বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:০০ অপরাহ্ন

উপ-সম্পাদক :: দিদার সরদার
প্রধান সম্পাদক :: সমীর কুমার চাকলাদার
প্রকাশক ও সম্পাদক :: কাজী মোঃ জাহাঙ্গীর
যুগ্ম সম্পাদক :: মাসুদ রানা
সহ-সম্পাদক :: এস.এম জুলফিকার
প্রধান নির্বাহী সম্পাদক :: মামুন তালুকদার
নির্বাহী সম্পাদক :: সাইফুল ইসলাম
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক :: আবুল কালাম আজাদ
সংবাদ শিরোনাম :
তারেক রহমানের বিজ্ঞ নেতৃত্বের কারণে শেখ হাসিনাকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছি-এম. জহির উদ্দিন স্বপন গৌরনদীতে দৈনিক যুগান্তরের বিরুদ্ধে বিড়ি শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল দুষ্টামিটাও ছিল যেমন স্পর্শকাতর, খেসারাতটাও দিতে হল তেমনি ভয়ঙ্কর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের ৫ সদস্যের বরিশাল মহানগরে আহ্বায়ক কমিটি গঠন গৌরনদীতে ইউএনওর নেতৃত্বে স্বেচ্ছাশ্রমে খালের কুচুরিপানা ও ময়লা পরিস্কার করল বৈষম্য বিরোধী ছাত্ররা বর্নাঢ্য র‌্যালি ও আলোচনা সভার মধ্যদিয়ে গৌরনদীতে জাতীয় সমবায় দিবস পালিত আমাদের নেতা তারেক রহমান একটি সাম্যের বাংলাদেশ গড়তে চান-জহির উদ্দিন স্বপন মেয়র হারিছ গ্রেপ্তারের খবরে গৌরনদীতে সাধারন মানুষের উল্লাস ফাঁসির দাবিতে বিএনপির বিক্ষাভ মিছিল গৌরনদীতে এইচপিভি টিকা দান ক্যাম্পেইনের শুভ উদ্বোধন কাশিপুরের ড্রেজার ব্যবসায়ী সুমনের অপকর্মে কেউ খুন হলে দায় নেবে না বিএনপি
বরিশালে খাস জমি দখল করে এলজিইডির বাজার উন্নয়ন!

বরিশালে খাস জমি দখল করে এলজিইডির বাজার উন্নয়ন!

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশালে পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আড়ালে সরকারি খাল এবং ওয়াকফ সম্পতি দখল নিয়ে বাজার উন্নয়নের কাজ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) বিরুদ্ধে। সম্পূর্ণ অবৈধভাবে দুটি প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৫৫ শতাংশ জমি নিজেদের করে নিতেই মূলত উন্নয়নের আড়ালে এই অনিয়ম বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট দুই কর্তৃপক্ষের। অভিযোগ রয়েছে- উন্নয়নের নামে এই দখল বাণিজ্যের মূল নেতৃত্বে রয়েছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, বাজার পরিচালনা কমিটি ও সরকার দলীয় কতিপয় নেতারা।
এছাড়াও সরকারি যে খাল দখল করে বাজার উন্নয়নের নামে লুটপাটের বন্দোবস্ত করা হয়েছে সেই খাল দখল করে একই কায়দায় উন্নয়নের নামে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে ভরাট করায় বিগত ১৫ বছর পূর্বে ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত বিএনপি নেতা মো. শহীদুল ইসলামের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন করে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতিকে (বেলা)। যার সুরাহা এখনো হয়নি। অন্যদিকে সরকারী খাল দখল করে ভরাট করায় প্রয়াত বিএনপি নেতার প্রকল্পের অর্থ বাতিল করা হয়। যা নিয়ে তিনি আদালতের শরনাপন্ন হলেও অর্থ আদায়ে ব্যর্থ হন।
