শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০২:১৮ পূর্বাহ্ন

উপ-সম্পাদক :: দিদার সরদার
প্রধান সম্পাদক :: সমীর কুমার চাকলাদার
প্রকাশক ও সম্পাদক :: কাজী মোঃ জাহাঙ্গীর
যুগ্ম সম্পাদক :: মাসুদ রানা
সহ-সম্পাদক :: এস.এম জুলফিকার
প্রধান নির্বাহী সম্পাদক :: মামুন তালুকদার
নির্বাহী সম্পাদক :: সাইফুল ইসলাম
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক :: আবুল কালাম আজাদ
সংবাদ শিরোনাম :
খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও তারেক রহমানের সুস্থতা কামনায় গৌরনদীতে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত গৌরনদীতে এতিমখানা ও মাদ্রাসার দরিদ্র, অসহায় শিক্ষার্থীদের মাঝে ঈদ বস্ত্র বিতরণ ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত বরিশালে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কারাবন্ধী ও রাজপথে সাহসী সৈনিকদের সম্মানে ইফতার দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত আদালতে মামলা চলমান থাকা অবস্থায়, দখিনের খবর পত্রিকা অফিসের তালা ভেঙে কোটি টাকার লুণ্ঠিত মালামাল বাড়িওয়ালার পাঁচ তলা থেকে উদ্ধার, মামলা নিতে পুলিশের রহস্যজনক ভূমিকা গলাচিপা উপজেলা প্রেসক্লাবের কমিটি গঠন, সভাপতি হাফিজ, সম্পাদক রুবেল চোখের জলে বরিশাল প্রেসক্লাব সভাপতি কাজী বাবুলকে চির বিদায় বিএনপি নেতা জহির উদ্দিন স্বপন কারামুক্ত উচ্চ আদালতে জামিন পেলেন বরিশাল মহানগর বিএনপির মীর জাহিদসহ পাঁচ নেতা তসলিম ও পিপলুর নেতৃত্বে বরিশাল জেলা উত্তর ও দক্ষিণ যুবদলের বরিশাল নগরীতে কালো পতাকা মিছিল হিউম্যান ফর হিউম্যানিটি ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে গৌরনদীতে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে বই বিতরণ
করোনা সংকটেও কিস্তি আদায় বিপাকে স্বল্প আয়ের মানুষ

