বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:১১ অপরাহ্ন

উপ-সম্পাদক :: দিদার সরদার
প্রধান সম্পাদক :: সমীর কুমার চাকলাদার
প্রকাশক ও সম্পাদক :: কাজী মোঃ জাহাঙ্গীর
যুগ্ম সম্পাদক :: মাসুদ রানা
সহ-সম্পাদক :: এস.এম জুলফিকার
প্রধান নির্বাহী সম্পাদক :: মামুন তালুকদার
নির্বাহী সম্পাদক :: সাইফুল ইসলাম
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক :: আবুল কালাম আজাদ
সংবাদ শিরোনাম :
খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও তারেক রহমানের সুস্থতা কামনায় গৌরনদীতে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত গৌরনদীতে এতিমখানা ও মাদ্রাসার দরিদ্র, অসহায় শিক্ষার্থীদের মাঝে ঈদ বস্ত্র বিতরণ ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত বরিশালে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কারাবন্ধী ও রাজপথে সাহসী সৈনিকদের সম্মানে ইফতার দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত আদালতে মামলা চলমান থাকা অবস্থায়, দখিনের খবর পত্রিকা অফিসের তালা ভেঙে কোটি টাকার লুণ্ঠিত মালামাল বাড়িওয়ালার পাঁচ তলা থেকে উদ্ধার, মামলা নিতে পুলিশের রহস্যজনক ভূমিকা গলাচিপা উপজেলা প্রেসক্লাবের কমিটি গঠন, সভাপতি হাফিজ, সম্পাদক রুবেল চোখের জলে বরিশাল প্রেসক্লাব সভাপতি কাজী বাবুলকে চির বিদায় বিএনপি নেতা জহির উদ্দিন স্বপন কারামুক্ত উচ্চ আদালতে জামিন পেলেন বরিশাল মহানগর বিএনপির মীর জাহিদসহ পাঁচ নেতা তসলিম ও পিপলুর নেতৃত্বে বরিশাল জেলা উত্তর ও দক্ষিণ যুবদলের বরিশাল নগরীতে কালো পতাকা মিছিল হিউম্যান ফর হিউম্যানিটি ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে গৌরনদীতে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে বই বিতরণ
ধান-চালের দাম আরো কমার অপেক্ষায় কেনা শুরু করেনি সরকার ও মিলাররা

ধান-চালের দাম আরো কমার অপেক্ষায় কেনা শুরু করেনি সরকার ও মিলাররা

দখিনের খবর এক্সক্লুসিভ: বোরো ধান-চালের দাম আরো কমার অপেক্ষায় কেনা শুরু করেনি সরকার ও মিলাররা। অথচ এক মাস আগেই যখন দর নির্ধারণ করা হয় তখন বাজারে মোটা চালের দাম ছিল ৪৪ টাকা কেজি। বর্তমানে তা ৪২ টাকায় নেমে এসেছে। তবুও তা সরকারের সংগ্রহ মূল্যের চেয়ে ৪ টাকা বেশি। এ অবস্থায় মিলাররা বোরো ধান-চাল সংগ্রহ করছে না। বরং বোরো চালের দাম আরো কমলে তারপরই চাল সংগ্রহে নামবে তারা। কিন্তু সাধারণত বোরোর ভরা মৌসুুমে বাজার চাঙ্গা রাখার লক্ষ্যেই সংগ্রহ মূল্য নির্ধারণ করা হয়। গত ৮ এপ্রিল খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির সভায় প্রতি কেজি বোরো ধানের সংগ্রহ মূল্য ২৬ টাকা এবং চাল ৩৮ টাকা দরে কেনার সিদ্ধান্ত হয়। আর ২ মে থেকে আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে বোরো সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৯ লাখ টন চাল এবং দেড় লাখ টন ধান। ২ মে থেকে