নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল কেন্দ্রীয় নতুল্লাবাদ বাস টারমিনাল এলাকার চারদিকে অবৈধভাবে দখল গ্রাস করে সিটি কর্পোরেশনের জমিতে দোকান-পাঠ ও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বসিয়ে নগরের প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার আদর্শে বিশ্বাসী ও ঘনিষ্টজন পরিচয় ব্যবহার করে সাব কোয়ালা, লিজ ও ভাড়া দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে শ্রমীক-কর্মচারী কল্যান তহবিলের সভাপতি ও বাস মালিক গ্রুপের সদস্যসহ বরিশাল সদর উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামাল হোসেন লিটন মোল্লার গ্যাং ও সেবা পরিবহনে গণধর্ষনকারী বাহিনী।
মাসের পর মাস সিটি কর্পোরেশনের জমিতে গড়ে উঠা বাস টারমিনাল। সেই টারমিনাল এলাকার প্রবেশদ্বার থেকে শুরু করে বাস ষ্টান্ডের চতুর দিক অবৈধভাবে দখল গ্রাস করে নিত্য নতুন প্রতিষ্ঠান উঠিয়ে পজেশন বিক্রি, সাবলিজসহ মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকদের কাছে ভাড়া দিয়ে অবৈধ টাকার পাহাড় গড়ছেন লিটন মোল্লা।
দিনের পর দিন বিসিসি’র জমি এভাবে অবৈধভাবে দখল হয়ে যাওয়ার কারনে লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বিসিসি। অন্যদিকে বিসিসি কর্তৃপক্ষ অর্থনৈতিক আয়ের পথ থেকে সরে গিয়ে কেন নির্বিকার ভূমিকা পালন করছেন তা নিয়ে ব্যাপক রহস্যের দানা বেদেছে। এমনকি তারা প্রশ্ন তুলেছেন নগর পিতা মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ’র ভূমিকা নিয়েও।
সরেজমিনে ঘুড়ে দেখা গেছে, বাসষ্টান্ডের প্রবেশের দু’ধারে ব্যাপক খালি জায়গা ছিল। এখন সেখানে অবৈধভাবে বিভিন্ন নিত্য নতুন দোকান বসিয়ে বাসস্টান্ডের সৌন্দর্য নষ্ট করা হয়েছে। এছাড়া ট্রাফিক আইল্যান্ড সোজাসজি সড়ক সংলগ্ন ফুটওয়ার্ক স্লাবের পাশে দোকান বসিয়ে অগ্রিম পজেশনসহ প্রতিমাসে মোটা অংকের টাকা উঠিয়ে লিটন মোল্লাসহ তার গ্যাংয়ের সদস্যরা ভাগ-বাটোয়ারা করে নিচ্ছে। অপরদিকে শুধু সামনের অংশ নয় স্টান্ডের পিছনের অংশ দখল করে নিয়ে প্রতিটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে ভাড়া আদায় করার মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। এব্যাপারে দোকান ব্যবসায়ীদের কাছে বিসিসি’র জমিতে ব্যবসা করছেন এর ভাড়া কাকে দিচ্ছেন জানতে চাইলে কোন এক অদৃশ্য শক্তির ভয়ে তারা মুখ খুলতে রাজি হয়নি। তবে তাদেন ভয়ের রহস্য খুঁজতে গিয়ে বেড়িয়ে আসে লিটন মোল্লা গ্যাংয়ের নির্যাতনের কথা।
তাই ওই সকল ব্যবসায়ীরা তাদের টাকার মায়া এবং পরবর্তী সময়ে নির্যাতনের শিকার হওয়া থেকে নিজেকে রক্ষার জন্য সকলেই বোবা হয়ে রয়েছে কোন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী তারা কাকে ভাড়া দেন সে বিষয়ে মুখ খুলতে চাইছে না। এবিষয়ে নথুল্লাবাদ বাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাসরেক বাবলু বলেন, বাসষ্টান্ডের সামনে কারা অবৈধভাবে দু’পান্তে বিসিসি’র জায়গা দখল করে বিভিন্ন দোকান-পাঠ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বসিয়ে ভাড়া আদায় করে খাচ্ছে তা সিটি কর্পোরেশনের দেখার বিষয়।
তিনি আরো বলেন ইতি পূর্বে এখানে কেহ অবৈধভাবে বাসষ্টান্ডের জমি দখল করে বেচা-কেনা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বসিয়ে ভাড়া নেয়নি। এখন সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ তাদের জমি যদি উদ্ধার না করে সেখানে মালিক সমিতির কোন কিছুই বলার নেই। এক কথায় বলা যায় বিসিসি ইচ্ছাকৃর্ত ভাবে অর্থনৈতিক রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
সূত্রমতে দীর্ঘদিন বরিশাল নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টারমিনাল মালিক গ্রুপের সাবেক সভাপতি ও বরিশাল মহানগর শ্রমীকলীগ সভাপতি আহতাব আহমেদকে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে অদৃশ্য এক ছায়া শক্তির বলে বর্তমান অঘোষিত শ্রমীক নেতা ও কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ কামাল হোসেন লিটন মোল্লা শ্রমীক আন্দোলনের মাধ্যমে আফতাব আহমেদকে হটিয়ে ২০১৬ সালের সেবা পরিবহনের গণধর্ষনকারী কয়েকজন সদস্যকে সাথে নিয়ে বাস টারমিনালের দখল নেয়। এর পর থেকেই তিনি তার বাসষ্টান্ডের রাজত্ব পাকাপোক্ত করতে সেইসব ধর্ষণকারীদের সামনে রেখে শুরু করে দূরপাল্লার বাস কাউন্টারে প্রতিমাসে ১৫ থেকে ২৫ হাজার টাকা করে চাঁদাবাজি।
একই সময়ে বাসটারমিনালে প্রবেশের দু’পাশে নিত্যনতুন দোকান পাঠ-ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বসিয়ে পজেশনসহ প্রতিমাসে ভাড়া দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন লিটন মোল্লা ও তার ধর্ষক বাহিনীর সদস্যরা। বাস টারমিনালে তার সন্ধানে গেলে অপর একটি সূত্র জানায়, কয়েকদিন আগে বরিশাল বাসটারমিনালের গোল্ডেন লাইন পরিবহনের দক্ষিণবঙ্গের ম্যানেজার, একাউন্টর্স ইনচার্জ মোঃ শহিদুল ইসলামের উপর রাতে হামলা চালিয়ে মারধর ও আহত করে প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা ছিনিয়ে নেয়ার চাঁদাবাজী মামলায় পলাতক রয়েছে।
এবিষয়ে অভিযুক্ত লিটন মোল্লার রবি মুঠো ফোনে একাধিকবার কল করা হলে তার নম্বরটি বন্ধ থাকায় তার আত্বপক্ষ সমর্থনের কোন বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। এব্যাপারে বিসিসি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ইসরাইল হোসেনের সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমি আমাদের স্ট্রেট অফিসারকে দিয়ে খোঁজ নিয়ে এসব অবৈধভাবে থাকা দখলকরাদের বিরুদ্ধে আইনগত ও জমি উদ্ধারের কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানান।
Leave a Reply