শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:০৩ অপরাহ্ন

উপ-সম্পাদক :: দিদার সরদার
প্রধান সম্পাদক :: সমীর কুমার চাকলাদার
প্রকাশক ও সম্পাদক :: কাজী মোঃ জাহাঙ্গীর
যুগ্ম সম্পাদক :: মাসুদ রানা
সহ-সম্পাদক :: এস.এম জুলফিকার
প্রধান নির্বাহী সম্পাদক :: মামুন তালুকদার
নির্বাহী সম্পাদক :: সাইফুল ইসলাম
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক :: আবুল কালাম আজাদ
সংবাদ শিরোনাম :
খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও তারেক রহমানের সুস্থতা কামনায় গৌরনদীতে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত গৌরনদীতে এতিমখানা ও মাদ্রাসার দরিদ্র, অসহায় শিক্ষার্থীদের মাঝে ঈদ বস্ত্র বিতরণ ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত বরিশালে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কারাবন্ধী ও রাজপথে সাহসী সৈনিকদের সম্মানে ইফতার দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত আদালতে মামলা চলমান থাকা অবস্থায়, দখিনের খবর পত্রিকা অফিসের তালা ভেঙে কোটি টাকার লুণ্ঠিত মালামাল বাড়িওয়ালার পাঁচ তলা থেকে উদ্ধার, মামলা নিতে পুলিশের রহস্যজনক ভূমিকা গলাচিপা উপজেলা প্রেসক্লাবের কমিটি গঠন, সভাপতি হাফিজ, সম্পাদক রুবেল চোখের জলে বরিশাল প্রেসক্লাব সভাপতি কাজী বাবুলকে চির বিদায় বিএনপি নেতা জহির উদ্দিন স্বপন কারামুক্ত উচ্চ আদালতে জামিন পেলেন বরিশাল মহানগর বিএনপির মীর জাহিদসহ পাঁচ নেতা তসলিম ও পিপলুর নেতৃত্বে বরিশাল জেলা উত্তর ও দক্ষিণ যুবদলের বরিশাল নগরীতে কালো পতাকা মিছিল হিউম্যান ফর হিউম্যানিটি ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে গৌরনদীতে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে বই বিতরণ
যুক্তরাষ্ট্রে কারারক্ষীদের নির্যাতনে মারা গেছে সাড়ে ৭ হাজার কয়েদি

যুক্তরাষ্ট্রে কারারক্ষীদের নির্যাতনে মারা গেছে সাড়ে ৭ হাজার কয়েদি

যুক্তরাষ্ট্রে গত ১০ বছরে কারারক্ষীদের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়ে সাড়ে ৭ হাজার কয়েদির মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ অর্থাৎ প্রায় ৫ হাজার আটক কয়েদিকে দোষী সাব্যস্ত করা যায়নি। আবার যাদেরকে ছোটখাট অভিযোগে ধরা হয়েছিল তাদের অনেককেই আদালতেও হাজির করা হয়নি। ২০০৮ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত পাঁচ শতাধিক কারাগারে মারা যাওয়া বন্দীদের নথিপত্র যাচাই-বাছাই করে মার্কিন গণমাধ্যমে এই ভয়ঙ্কর চিত্রের প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছর শেষ হওয়া বিগত এক দশকে জেলের লকআপগুলোতে মৃত্যুর হার ৩৫ ভাগ বেড়েছে। গত এক দশকে ৭ হাজার ৫৭১ জন বিচারাধীন বন্দী অকালে প্রাণ হারিয়েছে। আর দুই-তৃতীয়াংশকে ৪ হাজার ৯৯৮ জনকে যে অভিযোগে আটক করা হয়েছিল তাতে তাদের দোষী সাব্যস্ত করা যায়নি।

নিয়ম অনুযায়ী, গুরুতর অপরাধে সাজা পাওয়া বন্দীদের স্টেট ও ফেডারেল কারাগারে রাখা হয়। এ ছাড়া কারাগারগুলো লঘু সাজাপ্রাপ্ত বন্দী কিংবা বিচারের অপেক্ষায় থাকা বা কোনো সাধারণ অভিযোগে প্রাথমিকভাবে আটক ব্যক্তিদের স্থানীয়ভাবে পরিচালিত ডিটেনশন সেন্টারে আটক রাখে।

