অনলাইন ডেক্স ॥ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধানের দায়িত্ব নিয়েছেন আজিজ আহমেদ। সোমবার দুপুরে সেনা সদর দপ্তরে বিদায়ী সেনাপ্রধান আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক আনুষ্ঠানিকভাবে তার কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন। এর ফলে আজিজ আহমেদ বাংলাদেশের অষ্টদশ সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করলেন।
আন্তঃবাহিনী সংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) সহকারী পরিচালক রেজাউল করিম শাম্মী এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেছেন, সকালে নতুন সেনাপ্রধান হিসেবে আজিজ আহমেদ দায়িত্ব নিয়েছেন। এখন পর্যন্ত তিনি লেফট্যানেন্ট জেনারেল আছেন। আগামীকাল র্যাঙ্ক ব্যাচ পরানোর পর তিনি জেনারেল হবেন। বিদায়ী সেনাপ্রধান শিখা অনির্বাণে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন এবং মুক্তিযুদ্ধে শহীদ সেনা সদস্যদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান। পরে সেনাকুঞ্জে সেনাবাহিনীর একটি চৌকস দল তাকে ‘গার্ড অব অনার’দেয়। এরপর সেনাবাহিনীর ঐতিহ্য অনুসারে মোটরযানে করে বিদায় জানানো হয় ২০১৫ সালের ২৫ জুন নিয়োগ পাওয়া জেনারেল শফিউল হককে। আজ থেকে তিনি অবসরকালীন ছুটিতে যাচ্ছেন।
নতুন সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ ২০১২ সালের ডিসেম্বরে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি প্রধান হিসেবে নিয়োগ পান। চার বছর এই দায়িত্ব পালনের পর ২০১৬ সালের ৩ নভেম্বর তার মেয়াদ শেষ হয়। সেদিন তাকে মেজর জেনারেল থেকে লেফটেন্যান্ট জেনারেল হিসেবে পদোন্নতি দিয়ে ‘আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন্যাল কমান্ড’ এর জিওসি হিসেবে বদলি করা হয়। ১৯৬১ সালের ১ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জে জন্ম নেন আজিজ আহমেদ। তবে তার পৈত্রিক বাড়ি চাঁদপুরে। তার বাবা আব্দুল ওয়াদুদ এবং মা রেনুজা বেগম। আজিজ আহমেদ অষ্টম বিএমএ দীর্ঘদেয়াদী কোর্স শেষে ১৯৮৩ সালের ১০ জুন সেনাবাহিনীর আর্টিলারি কোরে কমিশনপ্রাপ্ত হন। তিনি পাবর্ত্য চট্টগ্রামে জিএসও-৩ (অপারেশন), পদাতিক ব্রিগেডের ব্রিগেড মেজর, সেনাসদর প্রশিক্ষণ পরিদপ্তরের গ্রেড-২ এবং সেনাসদর, বেতন ও ভাতা পরিদপ্তরের গ্রেড-১ স্টাফ অফিসারের দায়িত্ব পালন করেন। একটি আর্টিলারি ইউনিট, একটি বিজিবি ব্যাটালিয়ন, বিজিবির একটি সেক্টর, স্বতন্ত্র এয়ার ডিফেন্স আর্টিলারি ব্রিগেডসহ মোট দুইটি আর্টিলারি ব্রিগেড এবং একটি পদাতিক ডিভিশনে কমান্ড করেন আজিজ আহমেদ। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের অধীনে ১৯৯৫-১৯৯৬ সালে ইরাক-কুয়েত এ পর্যবেক্ষক এবং ২০০৫-২০০৬ সালে সুদানে জাতিসংঘ মিশন এ ফোর্স কমান্ডার এর সামরিক উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন আজিজ আহমেদ। দীর্ঘদিন স্কুল অব আর্টিলারি এবং স্কুল অব মিলিটারি ইনেটলিজেন্সের প্রশিক্ষক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন নতুন সেনাপ্রধান। তিনি ২০১২ সালের ৭ মে মেজর জেনারেল পদে পদোন্নতি লাভ করেন। ১৯৮৩ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ (পাস), ১৯৯৪ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার অব ডিফেন্স স্টাডিজ ও ২০০৮ সালে এমএসসি (টেকনিক্যাল) এবং ২০০৮ সালে আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ইন বাংলাদেশ-এআইইউবি থেকে এমবিএ (এক্সিকিউটিভ)করেন।
Leave a Reply