শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:০৮ পূর্বাহ্ন

উপ-সম্পাদক :: দিদার সরদার
প্রধান সম্পাদক :: সমীর কুমার চাকলাদার
প্রকাশক ও সম্পাদক :: কাজী মোঃ জাহাঙ্গীর
যুগ্ম সম্পাদক :: মাসুদ রানা
সহ-সম্পাদক :: এস.এম জুলফিকার
প্রধান নির্বাহী সম্পাদক :: মামুন তালুকদার
নির্বাহী সম্পাদক :: সাইফুল ইসলাম
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক :: আবুল কালাম আজাদ
সংবাদ শিরোনাম :
খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও তারেক রহমানের সুস্থতা কামনায় গৌরনদীতে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত গৌরনদীতে এতিমখানা ও মাদ্রাসার দরিদ্র, অসহায় শিক্ষার্থীদের মাঝে ঈদ বস্ত্র বিতরণ ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত বরিশালে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কারাবন্ধী ও রাজপথে সাহসী সৈনিকদের সম্মানে ইফতার দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত আদালতে মামলা চলমান থাকা অবস্থায়, দখিনের খবর পত্রিকা অফিসের তালা ভেঙে কোটি টাকার লুণ্ঠিত মালামাল বাড়িওয়ালার পাঁচ তলা থেকে উদ্ধার, মামলা নিতে পুলিশের রহস্যজনক ভূমিকা গলাচিপা উপজেলা প্রেসক্লাবের কমিটি গঠন, সভাপতি হাফিজ, সম্পাদক রুবেল চোখের জলে বরিশাল প্রেসক্লাব সভাপতি কাজী বাবুলকে চির বিদায় বিএনপি নেতা জহির উদ্দিন স্বপন কারামুক্ত উচ্চ আদালতে জামিন পেলেন বরিশাল মহানগর বিএনপির মীর জাহিদসহ পাঁচ নেতা তসলিম ও পিপলুর নেতৃত্বে বরিশাল জেলা উত্তর ও দক্ষিণ যুবদলের বরিশাল নগরীতে কালো পতাকা মিছিল হিউম্যান ফর হিউম্যানিটি ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে গৌরনদীতে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে বই বিতরণ
চরের বাসিন্দাদের খোঁজ নেয় না কেউ

