নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ শ্রাবণের শেষ এবং ভাদ্র মাস শুরুর অবিরাম বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত বরিশাল নগরীর জনজীবন। সাথে নদীর জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে নগরীর নি¤œাঞ্চল। বৃষ্টির পানির সঙ্গে জোয়ারের পানি একাকার হয়ে জনদুর্ভোগ পৌঁছেছে চরমে। একই অবস্থা বিরাজ করছে জেলার বিভিন্ন উপজেলায়। প্লাবিত হয়েছে গোটা দক্ষিণাঞ্চলের নি¤œাঞ্চল ও চরাঞ্চল। এদিকে বিপদসীমা অতিক্রম করেছে কীর্তনখোলার পানির প্রবাহ। ফলে নদী তীরবর্তী মানুষের মাঝে বিরাজ করছে আতঙ্ক। আর এমন অবস্থা আরও দু/তিনদিন বজায় থাকতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। শনিবার থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টি এবং সোমবার দুপুর নাগাদ নদীতে জোয়ার আসার সাথে সাথে ডুবে যায় বরিশাল নগরীর অধিকাংশ নি¤œাঞ্চল। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েন নগরবাসী। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকাল সাগরদীর দরগাহবাড়ি, ধানগবেষণা রোড, দ: আলেকান্দার ব্যাপ্টিস্ট মিশন রোড, মুনসুর কোয়ার্টার, নবগ্রাম রোড, কেডিসি বস্তি এলাকা, পোর্টরোড ও পলাশপুরের নি¤œাঞ্চল, ভাটারখালসহ বেশ কয়েকটি এলাকার রাস্তাঘাট বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যায়। শহরের বর্ধিতাংশ হিসেবে পরিচিত নগরীর কাশীপুর, টিয়াখালী, লাকুটিয়া, রুপাতলীরও বেশ কিছু অংশ নিমজ্জিত হয় জোয়ারের পানিতে। আকস্মিক এমন ঘটনায় ভোগান্তিতে পড়েন এসব এলাকার বাসিন্দা এবং পথচারীরা। তবে সন্ধ্যা নাগাদ ভাটা শুরুর সাথে সাথে নেমে যায় পানির স্তর।
বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানিয়েছে, খারাপ আবহাওয়া এবং উজানের ঢলে বরিশালের বেশ কয়েকটি নদীর পানির প্রবাহ বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। পাউবোর গেজ রিডার আবু রহমান জানান, দেশের পশ্চিমাঞ্চলে চলমান বন্যার পানি দক্ষিণাঞ্চলের নদ-নদী দিয়ে সাগরে নামছে। এছাড়া গত ৩ দিনের টানা বৃষ্টিপাতের প্রভাবে নদীতে পানির চাপ কিছুটা বেড়েছে। বর্তমানে কীর্তনখোলার পানি বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার অতিক্রম করে ২.৬৬ মিটারে বইছে। স্বাভাবিক অবস্থায় এই প্রবাহ থাকে ২.৫৫ মিটারে। সর্বশেষ চলতি বছরের সদ্য সমাপ্ত জুলাই মাসে বেড়েছিল কীর্তনখোলার পানি। সেই মাসে সর্বোচ্চ ৩০ সে.মি পর্যন্ত পানির প্রবাহ বেড়েছিল কীর্তনখোলায়। আর সেসময় নিমজ্জিত হয়ে পড়ে বরিশালের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। ক্ষতি হয়েছিল মৌসুমী ফসলেরও। যদিও তেমন সম্ভাবনা এখনও নেই বলে আশ্বস্ত করেছেন পাউবোর কর্মকর্তা।
এছাড়া বরিশালের বাদবাকি বেশিরভাগ নদ-নদীর পানিই বিপদসীমার কাছাকাছি উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে পাউবো সূত্র। এদিকে হিজলা, মুলাদীর বিভিন্ন নদীসহ বানারীপাড়া-উজিরপুরের সন্ধ্যা, মেহেন্দিগঞ্জের কালাবদর ও তেঁতুলিয়া এবং ঝালকাঠির রাজাপুরের বিষখালী নদী তীরবর্তী এলাকায় কিছুটা ভাঙন দেখা দিয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
বিষখালী নদীর নলছিটি অংশের বাসিন্দা সৌরভ মৃধা জানান, এখন ইরি ধান কাটার মৌসুম। কিন্তু নদীর পানি বেড়ে তলিয়ে গেছে ধানক্ষেত। ফলে ক্ষয়-ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে অনেকটাই। তবে নদ-নদীর জোয়ারে কিছু এলাকা প্লাবিত হলেও ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা কম বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা। বরিশাল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শষ্য) তৌফিকুল ইসলাম জানান, জোয়ারের পানি উঠলেও তা আবার দ্রুতই নেমে যাচ্ছে। তিনি বলেন, বরিশাল নদীপ্রবণ এলাকা। তাই জোয়ারকালীন ৮/১০ সেন্টিমিটার পানি বাড়লেও ৩/৪ ঘণ্টা পর ভাটির টানে দ্রুতই নেমে যায়। ফলে ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা অনেকটাই কম। তবে যেহেতু মাঠে এখনও আউশ ধান পরিপক্ক অবস্থায় আছে, সেক্ষেত্রে মাঠে সপ্তাহখানেক পানি আবদ্ধ হয়ে থাকলে ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত বীজতলার কোন সংবাদ এখনও পর্যন্ত তারা পাননি। এদিকে বৈরি আবহাওয়ার কারণে প্রয়োজন ছাড়া অনেকেই বাসা থেকে বের হননি নগরবাসী। বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার কারণে নগরীতে যানবাহনের সংখ্যাও ছিল কম। অতি প্রয়োজনে যারা বৃষ্টি মাথায় নিয়ে বেরিয়েছেন তারা পরিবহন সংকটসহ নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। বরিশাল আবহাওয়া অধিদপ্তরের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক হুমায়ুন কবির জানান, মৌসুমী বায়ু প্রবাহের কারণে এখন যে বৃষ্টিপাত হচ্ছে সেটা স্বাভাবিক পর্যায়ে রয়েছে। যদিও নদীবন্দরে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। সোমবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ৬টা পর্যন্ত ৬.৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করার বিষয়টি উল্লেখ করে এমন আবহাওয়া আরও ২ থেকে ৩ দিন বিরাজ করতে পারে বলে জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা।
The next time I learn a weblog, I hope that it doesnt disappoint me as a lot as this one. I mean, I do know it was my choice to learn, but I truly thought youd have something fascinating to say. All I hear is a bunch of whining about something that you would repair if you werent too busy in search of attention.