কক্সবাজারের টেকনাফের দুজনকে ‘ক্রসফায়ারে’ হত্যার অভিযোগে বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশের বিরুদ্ধে একদিনে আরও দুটি মামলা করা হয়েছে। নিহত নুর মোহাম্মদ টেকনাফ সদরের নাজিরপাড়ার বাসিন্দা এবং মো. আজিজ একই ইউনিয়নের ডেইলপাড়ার বাসিন্দা।
কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (টেকনাফ-৩) হেলাল উদ্দীনের আদালতে গতকাল সোমবার দুপুরে মামলা দুটি করা হয়। নিহত নুর মোহাম্মদের স্ত্রী লায়লা বেগম ও মো. আজিজের মা হালিমা খাতুন বাদী হয়ে এ দুই মামলার আবেদন করেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী নূর হোসেন নাহিদ মো. মোস্তফা জানান, দুটি মামলায় বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে
প্রধান করে ৩১ জনকে আসামি করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, ফৌজদারি মামলার এজাহার দুটি আমলে নিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া ওই ঘটনায় অন্য মামলা হয়েছিল কিনা, নিহত দুজনের ময়নাতদন্ত হয়েছিল কিনাÑ আগামী ৪ অক্টোবরের মধ্যে আদালতকে জানাতে টেকনাফ থানার ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নিহত নুর মোহাম্মদের মামলার বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন, গত বছরের ১৯ মার্চ বীজ ও সার আনতে কৃষি অফিসে গেলে সেখান থেকে কৃষি সরঞ্জাম ব্যবসায়ী নুর মোহাম্মদকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। পরে তার পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা দাবি করেন ওসি প্রদীপসহ অন্যরা। না দিলে তাকে ক্রসফায়ারে মারা হবে বলে হুমকিও দেওয়া হয়। তাই বাধ্য হয়ে বিভিন্নভাবে জোগাড় করে পাঁচ লাখ টাকা দেওয়া হয়। কিন্তু ২১ মার্চ রাতে স্ত্রী লায়লা বেগম নুর মোহাম্মদকে থানা থেকে বের করে মেরিন ড্রাইভ সড়কের রাজারছড়া এলাকায় নিয়ে যান। একপর্যায়ে নুর মোহাম্মদকে কয়েকজন পুলিশ তুলে ঝাউবাগানে নিয়ে গিয়ে গুলি করে হত্যা করে।
অন্যদিকে নিহত মো. আজিজের মামলার বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন, ২০১৯ সালের ১৮ অক্টোবর টেকনাফ থানার একদল পুলিশ মো. আজিজ, নুর হাসান ও আবুল খায়ের নামের তিনজনকে ধরে নিয়ে যান। পরে আজিজের পরিবার থেকে ২০ লাখ টাকা দাবি করেন ওসি প্রদীপসহ অন্যরা। না দিলে আজিজকে ক্রসফায়ারে হত্যা করা হবে বলে হুমকিও দেন। এতে নিরুপায় হয়ে বিভিন্নভাবে ৫০ হাজার পুলিশ দেওয়া হয়। কিন্তু ১৯ অক্টোবর রাতে টেকনাফের মহেশখালিয়াপাড়া নদীঘাট এলাকায় আজিজকে ক্রসফায়ারে হত্যা করা হয়।
Leave a Reply