নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ সরকারি বরিশাল কলেজের নাম অশ্বিনী কুমারের নামে নামকরণের দাবিতে বরিশাল নাটক স্মারকলিপি দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী এবং জেলা প্রশাসক বরাবরে ওই স্মারকলিপি প্রদান করে নাট্য সংগঠন বরিশাল নাটক। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এবং শিক্ষামন্ত্রীর কাছে ওই স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, বৃটিশ আমলে বরিশালের শিক্ষা, রাজনীতি এবং জ্ঞান অন্বেষণে পুরোধা ব্যক্তিত্ব ছিলেন অশি^নী কুমার দত্ত। পশ্চাদৎপদ জনপদে শিক্ষা বিস্তারের জন্য বরিশাল নগরীর কালীবাড়ি রোডে প্রথমে ১৮৮৪ সনে তাঁর পিতার নামে প্রতিষ্ঠা করেন ‘ব্রজমোহন বিদ্যালয়’। পরবর্তীতে উচ্চশিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে ১৮৮৯ সনে প্রতিষ্ঠা করেন ‘ব্রজমোহন কলেজ। তিনি মারা যাওয়ার পর কালীবাড়ি রোডে অবস্থিত তাঁর নিজস্ব বাসভবনটি পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকে। ১৯৬৬ সনে তার বাসভবনে প্রতিষ্ঠা করা হয় ‘বরিশাল নৈশ মহাবিদ্যালয়’। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর নৈশ কলেজটিকে প্রথমে বরিশাল দিবা ও নৈশ কলেজে রূপান্তর করা হয়। পরে এটির নামাকরণ করা হয় ‘বরিশাল কলেজ’। কলেজটিকে ১৯৮৬ সনে জাতীয়করণ করা হলে নামকরণ করা হয় ‘সরকারি বরিশাল কলেজ’।
অবহেলিত এবং অন্ধকারে নিমজ্জিত বরিশালের রেনেসাঁর অবতার অশ্বিনী কুমার দত্ত। মহাত্মা অশি^নী কুমার কেবল বরিশাল নয়, বৃহত্তর বরিশালসহ নোয়াখালী অঞ্চলের শিক্ষা সংস্কৃতির পথ সুগম করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে অশ্বিনী কুমারের বাড়িতে থাকা বরিশাল কলেজের নাম পরিবর্তন করে তার নামে করার দাবি তোলা হয়। বর্তমান জেলা প্রশাসকের নিকট একই দাবি করা করা হলে বিষয়টি তদন্ত করে গত ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ পাঠিয়েছেন। ওই সুপারিশের ভিত্তিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় নীতিগতভাবে ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বরিশাল নাটক সেই পদক্ষেপের চূড়ান্ত রূপ দেখতে চায়। স্মারকলিপিতে আরও উল্লেখ করা হয়, অশ্বিনী কুমার দত্তের নাম বরিশার কলেজের সঙ্গে যুক্ত করা কোন একক ব্যক্তির প্রচেষ্টা নয়। তাই এটাকে ব্যক্তিগতভাবে যারা দেখছেন তারা ভুল করছেন। এই দাবির পক্ষে দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক, সাংস্কৃতিক রাজনৈতিক দল ও প্রতিষ্ঠানের অবদান রয়েছে। সমষ্টিগত দাবির ফসল সরকারের প্রস্তাবনা। সরকার এই দাবি বাস্তবায়নে ইতিবাচক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। কিন্তু একটি মহল সেই দাবির বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ায় নতুন করে দাবি তুলতে হচ্ছে। এই প্রস্তাবনার সঙ্গে সবাই থাকবেন এবং আছেন বলেই বরিশাল নাটক মনে করে। সরকারি প্রস্তাবনা দ্রুত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী এবং শিক্ষামন্ত্রীর প্রতি আহ্বানও জানায় তারা। জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমানের হাতে বরিশাল নাটকের পক্ষে স্মারকলিপি তুলে দেন সংগঠনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সামসুদ্দিন কামাল, সাধারণ সম্পাদক পার্থ সারথী। এসময় উপস্থিত ছিলেন, আবুল খায়ের সবুজ, আশরাফুর রহমান সাগর, মিঠুন রায়, তাহমিনা দুলারী, শামসুন্নাহার নিপাসহ অন্যরা।
Leave a Reply