নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কর্ণেল (অবঃ) জাহিদ ফারুক শামিম-এমপি বলছেন, করোনা ভাইরাসের সংক্রমনের এই সময় সরকার অনেক প্রণোদনা দিয়েছে। করোনায় মানুষের কাজকর্মে অনেক ব্যাঘাত হয়েছে, ব্যবসা-বানিজ্য করতে পারছে না, যারা দিন আনে দিন খায় তাদের রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে। এসব চিন্তা করেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দুই হাতে প্রনোদনা দিয়েছে। বরিশাল সদর আসনে ৯০ হাজার লোকের প্রতিজনকে আড়াইহাজার টাকা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে দেয়া হয়েছে এবং সিটি করপোরেশনে ৩০ হাজার লোকের প্রতিজনকে আড়াইহাজার টাকা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে দেয়া হচ্ছে।
শুক্রবার (০২ অক্টোবর) বরিশাল নগরীর চকবাজারস্থ জামে এবায়েদুল্লাহ মসজিদে জুমআর নামাজ আদায় শেষে চকবাজার ব্যাবসায়ীদের উদ্যোগে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির জ্যেষ্ঠ সদস্য, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কমিটির আহ্বায়ক(মন্ত্রী) এবং বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বরিশাল-১ আসনের সাংসদ আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ এমপি’র আশু রোগমুক্তি কামনায় অনুষ্ঠিত দোয়া মোনাজাতে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, করোনায় সংক্রমনের শুরুতে দক্ষিনাঞ্চলের মানুষের কথা চিন্তা করে বিভাগের মধ্যে বরিশালে প্রথম সিপিআর ল্যাবটি স্থাপন করা হয়। শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ওই স্থাপন করা ল্যাবটি মাত্র ১০ দিনে প্রস্তুত করা হয়। যা এখন দক্ষিনাঞ্চলের মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। পরবর্তীতে চাপ কমাতে বিভাগের মধ্যে ভোলাতে আরও একটি পিসিআর ল্যাব স্থাপন করা হয়। পটুয়াখালীতেও ল্যাব স্থাপনের জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ জানিয়েছি।
তিনি বলেন, আমরা দক্ষিনাঞ্চলের মানুষ সবসময় অবহেলিত ছিলাম। তবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেহেতু দক্ষিনাঞ্চলের মানুষ, তাই তার দক্ষিনাঞ্চলের মানুষের প্রতি একটা টান রয়েছে। শুধু পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের যদি কথা বলি, তবে বরিশালে অনেকগুলো প্রকল্প আমাদের চলমান রয়েছে, অনেকগুলো প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। যেগুলো শেষ হলে বরিশাল অঞ্চল অর্থাৎ বরিশাল, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, ভোলা, ঝালকাঠি, বরগুনাতে নদী ভাঙ্গন কমে আসবে। তবে মনে রাখতে হবে, আমরা ভাটির দেশের লোক। আমাদের উজানে ভারত, নেপাল, ভূটানের মতো দেশ রয়েছে। বর্ষায় যেমন এসব দেশের পানি আমাদের নদীগুলো হয়ে সাগরে যায়, তেমনি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেও বর্ষাসহ প্রাকৃতিক দূর্যোগে পরিমান বেড়েছে। ফলে বর্ষায় নদীগুলো দিয়ে যে পানি প্রবাহিত হচ্ছে, তার পরিমান বেশি হওয়ায় গ্রামগুলো প্লাবিত হচ্ছে। আর উজান থেকে আসা পানির সাথে প্রচুর পরিমানে পলি এসে নদীর তলদেশে জমছে।
আবার এগুলোর জন্যও আমরা অনেক প্রকল্প নিয়েছি, যেগুলো বাস্তবায়ন হলে এ ধরণের সমস্যা কমে যাবে। আমরা নদীর পানির ধারণ ক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা করছি, নদীর নাব্যতা রক্ষার চেষ্টা করছি। তবে বর্ষায় উজান থেকে যে পরিমান পলি আসে তা ড্রেজিং করে নাব্যতা ধরে রাখা কঠিন। আর ব্যয়বহুল। তারপরও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের সময় আমরা আগের থেকে অর্থনৈতিকভাবে অনেক সাবলম্বী হয়েছি।
করোনার সময় কিছুটা থমকে গেলেও আমরা আবারো ঘুরে দাড়িয়েছি। ঢাকা শহরে লোকজন কাজ করছে, গার্মেন্টেসে কাজ শুরু হয়েছে, মানুষ বিদেশে যাওয়া শুরু করেছে। ২০৪১ সালের ভেতরে সমৃদ্ধশালী দেশের যে লক্ষ্য রয়েছে, ইনশআল্লাহ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমারে সে লক্ষে পৌছাতে পারবো। আমাদের উচিত যার যার কাজ সততার সহিত করা। আমরা যদি পরকালে বিশ্বাস করি, মৃত্যুকে বিশ্বাস করি তাহলে খারাপ কাজ থেকে দূরে থাকতে পারবো।
তিনি আরো বলেন, আপনি যদি একজনের ক্ষতির চিন্তা করেন, তাহলে আপনার থেকে শক্তিশালী ব্যক্তি আপনার ক্ষতি করবে। আমরা সকলে মিলেমিশে থাকবো, দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবো। আমরা যদি মিলেমিশে থাকতে পারি, মাথা ঠান্ডা করে যদি কাজ করি তাহলে বরিশালকে আমরা অনেক উন্নত করতে পারবো। পায়রা বন্দর, পদ্মা সেতু শেষ হলে, বরিশালে ভোলার গ্যাস আসলে অনেক শিল্প কারখান এখানে গড়ে উঠবে। আমাদের লোকদের কর্মসংস্থান হবে। কিন্তু সবথেকে বড় কথা হলো, সততা ও ইমানের সহিত বসবাস করতে না পারলে কোন উন্নয়ন, শিল্পকারখানা আমাদের সাহায্য করতে পারবে না।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, এবায়েদুল্লাহ জামে এবায়েদুল্লাহ মসজিদের ইমাম নুরুর রহমান বেগ, বরিশাল মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহামুদুল হক খান মামুন, জেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি জোবায়ের আব্দুল্লাহ জিন্নাহ, মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি জসিম উদ্দিন ও মহানগর ছাত্রলীগের নেতা মাহাদ সহ দলীয় নেতাকর্মীরা ।
Leave a Reply