নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ চুরির অপবাদ দিয়ে জিসান নামে ১১ বছর বয়সী এক শিক্ষার্থীকে দুই হাত বেধে নির্মমভাবে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। এসময় মাথা দেয়ালের সাথে ঠুকে ঠুকে আঘাত করায় বমি এবং প্রসাব-পায়খানা করে দেয় শিশুটি। গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে নগরীর ২৪ নম্বর ওয়ার্ডস্থ ধানগবেষণা সড়ক এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। মুমূর্ষু অবস্থায় জিসানকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু সার্জারি ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। সে ওই এলাকার আক্কেল আলী মিয়ার দোকান সংলগ্ন হারুনের বাসার ভাড়াটিয়া দিনমজুর শাহজাহান মিয়ার ছেলে এবং সাগরদী সরকারি প্রাইমারি স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র।
এদিকে ঘটনার পরে স্থানীয় কাউন্সিলরের কাছে বিচার দেয়া হলেও তিনি কোন প্রকার সহযোগিতা না করে বরং নির্যাতনের শিকার শিশুটিকে জেলে দেওয়ার হুমকি দেন বলে অভিযোগ শিশুর মা হাসিনা বেগমের। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ২৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শরীফ মো. আনিসুর রহমান। এমনকি শিশুটিকে নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত ব্যবসায়ী পারভেজও। নির্যাতনের শিকার জিসান জানায়, ‘দোকানী পারভেজ তার দোকান থেকে টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে জিসানকে বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায়। পরে তার দুটি হাত বেধে শূন্যে তুলে আছাড় মারেন। পরে দেয়ালের সাথে তার মাথা ঠুকে ঠুকে নির্মমভাবে নির্যাতন করে। এতে ঘটনাস্থলেই শিশুটি বমি করে মল-মূত্র ত্যাগ করে অসুস্থ হয়ে পড়ে।
এদিকে জিসান অসুস্থ হয়ে পড়লে তার বড় বোন অন্তরা বিষয়টি মুঠোফোনের মাধ্যমে তাঁর মাকে অবহিত করে। পরে তিনি এসে শিশুকে উদ্ধারের পাশাপাশি ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ দেয়ার পরে শিশুটিকে শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করে দেন। শিশুর মা হাসিনা বেগম অভিযোগ করে বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে কাউন্সিলরের কাছে অভিযোগ দিলেও তিনি কোন গুরুত্ব দেননি। বরং উল্টো আমাকে বলেন জিসান অপ্রাপ্ত বয়স্ক না হলে তাকে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দিতেন। তার কাছ থেকে বিচারের আশ্বাস না পেয়ে সন্তানকে হাসপাতালে ভর্তি করি। এমনকি নির্যাতনকারী পারভেজ শিশুটির চিকিৎসা কিংবা খোঁজ নেওয়ার চেষ্টাও করেননি বলে অভিযোগ জিসানের মায়ের।
এ প্রসঙ্গে ২৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শরীফ আনিসুর রহমান বলেন, ‘ঘটনাটি আমি শুনেছি। তবে শিশুর মা যে অভিযোগ করেছেন সেটা সঠিক নয়। আমি পারভেজকে ডেকে শিশুটির চিকিৎসার যাবতীয় খরচ বহনের জন্য নির্দেশ দিয়েছি। তাছাড়া শিশুটি অসুস্থতার কারণে এ ঘটনার মীমাংসা করা সম্ভব হয়নি বলে দাবি কাউন্সিলরের। এদিকে অভিযুক্ত ধানগবেষণা সড়কের বাসিন্দা মোহাম্মদ ফারুকের পুত্র মুদি দোকানী পারভেজ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘জিসান আমার দোকান থেকে ৪৩ হাজার টাকা চুরি করেছে। ওর কাছ থেকে এবং ওর মামার কাছ থেকে কিছু টাকা উদ্ধারও করেছি। বাকি টাকা এখনো পাওয়া যায়নি। যে টাকা পেয়েছি সেটা উদ্ধার করে নিয়ে এসেছি। এসময় তাকে মারধর বা নির্যাতন করা হয়নি বলে দাবি তার।
Leave a Reply