ভারতের সঙ্গে আমাদের রক্তের সম্পর্ক এবং চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেছেন, ‘সম্প্রতি চীন আমাদের দেশে ৮ হাজারেরও বেশি পণ্য শুল্কমুক্ত প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে। এটা আমাদের জন্য বড় পাওয়া। এ নিয়ে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না।’
আজ শনিবার সকালে মেহেরপুরের মুজিবনগর স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আব্দুল মোমেন বলেন, ‘প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে আমাদের নাড়ির সম্পর্ক। স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের সহযোগিতা রক্তের সম্পর্ক সৃষ্টি করেছে। আগামী বছর আমরা স্বাধীনতার ৫০ বছরপূর্তি উৎসব পালন করব। আমাদের বিজয় ভারতের বিজয়। আমাদের উন্নয়ন ভারতের উন্নয়ন। ভারতের সঙ্গে যেমন আমাদের বাণিজ্যিক সম্পর্ক আছে, তেমনি চীনের সঙ্গেও আছে। ইতিমধ্যে চীন আমাদের দেশে বেশ কয়েকটি প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে। এক্ষেত্রে চীন-ভারত উত্তেজনায় বাংলাদেশ ভারতের সম্পর্কে কোনো প্রভাব পড়বে না।’
বঙ্গবন্ধুর বাকি খুনিদের দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর খুনিরা যারা এখনও দেশের বাইরে পলাতক আছে, তাদের দেশে ফিরিয়ে এনে এই মুজিববর্ষেই বিচার করা হবে ইনশাল্লাহ। এজন্য আমরা জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। যেহেতু এটা অন্য দেশের ওপর নির্ভর করে, তাই একটু বিলম্ব হচ্ছে। আমরা সব প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এছাড়া সব প্রবাসী বাঙালির কাছে অনুরোধ, আপনারা যদি বঙ্গবন্ধুর কোনো ঘাতকের সন্ধান পান, তবে আমাদের তথ্য দিন। আমরা দেশে এনে বিচারের ব্যবস্থা করব।’
তিনি বলেন, ‘চীন ও ভারতের করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে আমাদের দেশের আইসিডিডিআরবি কাজ করছে। কোন পর্যায়ে কীভাবে ট্রায়াল হবে এটি তাদের ব্যাপার। কিন্তু কেউ কেউ এটা রাজনৈতিক ইস্যু বানানোর চেষ্টা করছেন। ভারত ও পাকিস্তান বিভিন্ন দেশের সঙ্গে কোলাবরেশন করে ভ্যাকসিনের ব্যাপারে কাজ করছে। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য আমরা এক্ষেত্রে পিছিয়ে আছি। তবে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নকে টাকা দেওয়ার মাধ্যমে দেশে ভ্যাকসিন আনার চেষ্টা করছে সরকার।’
মেহেরপুরে স্থলবন্দর স্থাপনের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আপনারা এটা নিয়ে আবেদন করেন, ভয়েস রেইজ করেন। তাহলে এ বিষয়ে আলোচনা করে দেখা যাবে।’
এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সস্ত্রীক মুজিবনগর পৌঁছালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উসমান গনি ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন—মেহেরপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জয়নাল আবেদীন, জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ মুনসুর আলম খান, পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলী, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদুল আলম, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম শাহীন, পাবলিক প্রসিকিউটর পল্লব ভাট্টাচার্য, মুজিবনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমাম হোসেন মিলু, মুজিবনগর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম। পরে তিনি মুজিবনগর স্মৃতি কমপ্লেক্সের বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেহেরপুর ত্যাগ করেন।
Leave a Reply