দখিনের খবর ডেস্ক ॥ বরিশালের বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় বরিশাল নগরসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলার নিম্নাঞ্চল পানিতে প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন ওইসব এলাকার মানুষ ও গবাদি পশু। ফসলি জমি, পুকুর তলিয়ে গিয়ে লাখ লাখ টাকার মাছ ও ফসলের ক্ষতি হয়েছে। জেলার বিভিন্ন স্থানে বাঁধ ও রাস্তাঘাট ভেঙে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে পূর্ণিমা ও অমাবস্যার জোয়ারে উজান থেকে নেমে আসা জলরাশিতে নদীবেষ্টিত হিজলা ও মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার মেঘনা, তেতুলিয়া, কালাবদর, মাসকাটাসহ বিভিন্ন নদীর পানি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে নিচু এলাকার হাট-বাজার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, রাস্তা-ঘাট, বাড়িঘর পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি বৃদ্ধির ফলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী। মেঘনার তীরবর্তী উলানিয়া ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান লিটন জানান, পানিবন্দি মানুষদের বিভিন্ন নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং সংসদ সদস্য পংকজ নাথ এর পক্ষ থেকে তাদের জন্য বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এদিকে নদী তীরবর্তী বরিশাল নগরের কলোনি ও সড়কগুলো জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় জনজীবনে স্বাভাবিক কার্যক্রম কিছুটা ব্যহত হচ্ছে। সেই সাথে পানির ¯্রােতের গতিবেগ প্রবল থাকায় বরিশান সদর উপজেলার লামচরি, বাবুগঞ্জ উপজেলার আগরপুর, রহমতপুর, মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা সদর, শ্রীপুর, চরগোপালপুর, উলানিয়াসহ বিভিন্ন উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নদী তীরবর্তী মানুষের মাঝে ভাঙন আতঙ্ক বিরাজ করছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড বরিশাল কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০ আগস্ট দুপুর ১২ টা পর্যন্ত সর্বশেষ হিসেব বরিশালের কীর্তনখোলা নদীর পানি ডেঞ্জার লেভেলের ৩০ সেন্টিমিটার, হিজলার ধর্মগঞ্জ নদীর পানি ডেঞ্জার লেভেলের ১৮ সেন্টিমিটার, মির্জাগঞ্জের বুড়িশ্বর বা পায়রা নদীর পানি ডেঞ্জার লেভেলের ৬৪ সেন্টিমিটার, আমতলীর বুড়িশ্বর বা পায়রা নদীর পানি ডেঞ্জার লেভেলের ৩৭ সেন্টিমিটার, পাথরঘাটার বিষখালী নদীর পানি ডেঞ্জার লেভেলের ৫০ সেন্টিমিটার, বরগুনার বিষখালী নদীর পানি ডেঞ্জার লেভেলের ৫৭ সেন্টিমিটার ও ভোলা খেয়াঘাট সংলগ্ন তেতুলিয়া নদীর পানি ডেঞ্জার লেভেলের ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গতকালও বরিশালসহ দক্ষিণের জেলাগুলোর বিভিন্ন স্থানে থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছে। গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে রাস্তাঘাট অনেকটাই কর্দমাক্ত হয়ে গেছে। বিশেষ করে নগরের ভাঙা রাস্তার খানা-খন্দগুলো পানি জমে যানবাহন ও মানুষের স্বাভাবিক চলাচল ব্যহত হচ্ছে।
Leave a Reply