শনিবার, ২৫ মার্চ ২০২৩, ০৬:৫২ পূর্বাহ্ন

উপ-সম্পাদক :: দিদার সরদার
প্রধান সম্পাদক :: সমীর কুমার চাকলাদার
প্রকাশক ও সম্পাদক :: কাজী মোঃ জাহাঙ্গীর
যুগ্ম সম্পাদক :: মাসুদ রানা
সহ-সম্পাদক :: এস.এম জুলফিকার
প্রধান নির্বাহী সম্পাদক :: মামুন তালুকদার
নির্বাহী সম্পাদক :: সাইফুল ইসলাম
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক :: আবুল কালাম আজাদ
সংবাদ শিরোনাম :
নওগাঁ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরন অনুষ্ঠিত সন্ধ্যা নদীর ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক এম.পি ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ দিবস উপলক্ষ্যে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী’র পক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে শেখ হাসিনা’র নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে চলছে : পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কে ক্ষমতায় না আনলে সুবিধাভোগীদের সকল ভাতা বন্ধ হয়ে যাবে -পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী ৪ ফেব্রুয়ারী বরিশাল বিভাগীয় বিএনপির সমাবেশ সফল করতে গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া উপজেলা বিএনপির প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত ৪ ফেব্রুয়ারী বিএনপি বরিশাল বিভাগীয় সমাবেশ সফল করতে কাশিপুর ইউনিয়ন বিএনপির প্রচার পত্র বিতরণ ৪ ফেব্রুয়ারী বিএনপির বরিশাল বিভাগীয় সমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে সদর উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে লিফলেট বিতরণ রিক্সা পেয়ে আনন্দে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রীকে জড়িয়ে কাঁদলেন অক্ষমবৃদ্ধ ও দুপা-বিহীন প্রতিবন্ধী মুলাদীতে আজাহার উদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবনির্বাচিত কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে নির্বাচিত হওয়ার অভিযোগ
টাকায় মেলে জাহাজ চালানোর সার্টিফিকেট!

টাকায় মেলে জাহাজ চালানোর সার্টিফিকেট!

দখিনের খবর ডেস্ক ॥ বিআইডব্লিউটিএ থেকে টাকায় মেলে জাহাজ চালানোর সার্টিফিকেট। এ ছাড়া সরকারি এ সংস্থাটির বিরুদ্ধে রয়েছে দায়িত্বে অবহেলার বিস্তর অভিযোগ। যদিও এমন অভিযোগ অমূলক বলে দাবি করেছেন বরিশাল বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম-পরিচালক (বন্দর ও পরিবহন) আজমল হুদা মিঠু সরকার। অন্যদিকে মাস্টার নির্দেশনা দেন, সুকানি নৌযান পরিচালনা করেন, আর ইঞ্জিন নিয়ন্ত্রণ করেন ড্রাইভার- এই তিনজনের সমন্বয়ের মাধ্যমেই চলে বড়-ছোট নৌযান। কিন্তু মাস্টার-সুকানির বদলে নৌযান চালাচ্ছেন কেবিনবয়। প্রশিক্ষণবিহীন অদক্ষ মাস্টার, সুকানি এবং ড্রাইভারের সমন্বয় না হওয়ায় প্রায়ই ঘটছে নৌ-দুর্ঘটনা। এতে প্রাণহানি হচ্ছে, চিরতরে পঙ্গু হচ্ছেন অনেকে। ক্ষতি হচ্ছে বিপুল সম্পদের। বরিশাল নদীবন্দর থেকে গতকাল সকাল ১০টার দিকে যাত্রী নিয়ে হিজলা উপজেলা গন্তব্যের দিকে ছেড়ে