বোরো ধান-চাল সংগ্রহ করার কথা থাকলেও এখনো সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়নি। এখন পর্যন্ত মাত্র ৫ হাজার চাল সংগ্রহ করা হয়েছে। কিন্তু কোনো ধান সংগ্রহ হয়নি। কৃষি বিভাগ এবং খাদ্য অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, হাওরে বোরো ধান কাটা প্রায় শেষ। আন্যান্য অঞ্চলেও প্রায় ৭৫ শতাংশ ধান কাটা হয়ে গেছে। কিন্তু সরকার বরাবরই ধান-চাল সংগ্রহ অভিযানে দেরিতে নামে। ফলে সরকারের ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান কৃষকের উপকারে আসে না। বরং তা ব্যবহৃত হয় এক শ্রেণীর মধ্যস্বত্বভোগী ব্যবসায়ী ও চালকল মালিকদের মুনাফা লোটার হাতিয়ার হিসেবে। এবার দর নির্ধারণসহ সংগ্রহ অভিযানের ঘোষণা কিছুটা আগে দেয়া হলেও এখনো অভিযান পুরোদমে শুরু না হওয়ায় কৃষকদের তেমন লাভবান হওয়ার সুযোগ থাকছে না। অথচ দেশে এক কোটি ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক রয়েছে। তারা ফসল ওঠার সময় কম দামে ধান বিক্রি করে দিয়ে কৃষি ঋণের টাকা পরিশোধ করে। বছরের শেষ সময়ে গোলার ধান ফুরিয়ে গেলে তখন তারা বাজার থেকে চাল কিনে খায়। তখন বাজারে চালের দাম বেশি থাকে। অর্থাৎ বাজারে যখন দাম কম থাকে তখন তারা বিক্রি করে কৃষি উৎপাদনের খরচ পরিশোধ করে। আর যখন বাজারে দাম বেড়ে যায় তখন তারা কিনে খায়। এই জটিলতায় পড়ে রয়েছে দেশের এক কোটি কৃষক পরিবারের ৫ কোটি সদস্য। বেশি দামে কিনে খাওয়ায় চাল কেনার পেছনে তাদের বাজেটের বড় অংশ চলে যায়। ফলে তারা পুষ্টির দিকে মনোযোগ দিতে পারে না। ফলে তাদের পুষ্টিহীনতা বেড়ে যায়।
সূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে ৫ হাজার ১০৬ টন চাল সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে কোনো ধান সংগ্রহ হয়নি। কারণ এখন বাজার থেকে ধান কেনা হলে তাতে আর্দ্রতা বেশি থাকবে। তা সংরক্ষণ করা মুশকিল হবে। ওই কারণে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযানে নামতে ঢিলেমি করা হচ্ছে। তাছাড়া সংগ্রহ অভিযানের সময় চালের যে দর থাকে, ওই দরে চাল পাওয়া সম্ভব নয়। বাজার দর নাগালে এলেই সংগ্রহ করা হবে। সরকারি গুদামে চাল সরবরাহ করে অটো মিল, হাসকিং মিল ও মেজর মিলের মালিকরা। তারা সরকারকে সংগ্রহ মূল্য ৪০ টাকা কেজি করার জন্য বলেছিল। তাদের যুক্তি, আমন মৌসুুমে সরকার চাল সংগ্রহ করেছে ৩৯ টাকা কেজি দরে; আর সব সময়ই বোরো চালের সংগ্রহ মূল্য বেশি ধরা হয়। ওই কারণে তারা ৪০ টাকা দর নির্ধারণের সুপারিশ করা হয়েছিল।