যুক্তরাষ্ট্রের ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থা অনুযায়ী, কোনো মামলায় কেউ দোষী প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত তিনি নির্দোষ। আর মামলা ছাড়া ডিটেনশন সেন্টারে কোনো বন্দীর অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু মৌলিক অধিকারেরই লঙ্ঘণ।

উক্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা শেষে নির্যাতন ও অন্যান্য অমানবিক শাস্তির বিষয়ে জাতিসংঘের বিশেষ র‌্যাপোর্টিয়ার নীল মেলজার বলেন, ‘অনেক লোক ডিটেনশন সেন্টারে মারা যাচ্ছে এবং তাদের কখনো শাস্তি হয়নি। এটি স্পষ্টতই একটি বড় সমস্যা। আপনাকে এসব ক্ষেত্রে যথাযথ প্রক্রিয়া ও মানবিক আটকের শর্ত মানতে হবে এবং সবাইকে চিকিৎসা সেবা দিতে হবে।’

যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান বন্দীদের মূল অধিকার প্রদান করেছে, কিন্তু এই বিধানগুলো কার্যকর করা বেশ কঠিন। চতুর্দশ সংশোধনীতে বিচারপূর্ব বন্দীদের সঙ্গে ‘ফেয়ার’ সুষ্ঠু আচরণের গ্যারান্টি দেওয়া হলেও ‘ফেয়ার’ আসলে কেমন তা বিচারক এবং জুরিদের ব্যাখ্যার জন্য উন্মুক্ত রয়েছে।
প্রতিবেদনে ২০১৮ সালের মে মাসের একটি ঘটনাকে নমুনা হিসেবে সামনে তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, জন ফিনেগানের বাড়ির সামনের আঙিনা ছাড়বেন না হার্ভি হিল। অঝোর ধারার বৃষ্টির মধ্যেও দাঁড়িয়ে আছেন, আকাশের দিকে তাকিয়ে হাসছেন, কখনো কখনো তার সাবেক এই বসের স্ত্রীকে হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন। কোন উপায় নয়া পেয়ে ফিনেগান ৯১১ এ ডায়াল করলেন।

এরপর ঘটনাস্থলে আসা পুলিশ অফিসারকে ল্যান্ডস্কেপার জন ফিনেগান পুরো দৃশ্যপট বর্ণনা করে বললেন, ‘তার (হিল) মানসিক চিকিৎসা দরকার।’ কিন্তু এর পরিবর্তে তার বিরুদ্ধে আনা হয় অনধিকার প্রবেশের অভিযোগ। অবশেষে খারাপ আচরণের সন্দেহে তাকে নেওয়া হয় জেলে। এই ছোট্ট অভিযোগের জন্য তার সর্বোচ্চ ৫০০ ডলার জরিমানা হতে পারতো। কিন্তু তার ভাগ্যে জোটে হাতকড়া, নির্যাতন, নিষ্ঠুরতা, অতঃপর নিথর হয়ে পড়ার করুণ নিয়তি।’

হিলকে আটকের পরদিন ৬ মে তার শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হয়ে পড়ে। এ সময় তিনি মিসিসিপির ক্যান্টনের ম্যাডিসন কাউন্টি ডিটেনশন সেন্টারে ক্ষোভে আকস্মিক একটি চেকবোর্ড নিক্ষেপ করলেন এবং মধ্যাহ্নভোজের একটি ট্রে দিয়ে এক প্রহরীকে আঘাত করেন।

ডিটেনশন সেন্টারের সিসি ক্যামেরার ভিডিওচিত্রে (এর আগে অপ্রকাশিত) দেখা যায়, তিনজন রক্ষী এসে তাকে ধরে বেধড়ক মারপিট ও চোখেমুখে মরিচের গুঁড়া মিশ্রিত পানি স্প্রে করেন এবং বারবার নাক-মুখ ও মাথায় লাথি মারেন। এরপর হাতকড়া পরিয়ে দুজন রক্ষী হিলকে কংক্রিটের দেয়ালে সজোরে ধাক্কা মারেন।

স্টেটের এক তদন্তে দেখা গেছে, তারা ক্যামেরা থেকে দূরে ঝরনার দিকে তাকে নিয়ে যান এবং ওই সময়েও হাতকড়া পড়ানো অবস্থায় তাকে আবারও মারপিট করেন। প্রহরীরা বলেন, হিল ছিল মারমুখী ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ। তাকে ঠেকাতে শক্তি প্রয়োগ দরকার ছিল।