যায় এমভি সোহেলী নামে একটি নৌযান। নিয়ম অনুযায়ী একটি নৌযান গন্তব্যে ছেড়ে যাওয়ার আগে সেটির জন্য প্রযোজ্য মাস্টার, সুকানি ও ড্রাইভার। তা আছে কিনা সেটি তদারক করার কথা বিআইডব্লিউটিএর একজন ট্রাফিক পরিদর্শকের। কিন্তু ওই নৌযানটি গন্তব্যে ছেড়ে যাওয়ার আগমুহূর্তে এসব তদারক করতে দেখা যায়নি কোনো ট্রাফিক পরিদর্শককে। শুধু সোহেলী নয়, বরিশাল নদীবন্দর থেকে ঢাকাসহ দূরপাল্লার স্থানীয় রুটগুলোতে ছেড়ে যাওয়া কোনো লঞ্চের মাস্টার, সুকানি ও ড্রাইভার যথাযথভাবে আছ কিনা সেটি তদারক করা হয় না বলে জানিয়েছেন বরিশাল-বোরহানউদ্দিন রুটের একটি লঞ্চের মাস্টার মো. মিলন। তদারকি না থাকায় অদক্ষদের দিয়ে নৌযান চালানোয় প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। এতে যাত্রীরা হতাহত হওয়া ছাড়াও ক্ষতি হচ্ছে বিপুল সম্পদের।
বরিশাল নদীবন্দরে হুমায়ুন কবির নামে একজন যাত্রী জানান, ঢাকার দুর্ঘটনার চিত্র দেখলে যে-কেউ বুঝতে পারে যে, অদক্ষদের দিয়ে ময়ূর-২ লঞ্চটি চালানো হচ্ছিল। মানুষের জীবন-সম্পদ রক্ষায় অভিজ্ঞ মাস্টার, সুকানি ও ড্রাইভার দিয়ে যাত্রীবাহী নৌযান চালানোর দাবি জানান তিনি। এদিকে প্রশিক্ষণবিহীন অদক্ষরা লঞ্চ চালানোর দায়িত্ব পাওয়ার জন্য টাকার বিনিময়ে মাস্টার, সুকানি ও ড্রাইভার সার্টিফিকেট কিনছেন বলে অভিযোগ করেছেন অভিজ্ঞ নৌযান মাস্টাররা। তাদের দাবি, বিগত সময় (নৌ-পরিবহনমন্ত্রী মো. শাহজাহান খানের আমলে) টাকার বিনিময়ে ৯০ ভাগ সার্টিফিকেট এসেছে। অথচ যারা লঞ্চ চালাতে চালাতে ২০ থেকে ৩০ বছরের অভিজ্ঞ কিন্তু লেখাপড়া কম বা অশিক্ষিত, তাদের সার্টিফিকেট দেওয়া হয় না। নৌ সেক্টরে দীর্ঘদিন ধরে এই অনিয়ম-দুর্নীতি চলে আসছে বলে অভিযোগ করেন বরিশাল-ঢাকা রুটের এমভি সুন্দরবন-১১ লঞ্চের মাস্টার মো. আলমগীর হোসেন। তার দাবি, যতবার দুর্ঘটনা ঘটে ততবার তদন্ত কমিটি হয়। অথচ যারা সার্টিফিকেট বাণিজ্যের জন্য দায়ী তারাই থাকেন তদন্ত কমিটির দায়িত্বে! এ কারণে কোনো দুর্ঘটনার আজ পর্যন্ত দৃষ্টান্তমূলক বিচার কিংবা সুপারিশ কার্যকর হয়নি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বরিশাল নদীবন্দরের একজন প্রবীণ নৌযান শ্রমিক বলেন, তিনি গত ৩০ বছরে অন্তত চারবার মাস্টার হওয়ার পরীক্ষা দিয়েছেন। চাকরি করেন বাংলাদেশের নৌযানে, অথচ পরীক্ষায় জিজ্ঞাসা করা হয় ভারত, লন্ডন ও সিঙ্গাপুরের নৌ-সংক্রান্ত প্রশ্ন। কারণ তিনি টাকা দিতে পারেন না। এ কারণে তিনি মাস্টারও হতে পারেননি। তার মতো অনেকে দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে প্রথম শ্রেণির মাস্টার পদে উন্নীত হওয়ার পরীক্ষা দিলেও বারবার তাদের ফেল করিয়ে দেওয়া হয় শুধু দালালের মাধ্যমে না যাওয়ার কারণে। প্রথম শ্রেণির নৌযান মাস্টার মো. নুরুল ইসলাম মোল্লা জানান, দূরপাল্লা রুটের বেশির ভাগ লঞ্চে দুজন করে প্রথম শ্রেণির মাস্টার থাকেন। কিন্তু স্থানীয় রুটের লঞ্চগুলোতে কোনো প্রশিক্ষিত মাস্টার নিয়োগ দেওয়া হয় না। একজন কেরানি আর একজন সুকানি মিলেই নৌযান চালান। কেরানি যাত্রীদের টিকিট কেটে মাস্টার ব্রিজে এসে সুকানিকে নির্দেশনা দেন। কিন্তু সুকানিও প্রশিক্ষিত না হওয়ায় প্রায়ই ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটে। প্রাণহানি হয়। আরেক প্রথম শ্রেণির মাস্টার জালাল আহমেদ বলেন, ছোট লঞ্চগুলোতে অভিজ্ঞ মাস্টার নিয়োগ দেওয়া হয় না বেশি বেতন দিতে হবে এই ভয়ে। ফলে কেরানিরা টিকিট কাটেন। তারাই আবার লঞ্চ চালান। এ কারণে দুর্ঘটনা অনিবার্য। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে টাকার বিনিময়ে নৌযান চালানোর সার্টিফিকেট পাওয়া যায়- জোর দিয়ে বলেন অভিজ্ঞ মাস্টার জালাল আহমেদ। তৃতীয় শ্রেণির মাস্টার মো. সবুজ জানান, চোখের সামনে যাদের কেবিনবয় কিংবা লস্করের চাকরি করতে দেখেছেন, কোনো ধরনের প্রশিক্ষণ ছাড়াই হঠাৎ দেখেন তারা মাস্টার হয়ে গেছেন। কিন্তু কীভাবে- জানতে চাইলে সবুজসহ দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির অন্য মাস্টাররা জানান, দালালের মাধ্যমে ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা দিলে যে-কেউ মাস্টারের সার্টিফিকেট আনতে পারবে। এতে কোনো দক্ষতা কিংবা প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হয় না। এটা নৌ সেক্টরে ওপেন সিক্রেট। তারা মনে করেন, ঢাকার দুর্ঘটনার জন্য দুই লঞ্চের অদক্ষ মাস্টাররা দায়ী এবং বিআইডব্লিউটিএ কোনোভাবে এ দায় এড়াতে পারেন না। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ যাত্রী কল্যাণ সংস্থার পরিচালক ও বরিশাল জেলা লঞ্চ মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আজিজুল হক আক্কাস বলেন, দু-একটি লঞ্চ ফাঁকেজোকে অভিজ্ঞ মাস্টার, সুকানি কিংবা ড্রাইভার ছাড়া চলতে পারে। বেশির ভাগ লঞ্চ অভিজ্ঞদের দিয়ে পরিচালনা করা হয়। তিনি বলেন, ‘টাকার বিনিময়ে মাস্টার-সুকানি-ড্রাইভার সার্টিফিকেট পাওয়ার কথা সঠিক নয়। তারা বলুক কাকে তারা টাকা দিয়েছে, দে আর লায়ার।’ তার সুরেই বরিশাল বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম-পরিচালক (বন্দর ও পরিবহন) আজমল হুদা মিঠু সরকার বলেন, কোনো নৌযান গন্তব্যে যাওয়ার আগে সেটির মাস্টার, সুকানি আছে কিনা পরীক্ষা করে তবেই তাকে ছাড়ার অনুমতি দেওয়া হয়ে থাকে। বিশেষ ক্ষেত্রে দু-একটি লঞ্চে মাস্টার না থাকতে পারে। তবে সেসব লঞ্চ সুকানিরাই চালাতে পারেন। ঢালাওভাবে অদক্ষ ও অপ্রশিক্ষিতদের মাস্টার সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে, এটা বাহুল্য কথা বলে দাবি এই বন্দর কর্মকর্তার। নৌ-দুর্ঘটনা রোধে বিআইডব্লিউটিএ বরিশালের মাস্টারদের প্রতি তিন মাস পর মোটিভেশনাল স্পেস দিয়ে থাকে। তাদের নৌযান চালানোর জন্য নানা পরামর্শমূলক দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়। এ কারণে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় বরিশালে নৌ-দুর্ঘটনা কম বলে দাবি করেন নদীবন্দর কর্মকর্তা আজমল হুদা মিঠু।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Dokhinerkhobor.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com