ডোপ টেস্টে মাদক সেবনের প্রমাণ পাওয়ায় কুষ্টিয়ায় আট পুলিশ সদস্যকে চাকরীচ্যুত করা হয়েছে। এর মধ্যে দুই জন উপ-পরিদর্শক (এসআই), দুই জন সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) এবং বাকিরা কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এ ছাড়াও এক সার্জেন্টসহ আরও দুই জনের বিষয়ে তদন্ত চলছে।
এর আগে মাদক নির্মূলের পাশাপাশি মাদকাসক্ত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা দেন জেলার পুলিশ সুপার এসএম তানভীর আরাফাত। গত দেড় বছরে ১১ জন পুলিশ সদস্যের ডোপ টেস্ট করানো হয়েছে। এর মধ্যে ৯ জনের পজিটিভ এসেছে। আর বাকি একজনের কাছে ইয়াবা ও গাঁজা পাওয়া গেছে।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আইজিপির নির্দেশনা অনুযায়ী পুলিশ সদস্যদের ডোপ টেস্ট করার উদ্যোগ নেন পুলিশ সুপার। তিনি সহেন্দভাজন ও গোয়েন্দা থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ২০১৯ সালের মে মাসে প্রথম কয়েকজন পুলিশ সদস্যের ডোপ টেস্ট করানোর নির্দেশ দেন।
পরীক্ষায় এসব সদস্য নিয়মিত মাদক সেবন করে রিপোর্ট আসে। ফেনসিডিল, ইয়াবাসহ অন্যান্য মাদক তারা নিয়মিত গ্রহণ করতো বলে রিপোর্টে জানা যায়। এরপর গত দেড় বছরে পর্যায়ক্রমে ১১ জনের ডোপ টেস্ট করা হয়। এর মধ্যে ৯ জনই মাদক সেবন করতো বলে ধরা পড়েছে। তারা সবাই কুষ্টিয়ায় কর্মরত ছিলেন।
রিপোর্ট আসার পর পুলিশ সুপার তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেন। এদের সবার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মাদকের বিষয়টি ধরা পড়ায় বিভাগীয় মামলার পাশাপাশি প্রথম দিকে অন্য জেলায় বদলি করা হয় এসব সদস্যকে। এর মধ্যে এক এসআইকে রাঙ্গামাটি জেলায় বদলি করা হয়েছিল। আর ওই সার্জেন্টকে কুষ্টিয়া পুলিশ লাইনে সংযুক্ত রাখা হয়েছে। এর মধ্যে মাদক সেবনের বিষয়টি ধরা পড়ার পর সবাইকে বিভিন্ন জেলায় বদলি করা হয়।
তদন্তে প্রমাণিত হওয়ার পর ৮জনকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এখন এক সার্জেন্টসহ দুই অফিসারের বিরুদ্ধে তদন্ত চলমান রয়েছে।
কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এসএম তানভীর আরাফাত বলেন, মাদকের সাথে কোনো আপোষ নয়। তাই শুদ্ধি অভিযান চলছে। ডোপ টেস্টে ৯ জনের মাদক গ্রহণের বিষয়টি ধরা পড়েছে। আর একজনের কাছে মাদক পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৮ জনকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আরও দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে তদন্ত চলমান রয়েছে। আমরা কুষ্টিয়া থেকে মাদক নির্মূলের পাশাপাশি পুলিশ থেকেও চিরতরে মাদকাসক্তদের বাড়িতে পাঠাতে চাই। কোনো মাদক সেবনকারীর পুলিশ চাকরি করার অধিকার নেই।
Leave a Reply