নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল নদী বন্দরে নোঙর করা যাত্রীবাহী এমভি পারাবত-১১ লঞ্চে নিহত নারীর সহযাত্রী ‘কামরুল’ নামে কেবিন ভাড়া নিয়েছিলেন। আর যে মুঠোফােন নম্বর দিয়েছেন সেটিও ছিল কুমিল্লার এক ব্যক্তির। অর্থাৎ খুন করে পালিয়ে যাওয়ার জন্য যতগুলো পথ সহজ করা দরকার ছিল তা করেছিলেন কথিত সেই ‘কামরুল’।
ইতিমধ্যে নারীর সাথে আসা ‘কামরুল’র ভিডিও ফুটেজ পুলিশের হাতে এসে পড়েছে। দেশের সমস্ত থানায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে সন্দেহভাজন কামরুলের ছবি। পুলিশ জানিয়েছে, অল্প সময়ের মধ্যে ধরা পরে যাবেন সেই ‘কামরুল’। কিন্তু লঞ্চে মিথ্যা পরিচয় দিয়ে ওঠা ‘কামরুল’ আসলে কে সেই পরিচয়টি খুঁজে বের করেত মুখিয়ে আছেন বরিশাল মেট্রো পুলিশ। ওদিকে নৌ থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন জানিয়েছেন, আশা করছি আজকের মধ্যে নারীর পরিচয় আমরা পেয়ে যাবো।একজন ঢাকা থেকে বরিশালে আসছেন শনাক্তকরণের জন্য। যদি তার স্বজন কেউ হয়ে থাকে তাহলে নিহতের পরিচয় এবং হত্যাকা-ের ক্লু পাওয়া যেতে পারে।
ওদিকে নারীর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছে। বরিশাল সদর নৌ থানার এসআই অলক চৌধুরী বাদী হয়ে সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাতে কোতয়ালী মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে। মামলা দায়েরের বিষয়টি আজ (১৫ সেপ্টেম্বর) মঙ্গলবার সকালে নিশ্চিত করেছেন নৌ থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন। তিনি জানান, প্রাথমিক আলামতে ধারনা করা যাচ্ছে ওই নারী হত্যাকা-ের শিকার। তার গলায় শ্বাসরোধের চিহ্ন রয়েছে। ওড়না পাওয়া যাচ্ছে না। খুনের শিকার নারীর সাথে থাকা সকল জিনিসপত্রও নিয়ে গেছে ঘাতক। যে কারনে পরিচয় শনাক্তকরনে বিলম্ব হচ্ছে। প্রসঙ্গত, ঢাকা থেকে বরিশালগামী এমভি পারাবত-১১ লঞ্চের কেবিন থেকে আনুমানিক ৩৮ বছর বয়সী নারীর লাশ গতকাল উদ্ধার করে পুলিশ। নারীর সঙ্গে থাকা সন্দেহভাজন খুনি ব্যক্তিকে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে শনাক্ত করেছে পুলিশ। তবে এখনো তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
লঞ্চ সুপারভাইজার সেলিম জানিয়েছেন, রবিবার সন্ধ্যা ৬টা ৩১ মিনিটে সদরঘাট থেকে এক ব্যক্তি ওই নারীকে সাথে নিয়ে পারাবত-১১ লঞ্চের তৃতীয় তলার ৩৯১ নম্বর সিঙ্গেল কেবিনে ওঠেন। লঞ্চের রেজিস্ট্রারে তার নাম দেওয়া হয় কামরুল।সোমবার ভোর ৪টা ৪৭ মিনিটে লঞ্চটি বরিশাল নদী বন্দরে নোঙ্গর করলে ওই নারীর সঙ্গে থাকা ব্যক্তি নিহত নারীর ব্যাগ, মাস্ক এবং ওড়না নিয়ে দ্রুত নেমে যায়। তার মুখম-লে মাস্ক ছিল। অন্য যাত্রীরা নেমে যাওয়ার পরও কেবিনে থাকা নারী না নামায় কেবিন স্টাফরা তাকে ডাকাডাকি করেন। কিন্তু কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে তারা নৌ-পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ গিয়ে নারীর মরদেহ দেখতে পায়। কোতয়ালী থানার ওসি নুরুল ইসলাম জানিয়েছেন, নিহত নারীর ময়নাতদন্ত শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সম্পন্ন হয়েছে।
Leave a Reply