একটি, দুটি কিংবা তিনটি নয়। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখ গুনে গুনে ৮টি গোল দিয়েছে লিওনেল মেসির বার্সেলোনাকে। বিপরীতে বায়ার্ন গোল হজম করেছে মাত্র ২টি। তাও একটি গোল হয়েছে আত্মঘাতী। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে এর আগে কখনো বার্সাকে ৫ গোলের বেশি ব্যবধানে হারাতে পারেনি বায়ার্ন।
লিসবনে আজ শনিবার বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় শুরু হওয়া এই ম্যাচের শুরু থেকেই শাসন করে খেলে বায়ার্ন। গোলের শুরুটা করেন টমাস মুলার আর শেষটা করেন ফিলিপে কোতিনহো। দুজনের পা থেকেই আসে জোড়া গোল। একটি করে গোল দিয়েছেন পেরিসিচ, গ্যানাবরি, কিমিখ ও লোভানডফস্কি।
ম্যাচ শুরুর ৪ মিনিট না যেতেই বায়ার্নের হয়ে গোলের খাতা খোলেন মুলার। বাঁ দিক থেকে পাওয়া ক্রস সুনিপুণ দক্ষতায় গ্রহণ করে ডি বক্সে থাকা লোভানডফস্কিকে দেন মুলার। লোভানডফস্কি আলতো শটে মুলারের দিকে পুনরায় বাড়িয়ে দিলে দ্রুত বেগে ডি বক্সে ঢুকে দুর্দান্ত শটে গোলের খাতা খোলেন। এই যে শুরু হলো বায়ার্নের গোল বন্যা, তা থেমেছে শেষ বাঁশি বাজার আগ পর্যন্ত।
১ গোলে এগিয়ে গেলেও বায়ার্নের ভুলেই সমতায় ফেরে বার্সা। ৭ মিনিটের মাথায় ডি বক্সে বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজেদের জালেই বল জড়ান আলাবা। এই গোল যেনো বার্সার জন্য যেনো দুর্ভাগ্যই বয়ে আনে। ২২ মিনিটের মাথায় আবার এগিয়ে যায় বায়ার্ন। জিনাব্রির কাছ থেকে বল পেয়ে দুর্দান্ত শটে বায়ার্নকে এগিয়ে দেন পেরিসিচ। এর ১০ মিনিট পরেই কিমিনিচের সহায়তায় দ্বিতীয়বারের মতো বার্সার বল জড়ান মুলার।
৪-১ গোলের ব্যবধান নিয়ে বিরতিতে যায় দুইদল। ফিরে আরও ৪টি গোল দেয় বায়ার্ন। বিপরীতে বার্সার হয় সুয়ারেজ দেন একটি। বিরতির পর মাঠে এসে সুয়ারেজের গোলে বার্সা ব্যবধান কমায়। ৫৭ মিনিটের সময় ডি বক্সে অসাধারণ কারিকুরি দেখিয়ে বায়ার্নের জালে বল জড়ান এই উরুগুইয়ান ফরোয়ার্ড।
সুয়ারেজ গোল দেওয়ার ৬ মিনিট না পেরোতেই ম্যাচের ৬৩ মিনিটের সময় ডেভিসের দেওয়া দারণ পাসে নিজের হয়ে ১ম ও দলের হয়ে ৫ম গোলটি করেন কিমিনিচ। এরপরের গল্পটা স্বপ্নেও দেখতে চাইবে না বার্সা। গ্যানাবরির বদলি হয়ে ৭৫ মিনিটের সময় মাঠে আসেন কোতিনহো। তিনি বার্সা থেকে লোনে খেলছেন বায়ার্নে। ১৫ মিনিটে তিনি যেনো জড় তোলেন, ২টি গোল দেওয়ার সঙ্গে ১টি গোলে সহায়তাও করেছেন।
মাঠে এসেই দারুণ খেলতে থাকা কোতিনহো ৮২ মিনিটের সময় লেভানডফস্কিকে দিয়ে গোল করান। এরপর তিন মিনিট না যেতেই বার্সায় নিজেকে হারিয়ে খুঁজতে থাকা কোতিনহো টমাস মুলার সহায়তায় গোলের খাতা খোলেন। এর চার মিনিট পর আবারো কোতিনহো। ম্যাচের একদম অন্তিম সময়ে হারনান্দেজের সহয়তায় নিজের ২য় ও দলের হয়ে ৮ম গোলটি করে এই ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার।
শেষ পর্যন্ত ৮-২ গোলের ব্যবধানে হেরে করুণ বিদায় নেয় বার্সা। ম্যানসিটি-লিও ম্যাচে জয়ী দলের বিপক্ষে সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে বায়ার্ন। এর আগের ম্যাচে নাপোলির বিপক্ষে দুর্দান্ত খেললেও এই ম্যাচে মেসি ছিলেন নিজের ছায়া হয়ে। পুরো ম্যাচে খেলে শট নিতে পেরেছেন মাত্র তিনটি। তার মধ্যে একটি শটও খুঁজে পায়নি বায়ার্নের জাল। তবে শুধু মেসি নয় বার্সা পুরো দলই যেনো খেই হারিয়ে ফেলেছিল। মুলারদের গতির কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ ছাড়া কোনো উপায় ছিলো না মেসিদের কাছে।
Leave a Reply