শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৪৯ অপরাহ্ন

উপ-সম্পাদক :: দিদার সরদার
প্রধান সম্পাদক :: সমীর কুমার চাকলাদার
প্রকাশক ও সম্পাদক :: কাজী মোঃ জাহাঙ্গীর
যুগ্ম সম্পাদক :: মাসুদ রানা
সহ-সম্পাদক :: এস.এম জুলফিকার
প্রধান নির্বাহী সম্পাদক :: মামুন তালুকদার
নির্বাহী সম্পাদক :: সাইফুল ইসলাম
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক :: আবুল কালাম আজাদ
সংবাদ শিরোনাম :
খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও তারেক রহমানের সুস্থতা কামনায় গৌরনদীতে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত গৌরনদীতে এতিমখানা ও মাদ্রাসার দরিদ্র, অসহায় শিক্ষার্থীদের মাঝে ঈদ বস্ত্র বিতরণ ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত বরিশালে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কারাবন্ধী ও রাজপথে সাহসী সৈনিকদের সম্মানে ইফতার দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত আদালতে মামলা চলমান থাকা অবস্থায়, দখিনের খবর পত্রিকা অফিসের তালা ভেঙে কোটি টাকার লুণ্ঠিত মালামাল বাড়িওয়ালার পাঁচ তলা থেকে উদ্ধার, মামলা নিতে পুলিশের রহস্যজনক ভূমিকা গলাচিপা উপজেলা প্রেসক্লাবের কমিটি গঠন, সভাপতি হাফিজ, সম্পাদক রুবেল চোখের জলে বরিশাল প্রেসক্লাব সভাপতি কাজী বাবুলকে চির বিদায় বিএনপি নেতা জহির উদ্দিন স্বপন কারামুক্ত উচ্চ আদালতে জামিন পেলেন বরিশাল মহানগর বিএনপির মীর জাহিদসহ পাঁচ নেতা তসলিম ও পিপলুর নেতৃত্বে বরিশাল জেলা উত্তর ও দক্ষিণ যুবদলের বরিশাল নগরীতে কালো পতাকা মিছিল হিউম্যান ফর হিউম্যানিটি ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে গৌরনদীতে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে বই বিতরণ
হেপাটাইটিস সি ভাইরাস নিয়ে যেসব তথ্য জেনে রাখা জরুরি

হেপাটাইটিস সি ভাইরাস নিয়ে যেসব তথ্য জেনে রাখা জরুরি

হেপাটাইটিস সি ভাইরাস শনাক্ত এবং নিরাময় কৌশল আবিষ্কারের জন্য এই বছর চিকিৎসা শাস্ত্রে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিন বিজ্ঞানী যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভি জে অল্টার ও চার্লস এম রাইস এবং ব্রিটিশ বিজ্ঞানী মাইকেল হগটন।

পৃথিবীতে বর্তমানে সাত কোটি ১০ লাখের বেশি হেপাটাইটিস সি রোগী রয়েছে বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ধারণা করছে।

স্বাস্থ্য সংস্থার ধারণা অনুযায়ী, ২০১৬ সালে এই রোগে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বে প্রায় চার লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।

ঠিক সময়ে শনাক্ত এবং চিকিৎসা না হলে লিভার সিরোসিস এবং ক্যান্সার হতে পারে।

এখনো হেপাটাইটিস-সি’র কোনো টীকা আবিষ্কার হয়নি।

বাংলাদেশে হেপাটাইটিস- সি

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেবে দেখা যায়, বাংলাদেশে হেপাটাইটিস বি ও সি ভাইরাসে প্রায় এক কোটি মানুষ আক্রান্ত। বেসরকারি হিসেবে হেপাটাইটিসে প্রতি বছর ২২ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয় বাংলাদেশে।

ন্যাশনাল লিভার ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আলী বিবিসি বাংলাকে বলছেন, বাংলাদেশে শুধুমাত্র হেপাটাইটিস সি-তে কত মানুষ আক্রান্ত তার সঠিক পরিসংখ্যান নেই। তবে বিশেষজ্ঞদের ধারণা, দেশটিতে কমপক্ষে এক শতাংশ মানুষ হেপাটাইটিস সিতে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে।”

