এইচএসসি পাস না করেই নিজেকে বড় ডাক্তার পরিচয় দিতেন রাজধানীর ডেমরার হাজীনগরের এসএইচএস হেলথ কেয়ার হসপিটাল অ্যান্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিকসের মালিক শওকত হোসেন সুমন। অবশেষে গতকাল রোববার র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে এ ভুয়া চিকিৎসকসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সহায়তায় অভিযানটি পরিচালনা করে র্যাব-৩। এতে নেতৃত্ব দেন র্যাব সদর দপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু।
র্যাব জানায়, ভুয়া ডাক্তার সুমন প্রকৃতপক্ষে এইচএসসি পাস। প্যারামেডিক্যাল কোর্স করে নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দিয়ে গত তিন বছর যাবৎ ডেমরায় হাসপাতাল পরিচালনা করে আসছিলেন তিনি। এ ছাড়া শওকত ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) ঢাকা মহানগরের যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক। গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পটুয়াখালী একটি আসন থেকে দলটির হয়ে সংসদ সদস্য পদে নির্বাচনও করেন তিনি। তার গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলায়।
ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাসপাতালের মালিক ভুয়া ডাক্তার শওকত হোসেন সুমনকে ২ লাখ টাকা জরিমানা ও ২ বছরের জেল অনাদায়ে আরও ২ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। অভিযানে হাসপাতালের ল্যাব টেকনোলজিস্ট অসীম মণ্ডলকে ভুয়া রিপোর্টে সহযোগিতা করায় ১ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৩ মাসের জেল দেওয়া হয়। ফার্মেসি পরিচালক মো. কাকন খানকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৩ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এ সময় সরকার নিষিদ্ধ ওষুধের বড় চালানসহ, যৌন উত্তেজক ওষুধ ও মেয়াদোত্তীর্ণ বিভিন্ন ওষুধ জব্দ করা হয়। হাসপাতালের ল্যাবে রোগীদের অপ্রয়োজনীয় টেস্ট করানো হতো এবং টেস্টের রিপোর্ট বিভিন্ন নামে সুমন নিজেই দিতেন।
র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু বলেন, ‘করোনার এই ভয়াবহতার মধ্যেও মানুষ ঠকানো বন্ধ হচ্ছে না, বরং নতুন নতুন কায়দায় এসব হচ্ছে। গ্রেপ্তার করা ভুয়া ডাক্তার শওকত হোসেন সুমন গত ৩ বছর ধরে হাসপাতালটি প্রতারণামূলকভাবে পরিচালনা করে আসছে। এদিকে গত দেড় বছর আগেই হাসপাতালালের রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ শেষ হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ডাক্তার হিসেবে তিনি কোনো প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। সুমনের আরও চিকিৎসাসেবা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। পর্যায়ক্রমে ওসব প্রতিষ্ঠানেও অভিযান পরিচালনা করা হবে।’
Leave a Reply