লাইফস্টাইল: আজকাল ভীষণ বেড়েছে আত্মহত্যার প্রবণতা। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও থেকে নির্মম এই সংবাদ শুনতে পাওয়া যায়। হাসিখুশি, সুখী দেখতে একজন মানুষের এমন মৃত্যু আমরা মেনে নিতে পারি না কিছুতেই!
কখনো কি ভেবেছেন ব্যাপারটা নিয়ে? কেন দেখতে সুখী মনে হওয়া মানুষগুলো হুট করে একদিন আত্মহত্যা করে বসেন? উত্তরটি হচ্ছে, আমরা কেবল তাদের বাইরের সুখটিই দেখতে পাই, ভেতরের লুকানো বিষণ্ণতা কারো চোখে পড়ে না। আর এই লুকানো বিষণ্ণতার আঘাতেই মানুষটি একদিন নিজেকে মেরে ফেলে। বিষণ্ণতা হচ্ছে মনের সেই ক্যান্সার, যা সকলের অজান্তে একজন মানুষকে কুড়ে কুড়ে খেয়ে ফেলে।
বিষণ্ণতার এই মহামারি প্রতিরোধের একটিই উপায়, আর তা হচ্ছে লক্ষণগুলো চিনতে পারা। নিজের বা প্রিয়জনের কারো মাঝে এই লক্ষণগুলো দেখা গেলেই অতি অবশ্যই একজন সাইকিয়াটিস্ট, সাইকোলজিস্ট বা কাউন্সিলারের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত। প্রয়োজনে ওষুধ সেবন করা উচিত।
আজকের ফিচার সেই লক্ষণগুলি নিয়েই।
আগ্রহ হারিয়ে ফেলা
দীর্ঘস্থায়ী বিষণ্ণতায় আক্রান্ত মানুষেরা কিছুতেই আর আনন্দ খুঁজে নিতে পারেন না। কখনো যেসব কাজ তাদের খুব ভালো লাগতো, সেগুলোও তারা আর উপভোগ করেন না।
অবসন্নতা
বেশিরভাগ সময় দেখা যায় ক্লান্ত ও অবসন্ন বোধ করতে, অসুস্থ বোধ করতে। এই ক্লান্তি শারীরিক নয়, মানসিক। এই ক্লান্তি জীবনের প্রতি ক্লান্তি।
খাবারের চাহিদায় পরিবর্তন
বিষণ্ণতায় আক্রান্ত মানুষের হয় খাবারের প্রতি একদম অনীহা বোধ করতে শুরু করেন, নতুবা মারাত্মক আগ্রহ। অনেকের কাছে খাবার বিস্বাদ ঠেকে, অনেকেই আবার খাবার খেয়ে জীবনের শূন্যতা পূরণ করতে চান।
ইনসোমনিয়া
বিষণ্ণতায় আক্রান্ত মানুষের ঘুমের সমস্যা থাকবেই। রাতে ঘুম না হওয়া, ঘুম হলেও ঘুমের মাঝে কষ্ট বোধ ইত্যাদি বিষণ্ণতার লক্ষণ। আবার কেউ যদি বেশিরভাগ সময় ঘুমিয়ে কাটায়, সেটাও তীব্র বিষণ্ণতার লক্ষণ।
জিনিস নষ্ট করা, নিজেকে কষ্ট দেওয়া
প্রিয় কিছু নষ্ট করে ফেলা, নিজেকে নানান ভাবে আঘাত দিতে চাওয়া বিষণ্ণতার অন্যতম একটি লক্ষণ। তীব্র বিষণ্ণতায় মানুষের এমনটা হওয়ে থাকে।
আমি ভালো আছি
একজন স্বাভাবিক মানুষ কখনোই সর্বদা ‘আমি ভালো আছি” বলতে পারেন না। বিষণ্ণ মানুষেরা প্রায়ই সকলের সামনে খুব ভালো থাকার অভিনয় করেন। খুব ভালো থাকার অভিনয়ের অসুখী মানুষটাকে বুঝতে ভুল করেন তাই অনেকেই।
একলা থাকতে চাওয়া
আপনার কাছের কেউ আজকাল আর বেশি মেলামেশা করছে না, মানুষের ভিড় এড়িয়ে চলছে। কিংবা আপনারও হয়তো একই অবস্থা, একলা থাকতেই ভালো লাগছে খুব। এমন ক্ষেত্রে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে প্রতি বছর ৩৫০ মিলিয়ন মানুষ বিষণ্ণতায় ভোগেন। এবং এর একটা বড় অংশ নিজেকে হত্যা করেন। ক্যান্সার যেমন জীবন কেড়ে নেয়, বিষণ্ণতার ব্যধিও তাই। তাই একে গুরুত্ব দিয়ে শিখুন, নিজের ও প্রিয়জনের মানসিক স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখুন।
তথ্যসূত্র: পাওয়ার অফ পজেটিভিটি
Leave a Reply