রবিবার, ২১ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৩০ পূর্বাহ্ন

উপ-সম্পাদক :: দিদার সরদার
প্রধান সম্পাদক :: সমীর কুমার চাকলাদার
প্রকাশক ও সম্পাদক :: কাজী মোঃ জাহাঙ্গীর
যুগ্ম সম্পাদক :: মাসুদ রানা
সহ-সম্পাদক :: এস.এম জুলফিকার
প্রধান নির্বাহী সম্পাদক :: মামুন তালুকদার
নির্বাহী সম্পাদক :: সাইফুল ইসলাম
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক :: আবুল কালাম আজাদ
সংবাদ শিরোনাম :
খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও তারেক রহমানের সুস্থতা কামনায় গৌরনদীতে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত গৌরনদীতে এতিমখানা ও মাদ্রাসার দরিদ্র, অসহায় শিক্ষার্থীদের মাঝে ঈদ বস্ত্র বিতরণ ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত বরিশালে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কারাবন্ধী ও রাজপথে সাহসী সৈনিকদের সম্মানে ইফতার দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত আদালতে মামলা চলমান থাকা অবস্থায়, দখিনের খবর পত্রিকা অফিসের তালা ভেঙে কোটি টাকার লুণ্ঠিত মালামাল বাড়িওয়ালার পাঁচ তলা থেকে উদ্ধার, মামলা নিতে পুলিশের রহস্যজনক ভূমিকা গলাচিপা উপজেলা প্রেসক্লাবের কমিটি গঠন, সভাপতি হাফিজ, সম্পাদক রুবেল চোখের জলে বরিশাল প্রেসক্লাব সভাপতি কাজী বাবুলকে চির বিদায় বিএনপি নেতা জহির উদ্দিন স্বপন কারামুক্ত উচ্চ আদালতে জামিন পেলেন বরিশাল মহানগর বিএনপির মীর জাহিদসহ পাঁচ নেতা তসলিম ও পিপলুর নেতৃত্বে বরিশাল জেলা উত্তর ও দক্ষিণ যুবদলের বরিশাল নগরীতে কালো পতাকা মিছিল হিউম্যান ফর হিউম্যানিটি ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে গৌরনদীতে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে বই বিতরণ
দেশের মহাসড়কগুলো নির্মাণে বিপুল অর্থ ব্যয় হলেও তা টেকসই হচ্ছে না

দেশের মহাসড়কগুলো নির্মাণে বিপুল অর্থ ব্যয় হলেও তা টেকসই হচ্ছে না

দখিনের খবর ডেস্ক ॥ দেশের মহাসড়কগুলো টেকসই হচ্ছে না। অথচ ওসব সড়ক নির্মাণে সরকারকে অর্থ ব্যয় করতে হয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করতে প্রতি কিলোমিটারে ব্যয় হয়েছে প্রায় ১৮ কোটি টাকা। কিন্তু এক বছরের মধ্যে তা ভঙ্গুর দশায় পরিণত হয়েছে। ইতিমধ্যে ওই মহাসড়কের কোথাও পিচ (পেভমেন্ট) দেবে গেছে, আবার কোথাও ফুলেফেঁপে ওঠেছে। এমনকি সড়ক বিভাজকও ভেঙে যাচ্ছে। তাছাড়া জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীত করতে ব্যয় হয়েছে তার চেয়েও বেশি। প্রতি কিলোমিটারে ব্যয় হয়েছে প্রায় ২১ কোটি টাকা। কিন্তু ওই মহাসড়কটিতেও একই সমস্যা বিরাজ করছে। তাছাড়া টাঙ্গাইল থেকে রংপুর পর্যন্ত মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করতে প্রতি কিলোমিটারে খরচ হচ্ছে সাড়ে ৬২ কোটি টাকারও বেশি। একইভাবে চলমান জয়দেবপুর-এলেঙ্গা চার লেন মহাসড়কটিতেও কিলোমিটারপ্রতি নির্মাণ ব্যয় বেড়ে ঠেকেছে ৮৮ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। কিন্তু নির্মাণকালেই ঢাকার সঙ্গে দেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে যোগাযোগের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কটিতে রাটিং (দেবে বা ফুলেফেঁপে যাওয়া) দেখা দিয়েছে। অথচ সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর দুটি