সেই হিসাবে বাংলাদেশে এই রোগে আক্রান্ত কমপক্ষে ১৬ লাখ মানুষ।

‘এই রোগের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, এটির লক্ষণ উপসর্গ খুব কম, তাই এতে আক্রান্ত হলেও সহজে ধরা পড়ে না। দীর্ঘদিন ধরে এটা শরীরের ভেতরে নীরবে থেকে যায়, সেটাই এই ভাইরাসের সবচেয়ে মারাত্মক দিক। রোগী কিছু বুঝতেই পারেন না। আস্তে আস্তে সেটা লিভারের ক্ষতি করতে শুরু করে। ফলে একসময় লিভার সিরোসিস বা লিভার ক্যান্সার তৈরি হয়।’

‘ফলে বাংলাদেশে যেটা দেখা যায়, রোগীদের রোগটি এমন সময়ে শনাক্ত হয়েছে, যখন অনেক বেশি ছড়িয়ে পড়েছে।’ তিনি বলছেন।

হেপাটাইটিস সিতে কীভাবে মানুষ আক্রান্ত হয়

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণত এটা রক্ত এবং রক্তের উপাদান বাহিত হয়ে মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের হেমাটোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মাসুদা বেগম বলছেন, রক্ত পরিসঞ্চালনের মাধ্যমে অনেক সময় হেপাটাইটিস-সিতে আক্রান্ত হতে পারেন। ফলে এখন রক্ত দেয়ার সময় হেপাটাইটিস বি, সি পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।

‘অনেক সময়েই আগে কোন লক্ষণ-উপসর্গ দেখা যায় না। কিন্তু রক্ত পরীক্ষার পরেই হেপাটাইটিস-সি ধরা পড়ে।’ তিনি বলছেন।

যেভাবে হেপাটাইটিস সি-তে আক্রান্ত হতে পারেন

-স্ক্রিনিং ছাড়া রক্ত-রক্তজাত সামগ্রী পরিসঞ্চালন

-একই ইনজেকশন বহুবার ব্যবহার প্লাজমা

-সার্জারির সময়

-নাক-কান ছিদ্র করার সময়েও রক্তের সংস্পর্শে এসে ভাইরাসটি শরীরে প্রবেশ করতে পারে।

-মাদক নেয়া

-অরক্ষিত যৌনমিলন

-সমকামিতা

-শিশুর জন্মের সময় মায়ের হেপাটাইটিস থাকা

-এইচআইভির রোগী

-কারাগারে থাকা ব্যক্তিরা

-ট্যাটু করার মাধ্যমে

-বিশ্বে এখন মদ্যপান জনিত কারণের পরেই হেপাটাইটিস সি ভাইরাসের কারণে
-লিভার সিরোসিস রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা বেশি ঘটছে।

অধ্যাপক ডা. মাসুদা বেগম বলছেন, ‘বি ও সি ভাইরাস রক্তে সংক্রমণের পর একটা উইন্ডো পিরিয়ড থাকে ২ থেকে ৬ মাস। এ সময়ে সাধারণ রক্ত পরীক্ষায় এ ভাইরাস ধরা পড়ে না। এ সময় কেউ যদি রক্ত আদান-প্রদান করেন তাহলে অগোচরেই ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে পড়ে। এটি নিরূপণে ডিএনএ ভাইরাল মার্কার বা এইচভিসি টোটাল টেস্ট প্রয়োজন হয়। এটা একটা প্রাণঘাতী রোগ যা নির্মূল করতে চাইলে নিরাপদ রক্ত সঞ্চালনের কোনো বিকল্প কোনো কিছু নেই।’

হেপাটাইটিস সি’র লক্ষণ ও উপসর্গ

হেপাটাইটিস সিতে আক্রান্ত হওয়ার সাথে সাথে কোন উপসর্গ দেখা দেয় না। অনেক সময় লক্ষণ বুঝতে আট-দশ বছর পার হয়ে যায়। ততদিনে শরীরের মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যায়।

তবে যেসব উপসর্গ দেখা দিলে অবশ্যই অন্যান্য পরীক্ষার পাশাপাশি হেপাটাইটিস পরীক্ষা করাতে হবে, সেগুলো হলো :

-জ্বর

-দুর্বলতা ও অবসাদ

-খাবারে অরুচি

-বমিবমি ভাব

-ক্লান্তি বোধ হওয়া

-জন্ডিস হওয়া, পেটে পানি আসা

হেপাটাইটিস সি’র চিকিৎসা

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, হেপাটাইটিসে আক্রান্ত হওয়ার পর অনেক সময় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায় অনেকে এমনিতেও সুস্থ হয়ে ওঠেন। তবে অনেক দিন আক্রান্ত থাকলে চিকিৎসার দরকার হয়।

