ভারতে ইসলামোফোবিয়া বা মুসলিমবিদ্বেষকে সরাসরি রাষ্ট্রীয়ভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। গত শুক্রবার জাতিসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদে বক্তব্যের সময় এ অভিযোগ করেন তিনি। জাতিসঙ্ঘের সম্মেলনে রেকর্ড করা বক্তব্যে ইমরান খান বলেন, ‘অত্যন্ত দুঃখের সাথে বলছি যে, আজ বিশ্বের একমাত্র দেশ যেখানে রাষ্ট্রীয়ভাবে ইসলামোফোবিয়ার পৃষ্ঠপোষকতা করা হচ্ছে, সেটি ভারত। এর কারণ হচ্ছে, দুর্ভাগ্যজনক আজ আরএসএসের (উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন) আদর্শ ভারত শাসন করছে। তারা বিশ্বাস করে, ভারত শুধু হিন্দুদের জন্য, অন্যরা সমান নাগরিক নয়।’
গত আগস্টে ভারতশাসিত জম্মু-কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসন বিলুপ্ত করায় এর আগেও ভারত সরকারের কঠোর সমালোচনা করেছেন পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী। তবে কাশ্মিরের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ দিয়ে পাকিস্তান সরাসরি সহায়তা করছে বলে অভিযোগ রয়েছে ভারতের। যদিও বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে পাকিস্তান।
এ বিষয়ে জাতিসঙ্ঘে ইমরান খান বলেন, ‘আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে জম্মু-কাশ্মিরের বিরোধ নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত দক্ষিণ এশিয়ায় স্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতা আসবে না।’
এ জন্য ভারত সরকারের গত ৫ আগস্টের সিদ্ধান্ত বাতিল করে সঙ্কটের শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। বিশ্বের অন্যতম সেনা অধ্যুষিত এলাকা কাশ্মিরে ভারতীয় নিরাপত্তাবাহিনীর বিরুদ্ধে হাজার হাজার তরুণকে আটক, বেআইনি অভিযান, অবৈধ নির্যাতনসহ বেশ কিছু গুরুতর অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। গত মার্চ পর্যন্ত টানা সাত মাস পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছিল অঞ্চলটিকে। বন্ধ ছিল ইন্টারনেটসহ সব ধরনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম।
পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে নীতি লঙ্ঘনের এসব গুরুতর ঘটনা অবশ্যই তদন্ত করতে হবে। এ ছাড়া রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত ভারতীয় বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাদের বিচার হওয়া উচিত।’
ভারতের পাশাপাশি গোটা বিশ্বে মুসলিমদের ওপর নির্যাতন ও ইসলামবিদ্বেষের প্রচারণা বন্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
কাশ্মির ইস্যুতে ইমরান খানের বক্তব্যের পরপরই সভা থেকে ওয়াক আউট করে ভারত। ভারতীয় কূটনীতিক তিরুমূর্তি ইমরান খানের বক্তব্যকে নিচু মানের কূটনীতি বলে ব্যাখ্যা করেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী কাশ্মির ও ভারত প্রসঙ্গে নিন্দা শুরু করতেই, ভার্চুয়াল সেশন থেকে ওয়াক আউট করেন জাতিসঙ্ঘে ভারতের স্থায়ী মিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি মিজিতো ভিনিতো।
টুইটারে তিরুমূর্তি লেখেন, ‘পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি এক ধরনের নতুন নিচু মানের কূটনীতি। পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার ও সীমান্ত সন্ত্রাস থেকে বিশ্বকে বিভ্রান্ত করতে বিরক্তিকর, বিদ্বেষপূর্ণ মিথ্যে, ব্যক্তিগত আক্রমণ, যুদ্ধে উসকানিমূলক বিবৃতি। কড়া জবাব আসছে।’ আলজাজিরা ও এনডিটিভি
Leave a Reply