মহাসড়কই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে নির্মাণ করেছে। আর মহাসড়কের নির্মাণ কাজ তত্ত্বাবধান করেছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পর্যবেক্ষকরা। তাছাড়া অধিদপ্তরের অভিজ্ঞ ও জ্যেষ্ঠ প্রকৌশলীরা প্রকল্প পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছে। কিন্তু তারপরও সড়কগুলো টেকসই হচ্ছে না। সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দেশের মহাসড়কগুলো নির্মাণে অতিরিক্তব্যয় হলেও তা টেকসই হচ্ছে না। এ বিষয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগেরও (আইএমইডি) পর্যবেক্ষণ রয়েছে। বিভাগটি বলছে, কয়েকটি ব্যতিক্রম ছাড়া বেশির ভাগ প্রকল্পেই নির্মাণের কিছুদিনের মধ্যেই সড়ক-মহাসড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। জাতীয় সংসদের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সাম্প্রতিক এক বৈঠকে এ মূল্যায়নসংবলিত প্রতিবেদন আইএমইডি উপস্থাপন করে। ওই প্রতিবেদনে ২০১৬ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার আওতায় সমাপ্ত ৯৬টি সড়ক নির্মাণ বা উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে পর্যবেক্ষণ দেয়া হয়। শুধুমাত্র চার লেনের মহাসড়ক নয়, বিভিন্ন জাতীয়, আঞ্চলিক ও জেলা সড়ক নির্মাণ কিংবা সংস্কার বা উন্নয়নকাজেও মোটা অংকের অর্থ ব্যয় করছে সওজ অধিদপ্তর। এ বিষয়েও আইএমইডির পর্যবেক্ষণ হলো উন্নয়ন বা সংস্কারকাজ শেষ হওয়ার এক থেকে দেড় বছর, কখনো কখনো তারও আগেই সড়ক-মহাসড়ক নষ্ট হতে শুরু করছে। সূত্র জানায়, নীতিনির্ধারক ও আইনপ্রণেতাদের মধ্যেও ব্যয়বহুল সড়ক টেকসই না হওয়া নিয়ে অভিযোগ রয়েছে। মূলত বিভিন্ন কারিগরি ত্রুটি ছাড়াও ঠিকাদারদের নিম্নমানের কাজের কারণেই সড়ক টেকসই হচ্ছে না। আর মাঠপর্যায়ে যেসব কর্মকর্তা বা ঠিকাদার রয়েছে তারা শুধু নিজের লাভই খোঁজে। দেশের ক্ষতি হচ্ছে কিনা তা বিবেচনায় রাখে না। নির্মাণ পর্যায়ে সড়ক-মহাসড়কে যেসব মানের উপকরণ ব্যবহার করার কথা সেসব করা হচ্ছে না। ফলে সড়ক-মহাসড়ক যতোদিন স্থায়ী হওয়ার কথা ততোদিন হচ্ছে না। সূত্র আরো জানায়, দেশে ব্যয়বহুল সড়ক নির্মিত হলেও সেগুলো টেশসই না হওয়ার পেছনে বিশেষজ্ঞরা মোটাদাগে ৪টি কারণ চিহ্নিত করেছে। সেগুলো হলো যানবাহনের ওভারলোডিং, প্রথাগত বিটুমিন ব্যবহার, হাট-বাজার এলাকায় অপর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও সড়ক নির্মাণকালে গাড়ি চলাচল করতে দেয়া। তাছাড়া এদেশে সড়ক টেকসই না হওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে বিটুমিন। বিটুমিনে পরিবর্তন আনা এখন সময়ের দাবি। সেক্ষেত্রে পলিমার মডিফায়েড বিটুমিন বা পিএমবি সবচেয়ে ভালো বিকল্প হতে পারে। এদিকে আইএমইডির প্রতিবেদনে দেশের মহাসড়কগুলো নির্মাণের ক্ষেত্রে আরো কিছু সমস্যার কথা উঠে এসেছে। সেগুলো হলো প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি, মেয়াদ বেড়ে যাওয়া, ঘন ঘন প্রকল্প পরিচালক পরিবর্তন, প্রকল্প পরিচালকদের প্রকল্প এলাকায় অবস্থান না করা, ত্রুটিপূর্ণ উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি), সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ছাড়াই প্রকল্পের কাজ শুরু করা, মাটি পরীক্ষা না করা ইত্যাদি। সংস্থাটি প্রকল্প পর্যবেক্ষণের পর সেগুলোর ত্রুটি দূর করতে বিভিন্ন সময়ে নানা সুপারিশ দিয়েছে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই সেগুলো আমলে নেয়া হয়নি। