দখিনের খবর ডেস্ক ॥ এক গাছ থেকে আরেক গাছে, এক ভবন থেকে আরেক ভবনে ছুটে বেড়াচ্ছে মুখপোড়া এক হনুমান। দিন কয়েক আগে হঠাৎ ওর আগমন এই এলাকায়। সবার দৃষ্টি ওর দিকে। ঘটনাটি পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার। সেখানে কাঠালতলী বাজারে মুখপোড়া হনুমানটি লোকালয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। গত কয়েকদিন ধরে খাবারের খোঁজে উপজেলার কাঠালতলী মাধবখালী ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় হনুমান ছুটে বেড়াতে দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
গতকাল সোমবার কাঠালতলী সাপ্তাহিক বাজারে দুই থেকে তিনটি মুখপোড়া হনুমান দেখা গেছে। হনুমান দেখতে স্থানীয় উৎসুক জনতা ও শিশুরা ভিড় করছে। তবে হনুমান কারো কোনো ধরনের ক্ষতি করছে না। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মুখপোড়া হনুমানটি খুবই শান্ত প্রকৃতির। পেটের ক্ষুধায় ভয়ভীতি ছেড়ে সে লোকালয়ে এসেছে বলে ধারণা করছেন। তাকে অনেকেই হাত বাড়িয়ে কলা, বিস্কুট, পাউরুটি দিচ্ছেন। লোকজনের আনাগোনা বেশি হলে বিরক্ত হয়ে সেখান থেকে অন্যত্র চলে যাচ্ছে। হনুমানটি কোথা থেকে কীভাবে এসেছে, তা কেউ সঠিকভাবে বলতে পারছে না। সুবিদখালী বাজারের ডিলার ব্যবসায়ী সমির বলেন, কয়েক দিন ধরে হনুমানটি এই এলাকায় দেখা যাচ্ছে। আমি প্রথমবার সরাসরি হনুমান দেখলাম। হনুমানকে যে যা দিচ্ছে তাই খাচ্ছে, উৎসুক লোকজন ও শিশুরা তাকে বিরক্ত করছে। স্থানীয়রা ধারণা করছে, এভাবে অরক্ষিত অবস্থায় ঠিকমতো খেতে না পেয়ে হনুমানটি অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে। এছাড়া মানুষের উৎপাতে প্রাণিটির প্রাণহানির আশঙ্কাও রয়েছে।
কাঠালতলী হাই স্কুলের বিএসসি শিক্ষক মোঃ আবদুল গাফ্ফার বলেন, এ এলাকায় কোনো সময়ে হনুমান দেখা যায় না। তবে কাঠালতলী বাজারসহ এর আশে পাশে এলাকায় গত দুই দিন ধরে দেখা যায় মুখপোড়া হনুমান। স্কুলের উপরে টাওয়ারের ও স্কুলের ছাদে ঘোরা ফেরা করছে। লাফিয়ে লাফিলে এক ছাদ থেকে অন্য ছাদে যাচ্ছে, ছাত্র-ছাত্রীরা খাবার দিচ্ছে। হনুমান কারো ক্ষতি করছে না। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সঞ্জিব কুমার বিশ্বাস বলেন, এরা প্রকৃতির বন্ধু। হনুমানকে বিরক্ত না করলে সে কারো ক্ষতি করবে না। খাবারের সন্ধানে হয়তো সুন্দরবন বা দক্ষিণাঞ্চলের কোনো এলাকা থেকে বা ট্রাকের ছাঁদে চড়ে হনুমানটি এখানে এসেছে। জেলা বন কর্মকর্তা মোঃ আবদুল আল মামুন বলেন, মুখপোড়া হনুমানের এ এলাকায় কোনো আবাসস্থল নেই। হয়ত অবৈধভাবে পাচারকালে ছুটে গেছে। ফলে এ বাজারে চলে এসেছে। আমরা বনবিভাগ থেকে চেষ্টা করবো যাতে হনুমানকে উদ্ধার করে বনের মধ্যে অবমুক্ত করতে।
Leave a Reply