তথ্য গোপন করে চাঞ্চল্যকর অনিয়মের এই উন্নয়ন শুরু করা হয়েছে বরিশাল সদর উপজেলার শায়েস্তাবাদ ইউনিয়নের শায়েস্তাবাদ বাজারে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সাধারণ বাসিন্দা এবং বাজারের ব্যবসায়ীরা ক্ষোভের কথা জানালেও দখল-বাণিজ্যের সাথে জড়িতরা প্রভাবশালী হওয়ায় প্রকাশ্যে কেউ মুখ খুলছেন না। তবে বাজার পরিচালনা কমিটির নেতারা নিজেদের নির্দোষ দাবী করে বলেছেন- বাজার উন্নয়নে যেই জমিতে কাজ শুরু হচ্ছে তা বাজারের জমি নয়, সরকারি খাস খতিয়ান এবং ওয়াকফ সম্পতির জমি। বাজার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে জমি নির্ধারণ সহ যাবতীয় কাজ করেছেন আমাদের ইউপি চেয়ারম্যান ও এলজিইডি অফিসের লোকজন। বাজার কমিটি কোনো অনিয়মের সাথে জড়িত নয়; বলে দাবী সভাপতি টিপু আকনের। এছাড়াও বাজার উন্নয়ন নামে অনিয়ম-দুর্নীতি ও লুটপাটের উদ্দেশ্যে সংশ্লিষ্টরা জমির প্রকৃত মালিক যাচাইয়ে স্থানীয় ভূমি অফিস থেকে কোন ধরনের ছাড়পত্র ছাড়াই প্রকল্প বাস্তবায়নে শুরু করেছে বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা (তহশিলদার) মো. আব্দুস সোবহানের।
এদিকে দখল এবং প্রকল্পের নামে লুটপাটের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শায়েস্তাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান মো. আরিফুর রহমান মুন্না। তবে, ব্যবসায়ীদের স্বার্থে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে জমি নির্ধারনে অনিয়মের আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন দাবী করে ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, স্থানীয় কিছু লোকজন প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দেওয়ার পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পরামর্শে প্রকল্প বাস্তবায়নে সহায়তা চাওয়া হয়েছে এবং উপজেলা ভূমি কর্মকর্তার (এসিল্যান্ড) নির্দেশে সরেজমিনে সার্ভেয়ার প্রেরণ করা হয়েছে। বরিশাল সদর উপজেলা এলজিইডি দপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০১৯-২০ অর্থ বছরে অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় সদর উপজেলার শায়েস্তাবাদ বাজারে ৫৪ লাখ টাকা ব্যায়ে একটি প্রকল্প অনুমোদন দেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) বরিশালের নির্বাহী প্রকৌশলী। উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মো. অলিউল ইসলাম সরেজমিনে প্রকল্প স্থান পরিদর্শন পূর্বক উন্নয়ন কাজের ধরন নির্ধারণ শেষে গতবছরের ১৯ নভেম্বর প্রকল্পটি প্রাথমিক অনুমোদন দেয় এলজিইডি বরিশালের নির্বাহী প্রকৌশলী শরীফ মো. জামাল উদ্দিন। যা চলতি বছরের ১ জানুয়ারী এলজিইডি সদর দপ্তরের গুরুত্বপূর্ণ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক কাজী মিজানুর রহমান অনুমোদন দেন।
উন্নয়ন কাজের মধ্যে রয়েছে- ১৯ লাখ ২৪ হাজার ৬৫৩ লাখ টাকা ব্যায়ে একটি বহুমুখি মার্কেট, ১৮ লাখ ২ হাজার ১৯৪ লাখ টাকা ব্যায়ে এতটি মৎস্য মার্কেট এবং ১৬ লাখ ৮৯ হাজার ২৪১ টাকা ব্যায়ে বাজারে ড্রেন নির্মাণ। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উক্ত প্রকল্পের জন্য নির্ধারণ করা প্রায় ৫৫ শতাংশ জমি সম্পূর্ণ সরকারের ১নং খাস খতিয়ান ভুক্ত খাল এবং শায়েস্তাবাদ ওয়াকফ এস্টেটের সম্পত্তি। সরকারের ১নং খাস খতিয়ানের ৩০ শতাংশ জমির মালিক স্থানীয় ভূমি অফিস এবং বাকী ২৫ শতাংশ জমি শায়েস্তাবাদ ওয়াকফ এস্টেটের হওয়া সত্ত্বেও বাজার পরিচালনা কমিটি, প্রকল্প বাস্তবায়নে আবেদনকারী স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও প্রকল্প বাস্তবায়নকারী এলজিইডি দপ্তর জমির প্রকৃত মালিক দুই প্রতিষ্ঠানের কাউকে অবহিত না করে সরেজমিনে কাজ বাস্তবায়নে সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ফেলেছেন। চলতিবছরের ১৯ মে টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়া পর সর্ব্বোচ্য দরদাতা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ওয়ার্ক ওয়ার্ডার দেওয়ার পর গত সপ্তাহে ঠিকাদার প্রকল্প এলাকায় নির্মান সামগ্রী নেওয়ার পর বিষয়টি সকলের নজরে আসে। অনেকটা চুপিসারে প্রকল্প পাশ সহ যাবতীয় কাজ সম্পন্ন হলেও বাস্তবায়ন শুরুর আগেই বেকে বসে স্থানীয়রা। তারা অনিয়মের বিষয়টি জেলা প্রশাসন সহ বেশ কয়েকটি দপ্তরকে অবহিত করেন। ফলে কাজ শুরু করতে গিয়েও থমকে দাঁড়ায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এ বিষয়ে শায়েস্তাবাদ ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা (তহশিলদার) মো. আব্দুস সোবহান জানান, সরকারের ১নং খাস খতিয়ানে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অনুমোদন ছাড়া নির্মাণ কাজ শুরু করায় জেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে অবহিত করা হয়েছে।
শায়েস্তাবাদ ওয়াকফ এস্টেটের মোতাওয়াল্লি সৈয়দ আকবর আলী চৌধুরী জানান, ওয়াকফ এস্টেটের বেশ কিছু জমি ওই বাজারে রয়েছে। তার মধ্যে বাজার উন্নয়নে যে প্রকল্পের কথা শোনা যাচ্ছে সেখানে এস্টেটের প্রায় ২৫ শতাংশ জমি রয়েছে।
বরিশাল সদর উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মো. অলিউল ইসলাম বলেন, টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়া শায়েস্তাবাদ বাজার উন্নয়নে যে জমি সিলেকশন করা হয়েছিলো তা সরকারি খাস এবং ওয়াকফ এস্টেটের সম্পত্তি তা আমাদের জানানো হয়নি। স্থানীয়দের মাধ্যমে জানার পর প্রকল্পটি বাতিল করা হয়েছে। বরিশাল সদর উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা (এসিল্যান্ড) মো. মেহেদী হাসান বলেন, সরকারী খাস খতিয়ানের জমি দখলের কোনো সুযোগ নেই। এলজিইডি আমাদের জমিতে বাজার উন্নয়নের প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ছাড়পত্র বা মৌখিক কোনো অনুমতি নেয়নি। বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মুনিবুর রহমান বলেন, খাল ভরাট করে কোনো স্থাপনা করতে দেওয়া হবেনা। খাস জমিতে উন্নয়ন কর্মকান্ড করতে হলে সকল প্রক্রিয়া মেনে জেলা প্রশাসনের অনুমতি নিতে হবে। আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত কেউ কোনো আবেদন করেনি। এলজিইডি বরিশালের নির্বাহী প্রকৌশলী শরীফ মো. জামাল উদ্দিন বলেন, গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে শায়েস্তাবাদ বাজারের প্রকল্পটির কাজ চলছে দীর্ঘদিন যাবত। জায়গা নির্ধারণে এতোদিন কোন ধরনের আপত্তি বা অভিযোগ আসেনি। ঠিকাদার কাজ শুরু করতে সরেজমিনে গেলে আপত্তি তোলা হয়। জমি খাস হয়ে থাকলে এলজিইডি প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারেনা। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Dokhinerkhobor.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com