বাংলাদেশে যারা গণতান্ত্রিক দেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন তারা কারাবন্দি খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রতিনিয়ত বলে যাচ্ছেন দাবি করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, যারা ক্ষমতায় আছে তাদের এই ভাষা বোঝার ক্ষমতা আছে কি না এ নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে খালেদা জিয়া মুক্তি পরিষদ আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশ করে খসরু বলেন, তারা তো আপনাদের মতো গালিগালাজ করে কথা বলবে না। তারা ভদ্র ভাষায় কথা বলে। যেমন তারা বলে আমরা চাই সকল রাজনৈতিক দল সভা সমাবেশ যাতে পালন করতে পারে। তার মানে এখানে এই স্বাধীনতা এখন আর নাই। ‘আমরা চাই বাংলাদেশে একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন হোক। তার মানে আজকে বাংলাদেশে নিরপেক্ষ নির্বাচনের মতো অবস্থা নাই। আমরা চাই একটা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হোক। অর্থাৎ বাংলাদেশে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নাই। তারা বলছে বেগম খালেদা জিয়াকে জেলে পাঠানোয় আমরা শঙ্কিত, আমরা এটা পর্যবেক্ষণ করছি। অর্থাৎ কেউ যদি এমন মন্তব্য করে তাহলে রায় নিয়ে সন্দেহ পোষণ করছে। এর বেশি ভদ্র ভাষায় কিছু তো তাদের বলার নাই। কিন্তু এই ভাষা তো তারা বুঝতে পারেন না।’ প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেয়ার পর অনেক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন আপনার প্রতিক্রিয়া কি? আমি বলি এটা কোনো বক্তব্য হয় না। আমি কি প্রতিক্রিয়া দেব। কেউ যদি বক্তৃতা না দিয়ে গালিগালাজ করে তার প্রতিক্রিয়ায় তো আমাকে গালিগালাজ করতে হবে। সেটা তো আমরা করতে পারব না। সাবেক এই বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে যে ঘটনাগুলো ঘটছে, নির্বাচন তো দূরের কথা আমরা যে রাজনৈতিক সাংবিধানিক গণতান্ত্রিক অধিকারগুলো পাব সেটার এখন লেশমাত্রও নেই। আমরা শান্তিপূর্ণ পথে আন্দোলন করব। ওই পথ নয় যেটা একদলীয় পথ, একনায়কতন্ত্রের পথ, ফ্যাসিজমের পথ, অগণতান্ত্রিক পথ। আন্দোলনের দুটি পথ রয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, আমরা বেছে নিয়েছি গণতান্ত্রিক পথ। কিন্তু সেই পথেও চলতে পারছি না। সেই পথ আজকে অবরুদ্ধ করে দিয়েছে। সেই পথ বাধাগ্রস্থ করছে। সেই পথে আজকে লাঠিপেটা হচ্ছে। নির্বিচার নির্যাতন অহরহ চলছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই প্রধানমন্ত্রী জনসভা করছেন এবং জনগণকে নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার জন্য শপথ গ্রহণ করাচ্ছেন দাবি করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ভোট হচ্ছে একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়। স্বামী জানে না স্ত্রী কোথায় ভোট দিবে। স্ত্রী জানে না স্বামী কোথায় ভোট দিবে। এটা গণতন্ত্রের নীতি, নৈতিকতার ব্যাপার। সংবিধান তাই বলে। মৌলিক নাগরিক অধিকার তাই বলে। ‘আজকের প্রধানমন্ত্রী জনগণের সেই অধিকার লঙ্ঘন করছেন। উনি জনগণকে ডেকে শপথ করাচ্ছেন। এটা সম্পূর্ণরুপে নাগরিক স্বাধীনতা লঙ্ঘন। সাংবিধানিক স্বাধীনতার লঙ্ঘন। এই অবস্থায় আজ দেশ চলে গেছে।’ আমির খসরু বলেন, ‘আমাদের ঘরের ভিতর সভা করতে অসুবিধা হচ্ছে। আমরা মানববন্ধন করতে বাধাগ্রস্থ হচ্ছি। আমরা লিফলেট বিলি করতে বাধাগ্রস্থ হচ্ছি। শান্তিপূর্ণ কোনো কর্মসূচি বিএনপি করতে পারছে না। কালো পতাকা প্রদর্শন করছি কোথায়? ফুটপাতে, রাস্তায়ও না। সেখানে জলকামান থেকে শুরু করে যে আক্রমণ করা হয়েছে, লাঠিপেটা ও গ্রেফতার করা হয়েছে।’ বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, সুতরাং তাদের (সরকার) অবৈধ পথে চলতে হচ্ছে। অনির্বাচিত পথে চলতে হচ্ছে। অগণতান্ত্রিক পথে চলতে হচ্ছে। ফ্যাসিজমের পথে চলতে হচ্ছে। একদলীয় শাসনের পথে চলতে হচ্ছে। সেই পথ বাংলাদেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাবে। তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের নির্দেশে আমরা যে পথে চলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা সেই পথে চলব। নিয়মতান্ত্রিক, শান্তিপূর্ণ, গণতান্ত্রিক, জনগণের চিন্তাশীল ভাবনার প্রতিফলন, আমাদের পথ হবে সেই পথ। সেই পথই হবে বিজয়ের পথ।
Leave a Reply