ন্যাশনাল লিভার ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আলী, ‘ইদানীং হেপাটাইটিস সি রোগের চিকিৎসায় বেশ কিছু ভালো ওষুধ তৈরি হয়েছে। সেগুলো মুখেও খাওয়া যায়। এসব ওষুধ দিয়ে ৮০ থেকে ৯০ ভাগ ক্ষেত্রেই কার্যকরী প্রমাণিত হচ্ছে।’

তিনি জানান, প্রাথমিক পর্যায়ে রোগটি শনাক্ত হলেও তো খুবই ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। এমনকি সিরোসিসের প্রাথমিক দিকেও ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। তবে বেশি দেরি হয়ে গেলে বা ক্যান্সার হয়ে গেলে তখন এটি আর খুব বেশি কাজ করে না।

তবে এসব ওষুধ বেশ ব্যয়বহুল। যেমন- তিন মাসের ওষুধের পেছনে ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা খরচ হয়ে যায়। এক্ষেত্রে লিভার ফাউন্ডেশনের মতো বেশ কিছু সংস্থা সহায়তা করে।

অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আলী বলছেন, বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে লিভার-হেপাটাইটিস জাতীয় রোগে জন্ডিস মনে করে অনেকে কবিরাজ, ঝাড়ফুঁক, গ্রাম্য চিকিৎসা করান। এসব কাণ্ডের ফলেও অনেকের শরীরের মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যায়। তারা যখন চিকিৎসকের কাছে আসেন, তখন আর চিকিৎসকদের কিছু করার থাকে না।

হেপাটাইটিস-বির টিকা বেশ কার্যকরী বলে প্রমাণিত হলেও এখনো হেপাটাইটিস-সির কোনো টিকা আবিষ্কার করা সম্ভব হয়নি।

আবার ঢাকার বাইরে বেশিরভাগ জেলাতেই হেপাটাইটিস সি পরীক্ষা-নিরীক্ষা বা যকৃতের চিকিৎসার ভালো ব্যবস্থা নেই।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের হেপাটাইটিস সি রোগে চিকিৎসার সুযোগ এখনো অনেক সীমিত। বিশ্বের মোট আক্রান্তদের মাত্র ১৯ শতাংশ এখন চিকিৎসা সুবিধা পাচ্ছেন।

ফলে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসার চেয়ে বরং রোগটি প্রতিকারে মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আলী বলছেন, যেহেতু কোনো টিকা নেই, তাই ব্যক্তিগত সুরক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণ করাই হচ্ছে সবচেয়ে উত্তম। এজন্য তিনি যেসব পরামর্শ দিচ্ছেন :

-একই সিরিঞ্জ বারবার ব্যবহার না করা

-অন্যের ব্যবহার করা কোন সুই ব্যবহার না করা

-পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়া বা অচেনা উৎস থেকে রক্ত গ্রহণ না করা

-যেকোনো সরঞ্জাম ব্যবহার করার সময় সুরক্ষা গ্রহণ করা

-বছরে কমপক্ষে দুইবার রক্তের পরীক্ষা করা, যাতে আক্রান্ত হলে শুরুতেই চিকিৎসা করা যায়

-আক্রান্ত হলে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখা

হেপাটাইটিস সি প্রতিরোধে কি করছে বাংলাদেশের সরকার
২০৩০ সালের মধ্যে হেপাটাইটিস প্রতিরোধ ও নির্মূলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বেশকিছু লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।

বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদফতরের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোলের সাবেক পরিচালক ডা: সানিয়া তাহমিনা বিবিসি বাংলাকে বলছেন, হেপাটাইটিস প্রতিরোধে বেশ কিছু কর্মসূচী রয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের।

‘হেপাটাইটিস বি’র টিকা সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু পোলিও বা হামের মতো জাতীয় পর্যায়ে টিকা কার্যক্রমের মতো কোন কর্মসূচি শুরু হয়নি।’

হেপাটাইটিস-সি ভাইরাসের যেহেতু কোনো টিকা এখনো আবিষ্কার হয়নি, তাই এক্ষেত্রে রোগ প্রতিরোধে সতর্কতা এবং নিয়মিত রক্ত পরীক্ষার পরামর্শ দিচ্ছেন এই বিশেষজ্ঞ।

সূত্র : বিবিসি

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Dokhinerkhobor.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com