চরের বাসিন্দাদের খোঁজ নেয় না কেউ

দৌলতখান প্রতিনিধি ॥ মেঘনার বুক চিরে বয়ে যাওয়া জলরাশির মধ্যে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে একটি সবুজ দ্বীপ। সেখানে হাজারও লোকের বসবাস এবং ওই দ্বীপই তাদের জীবিকার উৎস। কথা হচ্ছে ভোলার দৌলতখান উপজেলার মূল ভূ-খণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হাজিপুর চরের কথা। যেখানে নেই কোনো উন্নতমানের স্কুল, বেরিবাঁধ, স্বাস্থ্য কেন্দ্র। শীতকালে থাকে বিশুদ্ধ পানির সংকট এবং বর্ষাকালে জোয়ারের পানি আর প্রকৃতিক দুর্যোগের মধ্যেই চলে এ চরের মানুষের জীবন তরী। নদীতে মাছ শিকার আর জমি চাষাবাদ-এই দুই পেশা এখানকার মানুষের। আধুনিক এ সভ্যতার যুগেও এসব এলাকার মানুষ বেঁচে রয়েছেন চরম অবহেলায় মধ্যে। সরকারি সাহায্য-সহযোগিতাও তেমন পৌঁছায় না তাদের কাছে। হাজিপুর চর ঘুরে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কয়েক বছর আগে মেঘনায় জেগে ওঠে হাজিপুর চর। উঁচু স্থানে ঘর তৈরি করে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বসবাস করছেন চরের মানুষজন। একটি মাত্র কাঁচা রাস্তা ব্যবহার করছেন এখানকার বাসিন্দারা। রাস্তাটি কোথাও ফসলি জমির ওপর দিয়ে, কোথায় খালের পাড় দিয়ে, আবার কোথায় বাড়ির আঙ্গিনা দিয়ে গেছে। বর্ষা মৌসুমে পুরো চর পানিতে থৈ থৈ করে। আধুনিকতা থেকে বঞ্চিত এ চরে নানান সংকটের কারণে বাল্য বিয়ে প্রকট আকার ধারণ করেছে। প্রায় প্রত্যেকটি পরিবারেই ১২/১৩ বছর বয়সেই মেয়েদের বিয়ে দেওয়া হয়। মেয়েদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পেরে বাধ্য হয়েই বিয়ে দেন বলে জানান অভিভাবকরা। শুধু বাল্য বিয়েই নয়, কমিউনিটি ক্লিনিক থাকলেও সেখানে কোনো চিকিৎসা হচ্ছে না বলে অভিযোগ চরের বাসিন্দাদের। সেখানে নেই পর্যাপ্ত ওষুধ ও চিকিৎসক। এ চরে দুটি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। এ বছর একটি ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। অন্যটি থাকলে কয়েক বছরের মধ্যে তারা চিকিৎসকের দেখা পাননি। লাইলি বেগম নামের এক গৃহবধূ বলেন, ‘ক্লিনিক আছে কিন্তু চিকিৎসক নেই, ওষুধ চাইলেও আমরা ওষুধ পাই না।’ একই অভিযোগ করেন কয়েকজন গৃহবধূ। তারা জানান, সরকার চরের মানুষের জন্য চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র দিয়েছে, কিন্তু সেখানে কোনো চিকিৎসক নেই। শাহাবুদ্দিম নামে এক বাসিন্দা বলেন, ‘চিকিৎসার অভাবে প্রতি বছরই গর্ভবতী অনেক নারী নানা সমস্যায় পড়েন। নদী পাড়ি দিয়ে জেলা-উপজেলায় নিতে গিয়ে অনেকেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। এসবের বাইরেও চরে নতুন সমস্যা যোগ হয়েছে, আর তা হলো ভাঙন। ব্যাপক হারে ভাঙছে নদী। এতে চরের অনেক পরিবার গৃহহারা হয়ে পড়ছেন। কেউ এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাচ্ছেন। কেউ আবার দৌলতখানের বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় নিচ্ছেন।’ অন্যদিকে, নদীতে মাছ না থাকায় জেলে পাড়ায় হতাশার ছায়া। গত মৌসুমে নদীতে ঝাকে ঝাকে ইলিশ ধরা পড়লেও যেন সে চিত্র এখন আর নেই। জেলেদের চোখ-মুখ মলিন হয়ে গেছে। দেনার দায়ে দিশেহারা তারা। পুরো চরে ফসলের উজ্জ্বল সম্ভাবনা থাকলেও যেন জোয়ার আর লবণাক্ত পানি কৃষকদের মুখে হাসি ফুটাতে পারেনা। চরে শিক্ষার হার নেই বললেই চরে। ছোট ছোট শিশুরা তাদের বাব-মায়ের সঙ্গে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত রয়েছে। অল্প বয়সেই বই খাতার পরিবর্তে নৌকা-বৈঠা তুলে দেওয়া হয় তাদের হাতে। বাবার সঙ্গে মাছ শিকার করেই দিন কেটে যায় কোমলমতি এসব শিশুদের। চরের মেঠপথ ঘুরে দেখ গেছে, চারদিকে জলরাশি বেষ্টিত হাজিপুর চরে কোথায় নেই বাঁধ, শুধু বাঁধ না থাকায় পুরো বর্ষায় তাদের জলোচ্ছাসে কাটাতে হয়। ঝড়ের পূর্বাভাস পৌঁছায় না এসব মানুষের কাছে। সিডর, আইলা ও মহাসেনের মতো ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এসব এলাকার মানুষ।তবে সরকারি সহায়তার অভাবে এখনও ঘুরে দাড়াতে পারেননি তারা।চরে বিদ্যুতের সেবা পৌঁছায়নি, তবে পৌঁছেছে সৌর বিদ্যুৎ। বেশ কিছু ঘরে সৌর বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত। সাংবাদিকদের কাছে পেয়ে চরের বাসিন্দাদের অভিযোগ যেন শেষই হচ্ছে না। জানিয়েছেন নানা সমস্যার কথা। শুধু নেই আর নেই। হাজিপুর ইউপি চেয়ারম্যান হামিদুর রহমান টিপু বলেন, ‘চরে নানা সমস্যা থাকলেও বর্তমানে প্রধান সমস্যা নদী ভাঙন। গত মৌসুম থেকে এ মৌসুম পর্যন্ত কয়েক ওয়ার্ডের বেশিরভাগ এলাকা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ঘরবাড়ি হারিয়ে মানুষ নিঃস্ব। অবহেলিত জনপদ চরের বাসিন্দারা চান স্থায়ী বেরিবাঁধ।’ তিনি আরও বলেন, ‘ঝড় বাতাস হলে জোয়ারের পানিতে পুরো চর পানিতে প্লাবিত হলে মানুষজন চরম কষ্টে দিন পার করতে হয়। সরকারের কাছে চরের এসব সমস্যা সমাধানের দাবি দীর্ঘদিনের। কিন্তু তেমন কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না।’

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Dokhinerkhobor.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com