দখিনের খবর ডেস্ক ॥ নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে জেলার গৌরনদী উপজেলার বার্থী বাজারের পূর্ব পার্শ্বে সরকারি খাল দখল করে ১৫টি পাকা দোকান ঘর নির্মাণের কাজ শুরু করায় চলতি বোরো মৌসুমে খালে পানির প্রবাহ বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, বার্থী এলাকার মোফাজ্জেল মোল্লা খালের একটি অংশ দখল করে দোকান ঘরগুলোর নির্মাণ কাজ শুরু করেছেন। ইতোমধ্যে খালের মধ্যে দোকানের পাকা পিলার স্থাপন করা হয়েছে। মোফাজ্জেল মোল্লার দাবি খাল দখল করে নয় বরং নিজেদের রেকর্ডিও সম্পত্তিতে পাকা স্থাপণা নির্মান করা হচ্ছে। খালের মধ্যে মালিকানা রেকর্ডিও সম্পত্তির বিষয়টি রহস্যজনক বলে দাবি করেছেন স্থানীয়রা। অপরদিকে আগৈলঝাড়া উপজেলার দত্তেরাবাদ এলাকায় (ডিএসবি বাজার) মসজিদের সামনে খালের মধ্যে পাকা স্থাপণা নির্মাণ কাজ শুরু করেছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। ফলে ওই খালটি বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। তবে স্থাপণা নির্মাণের সাথে জড়িত আবুল কাসেম জানান, তাদের রেকর্ডিও সম্পত্তিতে স্থাপণা নির্মান করা হচ্ছে। গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপিন চন্দ্র বিশ্বাস ও আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আবুল হাসেম জানান, খাল দখলের ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।অপরদিকে জেলার মধ্যে একমাত্র কৃষিপন্য উৎপাদনে বিখ্যাত উজিরপুর উপজেলার সাতলা ইউনিয়নের শিবপুর এলাকার প্রবাহমান সরকারি অন্নদার খালের দুইপাশে ড্রেজারের মাধ্যমে বালু দিয়ে ভরাট করে মাছ চাষ শুরু করেছেন মাসুম বিল্লাহ নামের স্থানীয় এক প্রভাবশালী ব্যক্তি। সরকারী খালের দুইপাশ ভরাট করে মাছ চাষ করায় পূর্বে নৌকাযোগে পরিবহন করা ওই এলাকার কু কু কৃষক পরিবারের কৃষিপন্য ও জমিতে উৎপাদিত ফসল বর্তমানে পরিবহন করা বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে এলাকাবাসী চরম ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছেন। বিষয়টি এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশকে অবহিত করা সত্বেও কোন সুফল পাওয়া যায়নি। স্থানীয় বাসিন্দা ছালেক শেখ, সুখরঞ্জনসহ একাধিক ব্যক্তিরা জানান, খালের বৃহত অংশের দুইপাশে বালু ভরাট করে মাছ চাষ করায় তাদের চরম ভোগান্তিতে পরতে হয়েছে। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশকে অবহিত করা সত্বেও অদ্যবর্ধি কোন প্রতিকার মেলেনি। জরুরি ভিত্তিতে সরকারি খাল দখলমুক্ত করার জন্য তারা (এলাকাবাসী) জেলা প্রশাসকের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। সচেতন নাগরিকরা জানান, একজন দখলকারী যখন নির্বিঘ্নে তার দখল কাজ সম্পন্ন করে, তখন অন্য দখলকারীরাও সরকারি সম্পত্তি দখল করতে উৎসাহ পায়। এ ক্ষেত্রে সরকারি সম্পত্তি দখলকারীদের বিরুদ্ধে কার্যকর আইনি ব্যবস্থা নেয়া হলে দখল অনেকটাই কমে যাবে। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার বলেন, প্রতিটি দখলের ঘটনায় দ্রুত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সরকারি সম্পত্তি রক্ষা করাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, গত কয়েক মাস পূর্বে বাটাজোর বন্দরের টিন ব্যবসায়ী দাদন মিয়া বন্দরের মধ্যে তার টিনের আড়তের সামনে খাল দখল করে একাধিক দোকান নির্মাণ করেছেন। বন্দরের ব্যবসায়ীরা বিষয়টি বাটাজোর তহসিল অফিসের কর্মকর্তাদের অবহিত করা সত্বেও রহস্যজনক কারণে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এর কয়েকদিন পর স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের পুত্র বাটাজোর পান আড়তের সামনে সড়কের পাশের সরকারি সম্পত্তি দখল করে দোকান ঘর নির্মাণ শুরু করেন। বিষয়টি তৎকালীন সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) জানানোর পর কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়। এরইমধ্যে সহকারী কমিশনার অন্যত্র বদলি হয়ে যাওয়ার সুবাধে কয়েকদিন পূর্বে সেখানে পূনরায় দোকান নির্মাণ করা হয়। গত কয়েকমাস পূর্বে বামরাইল বন্দরের পশ্চিম পাশের খাল দখল করে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করেছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য আতিকুর রহমান। বিষয়টি স্থানীয় ব্যবসায়ীরা উপজেলা প্রশাসনকে জানানো সত্বেও রহস্যজনক কারণে তা বন্ধ করা হয়নি।
Leave a Reply