বলছেন, কিছুদিনের মধ্যেই দ্বিতীয় দফায় সংক্রমণ আসছে কিনা সেটি সম্পর্কে এই অগ্রিম পূর্বাভাস অনেক কাজে দিতে পারে।

তবে বর্জ্য পানিতে রাসায়নিক পদার্থ সহ আরো অনেককিছু থাকে। যা এতে ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত করা কঠিন করে তুলতে পারে।

উপসর্গহীনদের শনাক্ত করা

বাংলাদেশে অনেকেই পরীক্ষা করানোর ব্যাপারে অনীহা প্রকাশ করেন। অনেকে সামাজিক হেনস্থার ভয়ে পরীক্ষা করাতে চান না।

অন্যদিকে উপসর্গহীনরা খুব স্বভাবতই নমুনা দিতে যান না। কিন্তু তারা অন্যদের সংক্রমিত করেন।

ড. মুহাম্মদ মাকসুদ হোসেন বলছেন, ‘কোনো এলাকায় বর্জ্য পানিতে করোনাভাইরাসের জিনের উপস্থিতি থাকা মানে সেখানে আক্রান্ত ব্যক্তি রয়েছেন। এক্ষেত্রে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সার্ভেইলেন্স করে আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত করা সম্ভব।’

পানি থেকে কি সংক্রমণ সম্ভব?

এখন অনেকেই প্রশ্ন করতে পারেন, পাইপের মাধ্যমে যে পানি আমরা পাই তার মাধ্যমে কি করোনাভাইরাস সংক্রমণ সম্ভব?

ভাইরলজিষ্ট অধ্যাপক নজরুল ইসলাম ঢাকা শহরের উদাহরণ দিয়ে বলছেন, ‘ঢাকাতে সার্বক্ষণিক পানি সাপ্লাই করা হয় না। পানির পাইপে যদি সবসময় পানির সাপ্লাই-এর প্রেশার থাকে তাহলে যদি পাইপে ফুটো থাকেও সেখান থেকে অন্য কিছু প্রবেশ করতে পারে না।’

‘কিন্তু যখন পানির পাম্প বন্ধ করা হয় তখন এই প্রেশারটা থাকে না। সেক্ষেত্রে বাইরের পানি ওই পাইপলাইনে প্রবেশ করে। ঢাকায় অনেক ক্ষেত্রে পানির লাইন ও সুয়ারেজ লাইন পাশাপাশি গেছে। সুয়ারেজ লাইনেও যদি ফুটো থাকে তাহলে সেখান থেকে নোংরা পানি সাপ্লাই পানির লাইনে ঢুকে যেতেই পারে।’

তিনি বলছেন, পানিতে করোনাভাইরাস কয়েক ঘণ্টা থেকে কয়েকদিন পর্যন্ত বেঁচে থাকে। এটি নির্ভর করে কোন ধরনের পানিতে সে রয়েছে।

তাই আশঙ্কা থেকেই যায় যে পানির মাধ্যমেও হয়ত সংক্রমণ সম্ভব। যদিও এ ব্যাপারে আরো অনেক গবেষণা প্রয়োজন বলে তিনি উল্লেখ করছেন।

হাসপাতালের বর্জ্য পানি শোধন

যেসব হাসপাতালে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা হচ্ছে, যেসব ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে এবং আইসোলেশন সেন্টারগুলোর সাথে সংযুক্ত ড্রেন থেকে যে বর্জ্য পানি বের হয় তা শোধন করার কথা বলছেন, অধ্যাপক নজরুল ইসলাম।

তিনি বলছেন, ‘ঢাকা শহরে সুয়ারেজ লাইনের পানিতে আপনি করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাবেনই। কারণ এখানে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ব্যক্তি রয়েছে। আমরা হাসপাতালের বর্জ্য পানি পরিশোধনের কথা অনেকবার বলেছি। হাসপাতাল বা আইসোলেশন সেন্টারগুলোর বর্জ্য পানিতে অনেক করোনাভাইরাসের উপস্থিতি খুব বেশি থাকবে। তাই সেখানে ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট বসানো দরকার।’

‘সেখান থেকে যে বর্জ্য পানি বের হয় তা প্রধান সুয়ারেজ লাইনে পৌঁছানোর আগেই যেন তা শোধন করা যায়। এতে এসব হাসপাতাল থেকে করোনাভাইরাসের জিন শহরের প্রধান সুয়ারেজ ব্যবস্থায় প্রবেশ ঠেকানো যাবে। এটি ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধ করার একটি উপায় হতে পারে।’

সূত্র : বিবিসি

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Dokhinerkhobor.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com