বানারীপাড়া প্রতিবেদক ॥ বানারীপাড়ায় শীর্ষ ১০ মাদক ব্যবসায়ীকে হন্যে হয়ে খুঁজছে পুলিশ।মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর দেশ জুড়ে অভিযান শুরু হলে বানারীপাড়ার চিহিৃত শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীরা আত্মগোপনে চলে যায়। থানার অফিসার ইনচাজর্ (ওসি) মো. খলিলুর রহমান জানান গত কয়েকদিন ধরে রাত-দিন একাকার করে মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করার জন্য তিনি নিজে নেতৃত্ব দিয়ে একের পর এক অভিযান চালিয়ে গোটা উপজেলা চষে বেড়াচ্ছেন।মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সে অবস্থানের কথা জানিয়ে তিনি বলেন মাদক ব্যবসায়ীরা যেখানেই আত্ম গোপন করে থাকুক না কেন কিংবা যতই প্রভাবশালী হোক তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে ।এ ব্যপারে একটা সরিষা পরিমাণ কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। তবে পুলিশের নির্ঘুম কাটলেও বানারীপাড়ায় এখনও কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।ব্যর্থতা ঢেকে সফলতা দেখানোর ব্যপারে অভিযান অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছেন ওসি। জানা গেছে ওই শীর্ষ ১০ মাদক ব্যবসায়ী হলেন চাখার সরকারী ফজলুল হক কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আনোয়ার হোসেন হত্যা মামলার আসামী ও উপজেলার সলিয়াবাকপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হেমায়েত উদ্দিনের ভাই ঢাকার শীর্ষ টপটেরর মাঈন উদ্দিন,পৌর ছাত্রদলের সভাপতি তুহিন মৃধা,পৌর যুবদলের বহিস্কৃত যুগ্ম আহবায়ক সিরাজ ফকির,ল্যাংড়া সোহেল,প্যাচা কামাল,ইয়ার হোসেন,জামাল হোসেন,সোহেল মোল্লা,মজিবর রহমান ও রুবেল।থানা সূত্রে জানা গেছে এই ১০ জন র্যাব ও পুলিশের তালিকাভূক্ত এবং মাদক মামলার আসামী হিসেবে অসংখ্যবার গ্রেফতার হওয়া উপজেলার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী।এছাড়াও বেশ কয়েকজন মাদকসেবী কাম ব্যবসায়ীকে খুঁজছে পুলিশ।তাদের মধ্যে ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গসংগঠনের কয়েকজন নেতাও রয়েছেন বলে জানা গেছে।প্রসঙ্গত গাঁজা, রেকটি ফাইড স্পিরিট (আরএস) ও ফেন্সিডিলের পর সাম্প্রতিককালে বানারীপাড়ার নেশার রাজ্যে নতুন সংযোজিত হয়েছে মরণ নেশা “ইয়াবা”। মাদকসেবীরা দিন দিন ইয়াবার উপর ঝুঁকে পড়ছে।প্রতিদিনই ইয়াবার নেশা আসক্তদের মিছিলে যোগ দিচ্ছে নতুন নতুন সদস্য। ইয়াবার ডাক নাম “বাবা”।নেশার জগতে ইয়াবা বাবার চেয়েও প্রিয়। অভিজাত নেশাগ্রস্থদের কাছে এটি “আইস পিল” নামেও পরিচিত। বানারীপাড়ায় সাধারণত ইয়াবা বিক্রি হয় মোবাইল ফোনের মাধ্যমে।নির্দিষ্ট মোবাইল নম্বরগুলোতে কল করলেই ইয়াবা পৌঁছে যায় মাদকসেবীদের হাতে। প্রতিটি ইয়াবা ট্যাবলেট পাইকারী ২৫০ টাকায় বিক্রি হয়। খুচরা বাজারে প্রতিটির দাম ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা।পূর্ন নেশাগ্রস্থ হতে প্রতিদিন একজন নেশাগস্থের ২ থেকে ৩টি ইয়াবা ট্যাবলেট দরকার। মিয়নমার সীমান্ত দিয়ে আসা নিষিদ্ধ এ ইয়াবা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বরিশাল হয়ে পৌঁছে যায় বানারীপাড়ার ব্যবসায়ীদের কাছে। ইয়াবা যৌন উত্তেজনা সৃষ্টি করায় অনেকে সেজন্য ব্যবহার করতে গিয়ে নিজের অজান্তে নেশার জগতে হারিয়ে যাচ্ছে।ইতিমধ্যে মাদকের ভয়াল ছোবলে বানারীপাড়ায় বেশ কয়েকজন মাদকসেবী অকালে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছে। আবার অনেকে মানসিক ভারসাম্য ও দৃষ্টি শক্তি হারানো সহ ভূগছে নানা জটিল রোগে। মাদকসেবীদের পরিবারে বিরাজ করছে চরম অশান্তি। মাদক ক্রয়ের টাকা সংগ্রহে মাদকসেবীরা জড়িয়ে পড়ছে নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ডে।এদিকে মাদক নির্মূলে সরকারের চলমান অভিযানে সন্তোষ প্রকাশ করে ও সাধুবাদ জানিয়ে পুরোপুরি নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত এ অভিযান অব্যাহত রাখার দাবী জানিয়েছেন বানারীপাড়া প্রেসক্লাব ও মাদক বিরোধী জোট নেতৃবৃন্দ সহ সুশীল সমাজ।
Leave a Reply