সূত্র আরো জানায়,এবার প্রতি কেজি বোরো ধান উৎপাদনে খরচ হয়েছে ২৪ টাকা, যা গত বছরের উৎপাদন খরচের চেয়ে ২ টাকা বেশি। আর গতবছরের তুলনায় চাল উৎপাদন খরচ কেজিতে বেড়েছে ৫ টাকা। এবার চাল উৎপাদনে খরচ হয়েছে ৩৬ টাকা। এ মৌসুুমে ৪৯ লাখ হেক্টরের বেশি জমিতে বোরো ধান চাষ করা হয়েছে। তাতে প্রায় এক কোটি ৯০ লাখ টন চাল উৎপাদন হবে। দেশের খাদ্য গুদামগুলোতে এখন পর্যন্ত চালের মজুদ ছিল প্রায় ৮ লাখ ২১ হাজার টন। মিল মালিক ও ব্যবসায়ীদের হাতে আছে প্রায় ৪০ লাখ টন চাল। আরো কিছু চাল বন্দরে রয়েছে। বোরো ধান কাটার হার ৮০ শতাংশ পার হলে বাজারে চালের সরবরাহ বাড়বে। তখন বাজারে চালের দামও কমবে। তার অপেক্ষায়ই রয়েছেন মিল মালিকরা। তখন তারা কম দামে কিনে সরকারের গুদামে চাল সরবরাহ করবে। আর সরকারও সেই কম দামকে টার্গেট করেই বোরো চালের দর নির্ধারণ করেছে। এদিকে রাইস মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ কে এম লায়েক আলী জানান, এবার প্রচুর ফলন হয়েছে। ওই ফসল ঠিকমতো ঘরে তুলতে পারলে চাল সরবরাহে কোনো সমস্যা হবে না। মিলাররা এখনো ধান কেনা শুরু করেনি। তার কারণ হচ্ছে শ্রমিকের স্বল্পতা। যে শ্রমিক মাঠে ধান কাটছে ওই শ্রমিকই চাতালে এসে ধান শুকাবে। এমন অবস্থায় মিলাররা সংগ্রহ শুরু করব কিভাবে? এখনো বগুড়া, রংপুর ও দিনাজপুরের মাঠে প্রচুর ধান রয়ে গেছে। ধান ঘরে উঠুক, তারপর সংগ্রহ শুরু হবে। অন্যদিকে অর্থনীতিবিদ ও বিভিন্ন কৃষক সংগঠনের নেতৃবৃন্দের মতে, কৃষকদের এমন অবস্থা থেকে বের করে আনার জন্য সরকারকেই উদ্যোগী হতে হবে। অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে ধান কাটার মৌসুুম শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সংগ্রহ শুরু করতে হবে। যেভাবেই হোক কৃষক যখন ধান বিক্রি কওে, সেই সময় সরকারকে মাঠে থাকতে হবে। চালের চাহিদা যতটুকু তার পুরোটাই অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে সংগ্রহ করার চেষ্টা করতে হবে। উৎপাদন কম হলে বাইরে থেকে আমদানির বিষয়ে বিবেচনা করা যেতে পারে। চাহিদার তুলনায় উৎপাদনের পরিমাণ বেশি থাকলে স্বল্প মেয়াদে রপ্তানিরও অনুমোদন দেয়া যেতে পারে। তাতে একটা ভারসাম্য থাকবে। কৃষক বা ভোক্তা কেউই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। এ প্রসঙ্গে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ মহসীন জানান, বোরোর ফলন এবার ভালো হয়েছে। হাওরের বোরো কাটা ৯৯.৯৮ শতাংশ শেষ হয়েছে। অন্যান্য অঞ্চলের বোরোও ৭৩ শতাংশ কাটা হয়েছে। এ সময়ের ঝড়-বৃষ্টি ফসল ঘরে তোলার ক্ষেত্রে কিছুটা প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করেছে। একটু বৃষ্টি শুরু হলেই কৃষি শ্রমিক মাঠ ছেড়ে চলে আসে বজ্রপাতের ভয়ে। তাছাড়া ধান কেটে ঘরে আনলেও মানুষ শুকাতে পারছে না। একই প্রসঙ্গে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বদরুল হাসান জানান, ধান-চাল সংগ্রহের জন্য মিলারদের সঙ্গে চুক্তি করা হচ্ছে। ১০ মে পর্যন্ত চুক্তি করার কথা ছিল। তা বাড়িয়ে ২০ মে পর্যন্ত করা হয়েছে। এরপরই পুরোমাত্রায় শুরু হবে সংগ্রহ অভিযান। যদিও ইতিমধ্যে কিছু জায়গায় সংগ্রহ শুরু হয়েছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Dokhinerkhobor.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com