করোনা সংকটেও কিস্তি আদায় বিপাকে স্বল্প আয়ের মানুষ

কাজী মামুন, পটুয়াখালী ॥ ডালিয়া বেগম (৪০) অল্প দামের শাড়ি, সালোয়ার, কামিজ, বিছানার চাদর বাড়ি বাড়ি ঘুরে বিক্রি করেন। তিনটি এনজিওর কাছ থেকে প্রায় এক লাখ টাকা ঋণ নিয়ে ব্যবসা করছেন তিনি। প্রতি সপ্তাহে তাঁকে কিস্তি দিতে হয় প্রায় আড়াই হাজার টাকা। এর পরও তিন সন্তান নিয়ে টেনেটুনে সংসার চলছিল। কিন্তু করোনা সংকটে তাঁর বিক্রি বলতে গেলে বন্ধ হয়ে গেছে। বেচাবিক্রি বন্ধ, বাকির টাকাও কেউ শোধ করছে না, এর ওপর কিস্তির টাকার জন্য চাপ। ডালিয়া বেগম তিন সন্তান নিয়ে মহাবিপদে পড়েছেন।
এমন পরিস্থিতি কেবল ডালিয়া বেগমেরই নয়, বিভিন্ন এনজিওর ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচির আওতায় মানিকগঞ্জে দুই লক্ষাধিক মানুষ এমন বিপদে আছেন। একই রকম বিপদে আছেন পটুয়াখালীর গলাচিপার মানুষজনও। তাঁরা রিকশা, অটোরিকশাচালক, চায়ের দোকানদার, সবজি বিক্রেতা, দিনমজুরের মতো নি¤œ আয়ের দিন আনা দিন খাওয়া মানুষ। সামান্য আয়ের কিছুটা বাঁচিয়ে কিস্তি পরিশোধ করেন। তাঁদের অনেকের অবস্থা এখন ডালিয়ার চেয়েও নাজুক।
মানিকগঞ্জ জেলা এনজিও সমন্বয় কমিটি সূত্রে জানা গেছে, মাইক্রোক্রেডিট অথরিটির অনুমোদন নিয়ে জেলায় ১৫টি বেসরকারি সংস্থা ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ঋণগ্রহীতার সংখ্যা প্রায় পৌনে তিন লাখ। এ ছাড়া সমাজসেবা অধিদপ্তর ও সমবায় সমিতির অনুমোদিত বেশ কিছু সংগঠন ক্ষুদ্রঋণ দিয়ে থাকে। এদের ঋণগ্রহীতা সদস্যসংখ্যাও দুই লাখের নিচে নয় বলে জানা গেছে। জেলা এনজিও সমন্বয় কমিটির সভাপতি সুমন আহম্মেদ জানান, কিস্তি আদায় বন্ধের কোনো নির্দেশনা তাঁরা পাননি। তবে মাইক্রোক্রেডিট অথরিটি তাঁদের আগামী দুই মাস কিস্তি আদায়ে চাপ দিতে নিষেধ করেছে। কেউ নিজ ইচ্ছায় কিস্তি দিলে আদায় করা হবে। কেউ কিস্তি না দিলে খেলাপি হবে না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ঋণ সমন্বয় করা হবে। ঋণগ্রহীতাদেরও বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তবে গতকাল সোমবারও ঋণ আদায়কারী কয়েকজন মাঠকর্মী জানান, এ ধরনের কোনো নির্দেশনা তাঁদের জানানো হয়নি। ক্ষুদ্র ঋণগ্রহীতারাও এমন নির্দেশনা পাননি বলে জানা গেছে।
এদিকে পটুয়াখালীর গলাচিপায়ও একই চিত্র দেখা গেছে। গলাচিপার পৌর এলাকার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের চায়ের দোকানদার ধীরেন দেবনাথ জানান, বিভিন্ন এনজিও থেকে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা ঋণ নেন। সপ্তাহে প্রায় ১৮ হাজার টাকার কিস্তি দিতে হয়। কিন্তু দুই সপ্তাহ ধরে ঋণের কোনো কিস্তি দিতে পারছেন না। কারণ জানতে চাইলে ধীরেন দেবনাথ বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কতা হোনার পর খুব বেশি মানুষ এহন আর হোটেলে খায় না। আগে দিনে ১২০০-১৫০০ টাকা লাভ থাকত। এহন বেচাকিনা করে দিনে ১৫০-৩০০ টাকা লাভ পাই। ঋণের কিস্তি দিমু নাকি খামু! কী যে করমু চিন্তা করতে পারছি না।’
উপজেলার রতনদী তালতলী ইউনিয়নের চায়ের দোকানদার খাদিজা বেগম (৪০) বলেন, ‘আমি চায়ের দোকান দিই। স্বামী ট্রলার চালায়। ভাইরাসের ডরে এহন খুব একটা বেশি মানুষ যাওয়া-আসা করে না। আবার চায়ের দোকানেও বেচাকিনা নাই। সংগ্রাম দিয়া ৪০ হাজার টাহা লোন নিছি। সপ্তাহে এক হাজার ৫০ টাহা কিস্তি। গত দুই সপ্তাহ দিতে পারি নাই। হেলিগ্গা বাড়ি যাইয়া কিস্তি চাইছে। এহন এনজিওর লোক দেখলে পলাইয়া থাহি। কয়দিন পলায়া থাকতে পারমু আল্লায় জানে।’
এ ব্যাপারে সংগঠিত গ্রামোন্নয়ন কর্মসূচি (সংগ্রাম) পটুয়াখালীর এরিয়া ম্যানেজার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা বাড়ি গিয়ে কিস্তি নেব না। যাদের সামর্থ্য আছে তারা অফিসে এসে দিয়ে যাবে। এখন সবারই টাকার দরকার আছে।’
গলাচিপা গ্রামীণ ব্যাংকের এরিয়া ম্যানেজার দেবেশ চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমরা ওপরের নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত কিছুই করতে পারছি না। তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি লিখেছি।’ বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আশার গলাচিপা অফিসের আঞ্চলিক ম্যানেজর মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ঋণের কিস্তির জন্য চাপাচাপি করি না। কিন্তু কেন্দ্র থেকে কোনো নির্দেশনা না পেলে আমাদের কিছুই করার নেই।’ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি। তবে বিভিন্ন মাধ্যমে খবর পাচ্ছি। সব এনজিওর অবস্থাই এক। সবাই ঋণের কিস্তি তুলতে ব্যস্ত। আগামীকাল (আজ) ঋণদাতা এনজিওদের নিয়ে বসব, যাতে এই দুর্যোগকালীন সময়ে ঋণের কিস্তির জন্য মানুষকে হয়রানি করা না হয়।’

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Dokhinerkhobor.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com