হিজলা প্রতিবেদক ॥ মেঘনার ভাঙনের মুখে ঝুঁকিতে বরিশাল জেলার হিজলার উপজেলার ১২ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কাজী শফিউল আলম জানান, যে কোনো মুহূর্তে নদীগর্ভে বিলীন হতে পারে বিদ্যালয়গুলো। তিনি জানান, পুরো ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে ৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়। বদরটুনি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, পিএন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও বিএল মাধ্যমিক বিদ্যালয়।প্রাথমিক বিদ্যালয় ঝুকির মধ্যে রয়েছে ৯টি। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আ. গাফ্ফার জানান, ৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভাঙনের মুখে। বদরটুনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পালপাড়া, আলীগঞ্জ, আশিঘর, হিজলা, মধ্যবাউশিয়া, দঃবাউশিয়া, দঃপঃ বাউশিয়া, উত্তর বাউশিয়াসহ বেশক’টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এখন নদীর কিনারায় দাঁড়িয়ে আছে। যে কোন মুহূর্তে মেঘনা গর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে বিদ্যালয়গুলো। ইতি মধ্যে উপজেলার বিভিন্নস্থানের পাকা স্থপনাসহ কাচা ঘড়বাড়ির মালামাল ও যার দামী দামী গাছপালা কেটে নিয়ে যতদুর সম্পদ রক্ষা করা যায় সেভাবেই শেষ সম্বল রক্ষা করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডেও তথ্যানুযায়ী হিজলা উপজেলা সংলগ্ন মেঘনার চাঁদপুরে বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বইছে পাহাড়ি ঢল আর জোয়ারের পানি। বেপরোয়া ভাঙছে হিজলা উপজেলা সংলগ্ন এলাকা। প্রবহমান পানি হিজলা উপজেলার মুল ভূখন্ডে আছড়ে পড়লেও পানি উন্নয়ন বোর্ড জন্মলগ্ন থেকেই স্থানটি রক্ষার জন্য কোন সময়ে এগিয়ে আসেনি। বরাবরই ঝুঁকিতে রয়েছে হিজলা উপজেলা। ঝুঁকি থেকে রক্ষা পায়নি হিজলা উপজেলা এবং উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চল। সম্প্রতি পাহাড়ি ঢল এবং পানি বন্যায় ডুবছে পুরো হিজলা। বেপরোয়া ভাঙছে মেঘনা নদী। উপজেলা প্রশাসনিক ভবন লাগোয়া বাউশিয়া গ্রাম। মাত্র ১ কিলোমিটারের মধ্যে ৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন সেল্টার যেকোনো মুহূর্তে মেঘনায় পেটে তলিয়ে যাবার আশংকায় রয়েছে। হুমকির মুখে হিজলা উপজেলা প্রশাসনিক ভবন, টেকের বাজার। বছর বছর নদী শাসনের ধীরগতির কারণে ৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ তিনটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এখন চরম হুমকির মুখে, ভাঙার অপেক্ষায়। এমন তথ্য জানালেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আঃ গাফ্ফার এবং মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কাজী শফিউল আলম। বিষয়টি নিয়ে দফায় দফায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা পরিষদ এবং স্থানীয় সংশ্লিষ্ট কমিটির সাথে বৈঠক চলছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আমীনুল ইসলাম জানান, “আমরা অবগত আছি। উপজেলা প্রশাসনিক ভবন, টেকের বাজার, স্কুল, বাউশিয়া, বাহেরচর গ্রাম কোনোটিই নিরাপদ নয়। তার পরেও কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ রাখছি।” এদিকে বানভাসিদের দেখতে মঙ্গলবার বড়জালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান পন্ডিত শাহাবুদ্দিন আহম্মেদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে বিষয়টি নিয়ে এমপি পংকজ নাথের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হচ্ছে তার সাথে এবিষয়ে কথা বলবেন। পূর্ণিমার জোয়ার, উজানের পানি, পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী হিজলার সীমান্ত চাঁদপুরে বিপদসীমার ৭ সে:মি: পানি বৃদ্ধিতে হিজলা উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন এখন পানির নিচে। এদিকে ৭ জুলাই সন্ধা সাড়ে ৬ টার দিকে বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্যসহকারী জহিরুল ইসলাম জরুরী ভিত্তিতে হিজলার ভাঙন কবলিত বাউশিয়া এলাকা পরিদর্শন শেষে স্থানীয়দের সাময়িক আশ্বাস দিয়ে বরিশালের উদ্ধেশ্যে ফিরে যান। তিনি জানান কর্তৃপক্ষের অনুমতিতেই স্থান পরিদর্শনে আসেন তিনি। এদিকে হিজলা উপজেলা বাশীর একটাই দাবি উঠেছে ভিক্ষা বা ত্রাণ নয় চাই হিজলা রক্ষা বাধ দিয়ে এই এলাকার মানুষের জান মাল রক্ষা করুন।
Leave a Reply