শেখ হাসিনার অধীনে আর নির্বাচন নয়: মির্জা ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ভোট চুরি করে এ সরকার গত ১৪ বছর ধরে ক্ষমতা দখল করে রয়েছে। এখন আবার একদলীয় সরকার কায়েম করতে চায়।

শনিবার (৫ নভেম্বর) বিকালে বরিশালের বঙ্গবন্ধু উদ্যানে বিভাগীয় গণসমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, দেশে বিদ্যুৎ নেই, রিজার্ভ নেই, তেল নেই, চিনি নেই। প্রত্যেক জায়গায় সরকার চুরি করেছে। সংসদ বাতিল করে একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করতে হবে। এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না।

মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগের চরিত্রের মধ্যে দুটি জিনিস আছে। একটা হচ্ছে চুরি, আরেকটা সন্ত্রাস। সন্ত্রাস করবে আর চুরি করবে। তারা ২০১৪ সালে ভোট চুরি করেছে, ২০১৮ সালে ভোট চুরি করেছে। এখন আবার ভোট চুরির নতুন নির্বাচন দিয়ে কোনোরকমে ক্ষমতায় যাওয়ার চেষ্টা করছে। আমাদের কথা পরিষ্কার, শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না।

তিনি বলেন, এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা দিতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারকে দিতে হবে। সেই নিরপেক্ষ সরকার নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করবে। এরপর হবে নির্বাচন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ আমাদের সব অর্জনকে ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে, রাজনীতিকে ধ্বংস করেছে। আজকে ১৪ বছর ধরে এ দেশের মানুষের উপর জুলুম-নির্যাতন চালাচ্ছে।

তিনি বলেন, বিদ্যুৎ নিয়ে সরকার খুব ঢাকঢোল পিটিয়েছে। এমন ঢাকাঢোল পিটিয়েছে যেন বিদ্যুতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে গেছে। সেই বিদ্যুৎ আর নেই। আজকে সকালে আমি যে হোটেলে ছিলাম সেখানে কমপক্ষে ১০ বার বিদ্যুৎ গেল আর এলো। এর আগে ৯৬ সালে যখন ক্ষমতায় ছিল, বিদ্যুৎ গেলে সবাই বলত এই হাসিনা গেল, বিদ্যুৎ আসলে বলত এই হাসিনা এলো। আজকেও একই অবস্থা। এই হাসিনা গেল, এই হাসিনা এলো।

দেশে কেউ নিরাপদ নেই। সব টাকা বিদেশে পাচার করে দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব।

বিএনপির এই নেতা বলেন, বেগম খালেদা জিয়া বরিশালে অনেক কিছু দিয়েছেন। বিভাগ দিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয় দিয়েছেন, বিকেএসপি ভবন দিয়েছেন। কিন্ত এই সরকার আপনাদের কী দিয়েছে? এই সরকার দুর্ভিক্ষ, হামলা-মামলা দিয়েছে।

তিনি বলেন, সরকার আপনাদের উন্নয়নের কথা বলেন। কিন্তু এখনো দেশের শতকরা ৪২ ভাগ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করেন। বাজারে যাওয়া যায় না, বাজারের কোনো জিনিসে হাত দেওয়া যায় না।

নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ফয়সালা হবে রাজপথে। আসুন দেশের জন্য আজ রাজপথে নামি। এই আন্দোলন খালেদা জিয়ার জন্য নয়, এই আন্দোলন তারেক রহমানের জন্য নয়, এই আন্দোলন দেশের জন্য। আমরা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন নয়। তাই আজ এই সমাবেশে মানুষের ঢল নেমেছে। আপনারা দেখিয়ে দিয়েছেন।

সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. আব্দুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ স্থানীয় নেতা-কর্মীরা।