এইচএম আসলাম ॥ নানা কারণে সর্বদাই আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকেন কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও বরিশাল মহানগর বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ার। বিশেষ করে সরোয়ারের নানা বিতর্কিত কর্মকান্ডের মাধ্যমে বরিশালবাসীর পাশাপাশি রাজনৈতিক অঙ্গনেও তিনি প্রতিনিয়ত সমালোচনার খোরাক হচ্ছেন। এবার সেই সমালোচানার গন্ডি আরও ব্যাপকতা পেয়ে গড়িয়েছে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় নয়াপল্টনসহ লন্ডন পর্যন্ত। খোদ দলীয় প্রধানের দায়িত্বে থাকা সিনিয়র ভাইস চেয়রম্যান তারেক রহমানের প্রশ্নের যথাযথ উত্তর না দিয়ে তিনি যেন ‘তপ্ত আগুনে ঘি’ ঢাললেন। এই বিষয়টি নিয়ে গোটা দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি মুখোরোচক খবরে পরিণত হয়েছে। বিষয়টি বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঢাকার নয়পল্টনসহ ছড়িয়ে পড়ে গোটা বরিশালে। সর্বত্র আলোচনার বিষয়বস্তু হলো “ক্ষুব্ধ তারেক রহমান” মাইনাস সরোয়ার, আলোচনায় চাঁন! সরোয়ার অনুসারীরা বলছেন দীর্ঘ বছর ধরে সরোয়ার ভাই দলের অসংখ্য ত্যাগী, নির্যাতিত, পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের সাইজ করেছেন, এবার তিনি নিজেই সাইজ হয়ে গেছেন। সব মিলিয়ে সরোয়ার ভাইর অবস্থা এবার ঝির ঝির।
সরোয়ারের এমন কর্মকান্ডে বরিশালেও নেতা-কর্মীদের মাঝে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে এবারের নির্বাচনে এই বিতর্কিত কর্মকান্ডের জন্য সরোয়ার কিছু একটা হারাতে পারেন বলেও খুব জোড়ালোভাবে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সরোয়ারের এই বিতর্কিত কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে আকস্মিক আলোচনায় এসেছেন বরিশাল জেলা (দক্ষিণ) বিএনপির সভাপতি এবায়েদুল হক চাঁনের মনোনয়ন চাওয়া পাওয়ার বিষয়টি। যদিও বিলম্বপ্রায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের এই বিষয়টি নিয়ে বরিশালের কোন নেতাই মুখ খলছেন না। অবশ্য এর সঙ্গত কারণ হচ্ছে- সরোয়ার একইতো কেন্দ্রীয় নেতা অপর দিকে স্থানীয় রাজনীতিতেও প্রভাবশালী। তবে কেন্দ্রীয় একটি সূত্র পুরো ঘটনার ব্যাখ্যা করে জানিয়েছে- মনোনয়ন নিয়ে গত সোমবার (১৯ নভেম্বর) ভিডিও কনফারেন্সে বরিশাল সদর আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন তরেক রহমান। এ সময় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে বরিশালের নেতাদের কাছে তিনি প্রশ্ন রাখেন- যাকে মনোনীত করা হবে তার পক্ষে সবাই কাজ করবেন কিনা? তারেক রহমানের এমন প্রশ্নের হ্যা-সূচক উত্তর দিয়ে সকলে হাত উচিয়ে সমর্থন করলেও সরোয়ার ছিলেন নিরব। যেই বিষয়টি তারেক রহমান ভিডিও কনফারেন্সে প্রত্যক্ষ করে সরোয়ারের কাছে সরাসরি প্রশ্ন রাখেন- ‘কি সরোয়ার সাহেব আপনে কি খুশি নন।’ হাত তুললেন না কেন? যদিও এমন অভিব্যক্তির পরে সরোয়ার হাত তুলে সমর্থন করলেও তারেক রহমান এবং মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ উপস্থিত স্থায়ী কমিটির নেতৃবৃন্দ বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েন। এই বিষয়টি নিয়ে সেখানে বেশ কিছুক্ষণ বরিশালের নেতাকর্মীদের মাঝে কানঘুষাও চলে। মুলত: এই বিষয়টি সেই সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠানের পরে ‘টপ খবরে’ পরিণত হয়। এমনকি যার মধ্য দিয়ে একটি আভাস মেলে সরোয়ারের এমন বেয়াদবি মূলক আচরণের চরম খেসারত দিতে হতে পারে এবারের নির্বাচনে। সেক্ষেত্রে শাস্তি স্বরুপ তাকে বরিশাল-৫ আসন থেকে সরিয়ে অন্য কোন আসনে দেয়া হতে পারে। বা মনোনয়ন বঞ্চিত করা হতে পারে। তবে সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠানে নেতা তারেক রহামানের প্রশ্নের উত্তর না দেয়ার বিষয়টি সাফ অস্বীকার করে সরোয়ার বলছেন- তিনিও হাত তুলেছিলেন। কিন্তু পাশে ক্যামেরা থাকার কারণে তা দেখতে পাচ্ছিলেন না তারেক রহমান। যে কারণে তিনি (তারেক রহমান) ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পরবর্তীতে একা সরোয়ারের সমর্থনের বিষয়টি জানতে চেয়েছেন। ওই সময় সরোয়ার হাত তুলে তার প্রশ্নের সমর্থন করেছেন বলে জানিয়েছেন। অথচ এই বিষয়টি নিয়ে রাজনৈকি প্রতিপক্ষ তাকে বিতর্কিত করতে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা গুঞ্জন ছড়িয়ে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন সরোয়ার।’ নাম না প্রকাশের শর্তে সরোয়ারের অনুসারী বেশ কয়েকজন নেতা ফোনালাপে বলেন, সরোয়ার ভাইর অবস্থা এবার ঝির ঝির। তারা আরও বলেন, দীর্ঘ বছর ধরে সরোয়ার ভাই দলের অসংখ্য ত্যাগী, নির্যাতিত, পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের সাইজ করেছেন, এবার তিনি নিজেই সাইজ হয়ে গেছেন।
Leave a Reply