নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বরিশালসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলে তিন স্তরে ভোটের প্রস্তুতি নিতে দলের নেতৃত্বস্থানীয়দের পরামর্শ দিয়েছেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাধারণ সম্পাদক মোঃ মিজানুর রহমান।
তারমতে, অভ্যন্তরীণ কোন্দল মিটিয়ে দলকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করা, স্বচ্ছ ও দক্ষ প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়া এবং সরকারের নয় বছরের উন্নয়নের ধারাবাহিকতাকে জনগণের সামনে সঠিকভাবে তুলে ধরে দলীয়ভাবে কাজ শুরু করলেই সর্বত্র নৌকায় জোয়ার আসবে। বরিশাল-৩ (মুলাদী ও বাবুগঞ্জ) আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী কেন্দ্রীয় যুবলীগের সহসাধারণ সম্পাদক মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, অতীতের নির্বাচনের তুলনায় এবারের নির্বাচন পুরোটাই ভিন্ন। বিএনপির শীর্ষ নেতারা মুখে যাই বলুক না কেন তারা নির্বাচনে অশংগ্রহণের জন্য ইতোমধ্যে কৌশলে মাঠপর্যায়ে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। তাই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বাছাইয়ে বিশেষভাবে যতœশীল ও সচেতন হতে হবে। সেইসাথে দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল মেটানো যেমন জরুরি, তেমনি প্রয়োজন সরকারের সাফল্য প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ সারাদেশের জনগণের সামনে সঠিকভাবে তুলে ধরা। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য আগামি নির্বাচনেও নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত করতে জনগণের দোরগোড়ায় যাওয়ার বিকল্প নেই বলেও তিনি (মিজানুর রহমান) মনে করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মিজানুর রহমান গত একবছর থেকে সরকারের উল্লেখযোগ্য অর্জনের মধ্যে সমুদ্র বিজয়, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু, বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা সত্ত্বেও দেশে প্রবৃদ্ধির হার বৃদ্ধি, বেকারত্ব দূর করা, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্তির দিকে দেশ এগিয়ে যাওয়া, মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তর, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, বিনামূল্যে বই বিতরণ, উপবৃত্তি প্রদান, মাতৃত্বকালীন ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, বয়স্ক ভাতাসহ সরকারের নানা উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে ধরে হ্যান্ডবেল বিলির মাধ্যমে নির্বাচনী এলাকার প্রতিটি বাড়িতে ছুটে চলছেন। এছাড়াও তিনি (মিজানুর রহমান) নেতাকর্মী ও ভোটারদের নিয়ে বর্ধিত সভা, কর্মিসভা, উঠান বৈঠক, পথসভার মাধ্যমে দলের অভ্যন্তরীন কোন্দল নিরসন করে আওয়ামী লীগের অর্জনগুলো সর্বত্র ছড়িয়ে দিয়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। দলের শৃঙ্খলা ও ঐক্য প্রতিষ্ঠা ॥ বরিশালের ছয়টি নির্বাচনী এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অধিকাংশ আসনে দলের তীব্র কোন্দল এবং নেতাকর্মীদের ক্ষমতার দম্ভ ও অসংযত আচরণ দলকে অনেকটাই পিছিয়ে দিচ্ছে। দলের একাধিক শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন, ওইসব নির্বাচনী আসনে ধারা ও উপ-ধারায় রাজনীতি চলছে। পদ-পদবি ধরে রাখতে দলের দুর্দীনের নেতাকর্মীদের কোণঠাসা করে সুবিধাভোগী হাইব্রীডদের সর্বত্র অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। ফলে অনেকটাই নিস্কিয় হয়ে পরেছেন দলের এক সময়ের ত্যাগী ও নির্যাতিত নেতাকর্মীরা। কোথাও সুবিধাবঞ্চিত থাকা কিংবা ব্যক্তিগতস্বার্থ থেকে সৃষ্ট এসব বিরোধ ক্রমেই প্রকাশ্যে ধারণ করেছে। ফলে আগামি জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রতিটি আসনেই জনপ্রিয়তার চেয়ে দলীয় কোন্দল মেটানো এখন জরুরি হয়ে পরেছে। স্বচ্ছ প্রার্থী নিশ্চিত করা ॥ নির্বাচনে জয় লাভের জন্য স্বচ্ছ ভাবমূর্তি, রাজনৈতিক ঐতিহ্য, নেতাকর্মীদের সাথে সদ্ভাব, জনসস্পৃক্ততা রয়েছে এমন রাজনীতিবিদদের মধ্যথেকে প্রার্থী বাছাই করতে হবে মনে করছেন দলের শীর্ষ নেতা থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাসিম এমপি বলেন, আওয়ামী লীগে অগণিত নেতাকর্মী। দলে কারও অবদানই কম নয়। তৃণমূলের মতামতের ভিত্তিতে চুলচেরা বিশ্লেষণ করে মনোনয়ন বোর্ডের সিদ্ধান্তেই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রতিটি আসনে মনোনয়ন দেবেন। সরকারের উন্নয়ন প্রচার ॥ আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের দাবি, সরকারের প্রতিটি উন্নয়ন দৃশ্যমান। উন্নয়ন সর্বত্র সমানভাবে হয়েছে। কিন্তু অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে তা সঠিকভাবে প্রচার করা হচ্ছেনা। দলের সভাপতি শেখ হাসিনা বারবার সরকারের উন্নয়ন চিত্র জনগণের সামনে তুলে ধরার আহবান জানালেও নেতৃত্বস্থানীয়রা নিজেদের আখের গোঁছাতে ব্যস্ত থাকায় প্রচারে আওয়ামী লীগ অনেকটাই পিছিয়ে আছে।
Leave a Reply