দখিনের খবর ডেস্ক ॥ ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলের দুই লক্ষাধিক মানুষের মাঝে স্বাস্থ্যসেবা দ্রুত পৌঁছে দেওয়ার জন্য গত বছরের এপিলে চরফ্যাশন হাসপাতালে যুক্ত হয় একটি নৌ অ্যাম্বুলেন্স। মুমূর্ষু রোগীদের উন্নত সেবার ব্যবস্থাসহ গর্ভবতী নারীদের দ্রুত উপজেলা সদরে স্থানান্তর এবং উত্তাল মেঘনা নদী পাড়ি দেওয়ার জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে নির্মিত হয় নৌ অ্যাম্বুলেন্সটি। সেই সময় বেতুয়া লঞ্চঘাটে উপকূলীয় অঞ্চলের নৌ অ্যাম্বুলেন্স উদ্বোধন করেন আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব এমপি। কিন্তু উদ্বোধনের এক বছরের মাথায় অযতœ আর অবহেলা এবং চালক ও কর্তৃপক্ষের তদারকি না থাকায় উপজেলার দক্ষিণ চরআইচা থানার কুকরির খালে পড়ে আছে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের অ্যাম্বুলেন্সটি। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, চরফ্যাশন সদর উপজেলায় পৃথক কোনো হাসপাতাল নেই। তাই ১০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালেই সদর উপজেলাসহ পুরো উপজেলার ২০ উনিয়নের রোগীরা চিকিৎসাসেবা নেন। আর এ কারণে চরফ্যাশন সদর, চরকুকরি-মুকরি, ঢালচর, পাতিলা, চরহাসিনা, মজিবনগর, চরনিজামের চরাঞ্চলের রোগীদের মেঘনা পাড়ি দিয়ে চরফ্যাশন সদর হাসপাতালে জরুরি চিকিৎসাসেবার জন্য আনা-নেওয়ার কাজে এ অ্যাম্বুলেন্সটির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। নৌ অ্যাম্বুলেন্স নির্মাণে ব্যয় হয় ১১ লাখ ৯৫ হাজার ৫০০ টাকা। ধারণক্ষমতা ১৫ থেকে ২০ জন। প্রথম এক মাস খুব ভালো সেবা দিয়েছিল নৌ অ্যাম্বুলেন্সটি। কিন্তু সরকারিভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত চালক, জ্বালানি তেল সরবরাহ, রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বাজেট বরাদ্দ এবং বিকল হওয়া ইঞ্জিন মেরামতে যথাযথ উদ্যোগ না থাকায় অনেকটা অযতেœ চরকচ্ছপিয়া লঞ্চঘাটে পানির নিচে তলিয়ে আছে অ্যাম্বুলেন্সটি। ভাটা হলে সেটি সামান্য জেগে ওঠে। জোয়ার এলে আবার পানির নিচে পড়ে থাকে। বর্তমানে মানুষ অ্যাম্বুলেন্সটিকে বাথরুম হিসেবে ব্যবহার করছে। চরকুকরি-মুকরি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাসেম মহাজন বলেন, অ্যাম্বুলেন্সটিতে এখন মানুষ পায়খানা-প্রসাব করে। তিনি বলেন, চরাঞ্চলের মানুষের টেম্পো বা ট্রলারে করে চরফ্যাশন হাসপাতালে আসতে হয়। এই নৌ অ্যাম্বুলেন্সটি চরাঞ্চলের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে যদি কার্যকর ভূমিকা রাখে তা হলে বিশেষ উপকার হতো। তাই আমরা সংশ্লিষ্টদের কাছে অনুরোধ জানাই, যেন দ্রুত এটি চালু করা হয়। এ বিষয়ে চরফ্যাশন উপজেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শোভন বসাক বলেন, এ বিষয়ে আমাদের কিছু করার নেই। চালক ও জ্বালানির ব্যবস্থা না হলে এটার কোনো কাজ নেই। এই দুর্গম চরাঞ্চলে তাৎক্ষণিক চিকিৎসাব্যবস্থা ও জরুরি রোগী নিয়ে দ্রুতগামী চলাচল ব্যবস্থা না থাকায় প্রতি মাসেই মানুষ চিকিৎসার অভাবে মারা যাচ্ছে। বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে আনা অতিজরুরি।
Leave a Reply