ভিডিওতে দেখা যায়, হিল ব্যথায় কোকড়াচ্ছিলেন। এ সময় লাইসেন্সধারী একজন নার্স তাকে দেখেছেন ঠিকই কিন্তু কোনো ওষুধ দেননি। মিসিসিপির আইন অনুযায়ী, কোনো চিকিৎসক বা উচ্চতর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নার্স চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। তবে হিলকে চিকিৎসা না দিয়ে সোজা বিচ্ছিন্ন একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়। সেখানেও একজন প্রহরী তাকে মেঝেতে হাঁটু দিয়ে চেপে ধরেন এবং হাতকড়া খুলে তাকে সিমেন্টের উপর ফেলে রাখেন। হিল হামাগুঁড়ি দিয়ে টয়লেটের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু ততক্ষণে দেহ থেকে প্রাণ বের হয়ে যাওয়ায় সেই চেষ্টায় ব্যর্থ হিল নিথর হয়ে পড়লেন।

কক্ষে আটকে রাখার ৪৬ মিনিটের মধ্যে কেউ তাকে দেখতে যাননি। যখন রক্ষীরা তাকে দেখতে গেলেন তখন হিল নিথর। তার নাড়ি নেই। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ৩৬ বছর বয়সী একটি সুস্থ, সবল তরতাজা যুবক মারা গেলেন। অথচ তার পাশে অনেক লোক ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের দরিদ্রতম রাজ্য মিসিসিপির সবচেয়ে দরিদ্র গ্রামীণ হোমস কাউন্টিতে হিল বড় হয়েছিলেন। তিনি রাজ্যের সমৃদ্ধশালী কাউন্টি ক্যান্টন থেকে এক ঘণ্টার পথ দক্ষিণে ল্যান্ডস্কেপিংয়ের কাজ করতেন।

১৮ বছর বয়সে হিল যৌনতা ও ডাকাতির অভিযোগে গ্রেপ্তার হন। এ মামলায় তিনি ১৪ বছর জেল খাটেন। ২০১৫ সাল মুক্তির পর তিনি ব্যবসায়ের মালিক ফিনেগানের সঙ্গে ল্যান্ডস্কেপিংয়ের চাকরি নেন। ফিনেগানের মতে, ‘হিল একজন অবিশ্বাস্য কর্মী ছিলেন।’ ২০১৭ সালের বসন্তে তার মানসিক অসুস্থতার লক্ষণ দেখা দেয়। তার ঠিকমতো ঘুম হচ্ছিল না। এ কারণে তিনি ২০১৮ সালে তাকে কাজ থেকে বাদ দেন। এরপরে হিল তার বাসায় আসা শুরু করেন এবং দাবি করতে থাকেন তিনি তার পুরোনো বসকে কয়েক মিলিয়ন ডলার ঋণ দিয়েছেন।

জবাবে ফিনেগান বলেন, ‘হার্ভি, আমি যদি তোমার কাছ থেকে কয়েক মিলিয়ন ডলার নিয়ে থাকতাম তাহলে আমি ল্যান্ডস্কেপিং করতাম না। আমি একটি দ্বীপে থাকতাম।’ কার কথা কে শোনে, হিল আসতেই থাকেন। ২০১৮ সালের মে মাসে ফিনেগন ম্যাডিসন অবশেষে পুলিশ বিভাগে কল করেন। পুলিশ জানায়, তিনি যদি হিলকে সেখান থেকে সরাতে চান, তাহলে তাকে অভিযোগ করতে হবে। এরপর পুলিশের পরামর্শ অনুযায়ী ফিনেগান তাই করেন। ‘এটি এমন কিছু নয় যা আমি সত্যিই করতে চেয়েছিলাম।’ তবে হ্যাঁ ‘হার্ভির একটি মানসিক হাসপাতালে থাকা দরকার ছিল।’

স্টেশনে ফিনেগান অফিসারকে বলেছিলেন যে তিনি চার্জগুলো নেবেন এবং হিলকে কোনো রুম পেলে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা হাসপাতালে নিয়ে যাবেন। পরিবর্তে হিলকে শুক্রবার সকালে ম্যাডিসন কাউন্টির কারাগারে বুক করা হয়। ম্যাডিসন পুলিশ বিভাগ বলেছে, ‘হিলকে গ্রেপ্তার করার মতো কোনো উল্লেখযোগ্য বা অসাধারণ ঘটনা ঘটেনি।’

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Dokhinerkhobor.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com