নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
বরিশাল উত্তর জেলা যুবদলের ১২ টা বাজিয়ে ছাড়বে কেন্দ্রীয় যুবদলের দপ্তর সম্পাদক কামরুজ্জামান দুলাল। মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে জেলার সাতটি ইউনিটে যুবদলের ঘোষিত পকেট কমিটির নেতৃবৃন্দকে প্রতিহতের ঘোষণা দিয়েছেন নিজ দলের নেতাকর্মীরা। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত লিখিত অভিযোগপত্র যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবরে পাঠানো হয়েছে। সদয়য় অবগতি ও প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহনের জন্য অনুলিপি দেয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, কেন্দ্রীয় বিএনপির মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আহবায়ক/সদস্য সচিব বরিশাল উত্তর জেলা বিএনপি, আহবায়ক/সদস্য সচিব ও সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক বরিশাল উত্তর জেলা যুবদল বরাবরে। অভিযোগকারী নেতৃবৃন্দরা বলেন, বরিশাল উত্তর জেলা যুবদলের ১২ টা বাজিয়ে ছাড়বে কেন্দ্রীয় যুবদলের দপ্তর সম্পাদক কামরুজ্জামান দুলাল। অভিযোগ দিয়েছি সুবিচার না পেলে যে কোনো মুল্যে আমরা পকেট কমিটি প্রতিহত করবো ইনশাআল্লাহ।
বৃহস্পতিবার ১৪ জুলাই সকালে ওই আবেদনে জানা গেছে, কেন্দ্রীয় যুবদলের দপ্তর সম্পাদক কামরুজ্জামান দুলাল তার নিকট আত্মীয় বরিশাল জেলা উত্তর যুবদলের সদস্য সচিব গোলাম মোর্শেদ মাসুদের মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা লেনদেনের মাধ্যমে সাতটি ইউনিটের পকেট কমিটি ঘোষণা করেছেন। ঘোষিত কমিটিতে জেলা উত্তর যুবদলের আহবায়ক, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়কদের মতামত উপেক্ষা করে অসাংগঠনিক প্রক্রিয়ায় ফেসবুকের মাধ্যমে কমিটি ঘোষনা করেছেন।
জেলা উত্তরের গৌরনদী উপজেলা ও পৌর এবং আগৈলঝাড়া উপজেলার তৃণমূল পর্যায়ের বিএনপি ও যুবদলের নেতাকর্মীরা ঘোষিত কমিটিকে প্রত্যাখান করেছেন। একইসাথে তারা উল্লেখ করেন, যাদেরকে কমিটিতে আনা হয়েছে অতীতে তাদের রাজনৈতিক কোন পরিচয় নেই। তাই ঘোষিত কমিটি বিলুপ্ত করে অনতিবিলম্বে তৃণমূলের মতামতের ভিত্তিতে নতুন কমিটি গঠনের দাবি করা হয়। অন্যথায় ঘোষিত কমিটির নেতৃবৃন্দসহ কমিটির অনুমোদন ও সুপারশিকারী সুবিধাবাদীদের প্রতিহত করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। একই দাবীতে আগৈলঝাড়া উপজেলা যুবদলের নেতাকর্মীরা গত শুক্রবার স্থানীয় প্রেসক্লাব কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। উপজেলা যুবদলের পক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন যুবদলের সাবেক আহবায়ক মোল্লা আরিফ হোসেন ফিরোজ।
গৌরনদী উপজেলা ও পৌর যুবদলের পক্ষে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ বরাররে লিখিত আবেদন করেছেন, সরকারী গৌরনদী কলেজ ছাত্রসংসদের সাবেক ভিপি এসএম জাকির হোসেন রাজা, সাবেক ভিপি কেএম আনোয়ার হোসেন বাদল, পৌর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মোঃ মিজানুর রহমান আকবর, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক আহবায়ক মোঃ রিয়াজ ভ্ইূঁয়া, সরকারী গৌরনদী কলেজ ছাত্রসংসদের সাবেক এজিএস মোঃ নাসির সরদার, ক্রীড়া সম্পাদক এসএম জসিম শরীফ, সহ-সভাপতি রবিন হোসেন বাবুল, পৌর যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক শহিদ সরদার, বুলবুল সরদার ও সরদার জয়নাল আবেদীন।
অর্থ কেলেঙ্কারীর অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করে জেলা উত্তর যুবদলের সদস্য সচিব গোলাম মোর্শেদ মাসুদ বলেন, যারা উল্লেখিত অভিযোগ করেছেন তারা বিএনপিকে ভালবেসে দল করছেন না, তারা সবাই বিশেষ এক সুবিধাবাদী বির্তকিত নেতার আর্শীবাদপুষ্ঠ হিসেবে এলাকায় পরিচিত। কেন্দ্রের নেতৃবৃন্দরা মাঠজড়িপ করে কমিটি ঘোষণা করেছেন দাবি করে গোলাম মোর্শেদ মাসুদ বলেন, যেখানে দীর্ঘদিন দল ক্ষমতার বাহিরে, সেখানে অর্থ দিয়ে কারা কমিটিতে আসতে চায়। এসব অভিযোগ মূলত আষাঢ়ের গল্প ছাড়া আর কিছুই নয়।
বরিশাল উত্তর যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক আবুল হোসেন মোল্লা লিখিত অভিযোগ সম্পর্কে বলেন, আনিত অভিযোগ সত্য, যারা মাঠের রাজনীতি করে তারা কেউই ঘোষিত পকেট কমিটি সম্পর্কে কিছুই জানেন না। দলের নিবেদিত, মামলা-হামলার শিকার, ত্যাগী, নির্যাতিত নেতৃবৃন্দেকে প্রত্যাখ্যান করে একটি পকেট কমিটি করা হয়েছে। আমি একজন যুগ্ম আহবায়ক অথচ আমি নিজেও কিছুই জানি না। এমনকি আমাদের কারোর সাথেই কোনো প্রকার আলোচনা করা হয় নাই। ঘোষিত অগণতান্ত্রিক কমিটির বিরুদ্ধে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ। দলের হাইকমান্ডের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। আশা করি আলোচনা করে সকলের মতামতের ভিত্তিতে কেন্দ্র একটি সুন্দর কমিটি আমাদের উপহার দিবেন। আর হাইকমান্ড দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করবো ইনশাআল্লাহ।
বরিশাল জেলা উত্তর যুবদলের আহবায়ক পিপলু বলেন, আমি এ কমিটিগুলোর বিষয়ে কিছুই জানি না। আহবায়ক হিসাবে আমার কোন মতামত নেওয়া হয়নি। সুতরাং এখানে কারো স্বার্থ কাজ করেছে। তাছাড়া যে সময়ে এসব কমিটি গঠন করা হচ্ছে তখন এবং এখনো কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতি দেশের বাইরে অবস্থান করছে।
Leave a Reply