বাবুগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার শত শত বসত বাড়ি ও ফসলী জমি নদীগর্ভে বিলিন হয়ে যায়। নদী ভাঙন রোধে স্বল্প খরচে অল্প সময়ে বাঁশের বেড়া প্রকল্পের কাজ শুরু করা হয়। এতে পরিবর্তন হওয়ার কথা নদীর গতিপথ, কমবে ভাঙন, বাড়বে ফসলী জমি। সরকারের এমন উদ্যোগে খুশি নদী পারের হাজার হাজার পরিবার। তবে অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ শেষ না করার কারণে নদীর তীব্র স্রোতে বাঁশের বেড়া ভেসে গেছে।
প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে বাবুগঞ্জ উপজেলায় ২০ টি পয়েন্টে ভয়াবহ নদী ভাঙন শুরু হয়। এতে শত শত বসতবাড়ি ও হাজার হাজার বিঘা ফসলী জমি নদীগর্ভে তলিয়ে যায়। সবচেয়ে ভাঙন কবলিত এলাকা উপজেলার দেহেরগতি ইউনিয়ন ও রহমতপুর ইউনিয়ন। এই এলাকা দুটিতে ভাঙনরোধে স্বল্প খরচে বাঁশের বেড়া দ্বারা বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেয় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়। এতে করে নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষের মধ্যে ভাঙনের ভয় দূর হয়। কিন্তু সরেজমিনে উপজেলার দেহেরগতি ইউনিয়নের দক্ষিণ পূর্ব রাকুদিয়া সুগন্ধা নদীর তীরে (সেতু ) এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে নদীতে বাঁশের বেড়া দেওয়া হলেও কাঠের বলি¬ দেওয়া হয়নি। নদীর পানি ও তীব্র স্রোতে বাঁশের বেড়া নদীতে ভেসে গেছে।
স্থানীয়রা জানান, প্রতিবছরই বন্যার সময় এই এলাকার প্রচুর জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়। এই প্রকল্পটি সঠিকভাবে এবং দ্রুত সময়ে সম্পন্ন না হওয়ায় আমাদের কোনো উপকারেই আসে নি। বরং সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। কাঠের বলি¬ না দেওয়ার কারণে বাঁধটি মজবুত হয়নি। বাঁশের বেড়া পানির স্রোতে ভেসে গেছে। এ ব্যাপারে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলার জন্য একাধিকবার ফোন করলেও নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। এ বিষয় বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী, বাবুগঞ্জ সার্কেল জাবেদ ইকবাল এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, গত বছর সারাদেশে নদী ভাঙ্গন কবলিত এলাকায়ই এমন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছিল । কাজটি পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে দেখভাল করেছেন ফরিদপুর নদী গবেষণা ইনিস্টিটিউট তাদের কাছে এর কোন তথ্য নেই। ফরিদপুর নদী গবেষণা ইনস্টিটিউট এর এক সূত্র জানায়, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধিনে এটি একটি পাইলট প্রকল্প ছিল। পরীক্ষামূলকভাবে এ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছিল । ২৫ ফুট লম্বা বাঁশের বেড়া ১৩ ফুট মাটির নিচে এবং ১২ ফুট মাটির উপরে থাকবে। এতে করে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়। যে কারণে ভাঙনের সৃষ্টি হবে না। বাবুগঞ্জ এলাকায় নদীভাঙনরোধে দেড় কিলোমিটার এলাকায় বাঁশের বেড়া প্রকল্পটিতে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৭৫ লাখ টাকা।
Leave a Reply