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চার লেনের প্রকল্পটি নিয়ে আইএমইডির পর্যবেক্ষণ বলছে, অত্যধিক সংখ্যক ও অননুমোদিত ভারবাহী যানবাহন চলাচলের কারণে মহাসড়কটি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ক্রমবর্ধমান পণ্য ও যাত্রীবাহী যানবাহনের জন্য মহাসড়কটির পূর্ণ উপযোগিতা ও স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে দ্রুত নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচর্যা করা প্রয়োজন। তা না হলে দেশের অর্থনীতির প্রধান মহাসড়ক হিসেবে বিবেচিত সড়কটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। অন্যদিকে এ বিষয়ে আইএমইডি সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী জানান, সড়ক ও মহাসড়ক নির্মাণে অর্থ ব্যয়ের যৌক্তিকতা ও প্রয়োজনীয়তার বিষয় আইএমইডি পর্যালোচনা করছে। ইতিমধ্যে কারিগরি ও প্রায়োগিক নানান বিষয় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিকে অবহিত করা হয়েছে। চেষ্টা করা হচ্ছে জনগণের টাকার সর্বোচ্চ ব্যবহার ও দক্ষতার মাধ্যমে মানসম্পন্ন প্রকল্প সম্পন্ন করার। তবে সড়কের গুণগত মান বজায় রাখতে হলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর আরো দায়িত্বশীলতার প্রয়োজন রয়েছে। বিশেষ করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মাসিক পর্যালোচনা সভাটি আরো দক্ষ ও সঠিকভাবে হওয়া প্রয়োজন। তাহলে সেখানেই অনেক ত্রুটি-বিচ্যুতির সমাধান চলে আসতে পারে। পাশাপাশি পিএসসি ও পিআইসি কমিটিগুলোকে আরো সক্রিয় হওয়া প্রয়োজন। যে পর্যায়ে যতোটুকু করা প্রয়োজন আইএমইডি সেগুলো দক্ষতার সঙ্গে দেখার চেষ্টা করছে। সেজন্য মাঠপর্যায়ে তদারকি আরো বেগবান করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে সওজ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবদুস সবুর জানান, দেশের সড়ক-মহাসড়ককে যতোটা খারাপ হিসেবে উপস্থাপন করা হয় বাস্তবে সেগুলো ততোটা খারাপ নয়। সব সড়ক একদিনে ভালো করা সম্ভব হবে না। ধীরে ধীরে সব সড়কই একসময় ভালো মানের হবে। সওজ ওই লক্ষ্যেই কাজ করছে। এখন সবার প্রত্যাশা অনেক বেশি বেড়ে গেছে। আর ওই প্রত্যাশা পূরণের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। আশা করা যায় দ্রুতই দেশের সব সড়ক মানসম্পন্ন হবে। তবে সড়কের ওপর ওভারলোড যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একটি নিরাপদ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য ওভারলোডেড যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করার উপায় বের করতে চেষ্টা করা হচ্ছে। আবার দেশের সড়ক নির্মাণে যে মানের বিটুমিন ব্যবহৃত হয়ে আসছে তাতে সড়কের স্থায়িত্ব ধরে রাখা যাচ্ছে না। ফলে বিটুমিনের গ্রেড কোয়ালিটি পরিবর্তন করে উচ্চমানের বিটুমিন ব্যবহার করা হচ্ছে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কসহ নতুন বেশকিছু সড়কে উচ্চ মানের বিটুমিন ব্যবহার করায় সেগুলোতে ভালো ফলাফল মিলেছে। ধীরে ধীরে সব সড়কেই উন্নত গ্রেডের বিটুমিন ব্যবহার করা হবে। আর সড়ক টেকসই করার পরিকল্পনা সব সময়ই ছিল এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Dokhinerkhobor.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com