প্রতিনিধি বাউফল ॥ মিথ্যা মামলায় দীর্ঘ ছয়মাস ১৯ দিনের মাথায় জামিন মিললেও জীবনের হিসেব মিলছেনা বজলুর রহমানের (৫০)। প্রতিবেশি এক বিধবার শিশু ও নারী নির্যাতন মামলায় সামাজিক ও অর্থনৈতিক পর্যুদস্ত হয়ে পটুয়াখালীর বাউফল পৌর সদরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের নিজ বাসায় লোকচক্ষুর আড়ালে গৃহবন্ধি জীবন তার। সামাজিক মর্যাদা আর অর্থনৈতিক নি:স্ব প্রায় বজলুর রহমান জানান, ছেলে-মেয়ের উচ্চ শিক্ষা আর পারিবারিক স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্নে পৈত্রিক সম্পত্তি বিক্রি দিয়ে এক যুগের মতো সময় বিদেশে কাটান তিনি। দেশে ফিরে পৌর সদরের হাচন দালালমা র্কেটে দোকান দিয়ে শুরু করেন তিনি গার্মেন্ট পোশাক বিক্রির কাজ। একমাত্র মেয়েকে উচ্চ শিক্ষিত সহ ছেলেকে পেশায় উকিল বানাবেন আশায় বুক বাধলেও তাতছনছ হয়ে যায় প্রতিবেশি পঞ্চী বেগম নামে এক বিধবা নারীর শিশু ও নারী নির্যাতন মামলায়। প্রতিবন্ধি মেয়ে লিজা বেগমের সম্ভবা সন্তানের পিতৃত্বের দাবী তুলে ২০২০ সালের ১৪ আগষ্ট তাকে আসামী করে এক মামলা করেন পঞ্চি বেগম। মামলায় অভিযোগ করা হয় খাবারের প্রলোভনে বজলুর রহমান ধর্ষণে অন্ত:সত্ত্বা হয় মেয়ে প্রতিবন্ধি লিজা। এরপর পুলিশ ওই মামলায় পৌর সদরের গার্মেন্ট পোশাকের দোকান থেকে গ্রেফতার করে কোর্টে সোপর্দ করেন মৃত আব্দুর রহমান হাওলাদারের ছেলে বজলুর রহমানকে। এরই প্রায়৭ মাস পরে প্রতিবন্দি লিজা এক কন্যা সন্তানের জন্ম দিলে স্থানীয় সালিশ বৈঠকে ওসুরাহা মেলেনি তার। জামিন মেলেনি আদালতে আবেদন করেও। তবে বজলুর রহমান লিজা বেগমের গর্ভজাত নবজাতক কন্যা সন্তানের জৈবিক পিতা নন সুদৃঢ় ভাবে প্রমানিত উল্লেখ করে ঢাকার ফরেনসিক ডিএনএল্যাবরেটরি টেস্টের পরীক্ষক বিশ^জিৎ চন্দ্র রায়ের দেয়া পরীক্ষা প্রতিবেদনের পরে ছয় মাস ১৯ দিনের মাথায় জামিনে মুক্তি মেলে তার। ভেজা চোখে কান্না জড়ানো কন্ঠে বজলুর রহমান প্রতিবেদককে বলেন, ‘মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় সামাজিক ও অর্থনৈতিক ভাবেআমাকে পঙ্গু করা হয়েছে। করা হয়েছে গৃহবন্দি। এখন আর আমার জীবনের হিসেব মেলাতে পারছিনা। ছেলে-মেয়ে সহ পরিবারের সবার কাছে মুখ দেখাতেও কস্ট হয়। আমাকে সামজিক ভাবে মেরে ফেলা হয়েছে। এই বিচার কে করবে। আমিএর বিচার চাই।’ এ ব্যাপারে বাউফল থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ফরেনসিক মেডিকেল রিপোর্টের জন্যে আসামী ও ভিকটিমের পরিক্ষা-নিরীক্ষার ফলাফল বাউফল থানায় আসছে। ফরেনসিক রিপোর্ট অনুযায়ি মামলার ফাইনাল দেয়া হবে।’
Leave a Reply