ভোলা প্রতিবেদক ॥ ভোলার আলোচিত উত্তর দিঘলদী ইউনিয়নের খুশিয়া গ্রামে ঘুমন্ত দুই বোনের ওপর এসিড নিক্ষেপকারী মহব্বত হাওলাদার অপুকে আটক করেছে পুলিশ। অপু সদর উপজেলার দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের দক্ষিণ বালিয়া গ্রামের মো. হানিফ হাওলাদারের ছেলে ও ভোলা সরকারি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র।
শনিবার ভোর রাতে অপুর গ্রামের বাড়ি দক্ষিণ বালিয়া গ্রাম থেকে তাকে আটক করা হয়। দুপুরে ভোলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার মো. মোকতার হোসেন। তিনি আরও জানান, গত ১৪ মে গভীর রাতে উপজেলার উত্তর দিঘলদী ইউনিয়নের মো. হেলাল রাঢির মেয়ে তানজিম আক্তার মালা ও মারজিয়ার ওপর ঘুমন্ত অবস্থায় এসিড নিক্ষেপ করা হয়। এতে তানজিম আক্তার মালার মুখসহ শরীরের বিভিন্ন স্থান ঝলসে যায়। ছোট বোন মারজিয়ার শরীরসহ হাত ঝলসে যায়। এ ঘটনার পর ১৫ মে মালার বাবা মামলা করেন। পুলিশ এ ঘটনায় সন্দেহজনকভাবে তাৎক্ষণিক দুইজনকে আটক করে। এর পর থেকে বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে এসিড নিক্ষেপকারী মূলহোতাকে আটকের জন্য অভিযানে নামে পুলিশ। শনিবার ভোর রাতে ঘটনার মূলহোতা মহব্বত হাওলাদার অপুকে আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অপু পুলিশের কাছে এসিড নিক্ষেপের কথা স্বীকার করেছে।
অপু পুলিশের কাছে দেয়া স্বীকারোক্তিতে জানায়, তানজিম আক্তার মালার সাথে প্রথমে তার এক বন্ধুর মাধ্যমে পরিচয় হয়। পরে দীর্ঘদিন ধরে মালার সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছে। সর্বশেষ চলতি বছরের এপ্রিল মাসে জানতে পারে মালার সাথে ইসমাইল নামে এক ছেলের এক বছর আগ থেকে প্রেম চলে আসছে। দেড় বছর আগ থেকে মালার এক চাচাতো ভাই রাজিবের সাথেও তার প্রেম ছিল। এসব জানতে পেরে অপু মালার সাথে মোবাইলে কথা বলা বন্ধ করে রাখে। পাঁচ দিন পর মোবাইল খুললে মালা তাকে ফোন করে সরি বলে এবং এর পর থেকে সবার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে শুধু তার সাথেই প্রেম করবে বলে। কিন্তু কয়েক দিন পর মালা আবার তার পূর্বের প্রেমিক ইসমাইলের সাথে সম্পর্ক শুরু করে। এ ঘটনা জানতে পেরে অপু ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে শিক্ষা দেয়ার জন্য চলতি মাসের ১৪ তারিখ রাত দুইটার দিকে মালাদের বাড়িতে গিয়ে ঘরের জানালা দিয়ে তার উপর এসিড নিক্ষেপ করে চলে আসে। সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, মূলত প্রেমঘটিত কারণেই তানজিম আক্তার মালার ওপর এসিড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে।
Leave a Reply