নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ইলিশ শিকারের ওপরে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার। শুধু ইলিশ নয়, এই সময়কালে নদ-নদী বা সাগরে কোনো ধরনের মাছই আর ধরা যাবে না। ১৪ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ২২ দিন সাগরে জাল ফেলা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ১৪ অক্টোবর থেকে পরবর্তী ২২ দিন ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম। বিশেষ করে ইলিশকে প্রধান্য দিতে গিয়ে এমন কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ সময়টাতে জেলেরা পাবেন ২০ কেজি করে চাল।
ইতিমধ্যে সারা দেশে ইলিশ মাছ আহরণ, পরিবহন, মজুত, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। এ সময়ে জেলেরা পাবেন মোট ১০ হাজার ৫৬৭ টন চাল। প্রতিজন জেলের ভাগে চাল পড়বে ২০ কেজি করে। ইলিশ সম্পদ সংরক্ষণে ‘প্রটেকশন এন্ড কনজারভেশন অব ফিশ অ্যাক্ট, ১৯৫০ এর অধীনে প্রণীত ‘প্রটেকশন এন্ড কনজারভেশন অব ফিশ রুলস, ১৯৮৫’ এর আওতায় এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এ সময়টাকে ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম হিসেবে ধরা হচ্ছে। জানা গেছে, এ সময়ে জেলেদের জন্য মানবিক খাদ্য সহায়তা কর্মসূচির অংশ হিসেবে ৩৬টি জেলার ১৫২টি উপজেলায় মা ইলিশ আহরণে বিরত রাখতে তালিকাভুক্ত ৫ লাখ ২৮ হাজার ৩৪২টি জেলে পরিবারের জন্য ২০ কেজি হারে চাল দেওয়া হবে। এ মৌসুমে গত মৌসুমের তুলনায় অতিরিক্ত ১ লাখ ২০ হাজার ২৬৩টি জেলে পরিবারকে এ খাদ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। বরিশাল জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বরিশালটাইমসকে বলেন, ‘কোনো জেলেই নদী বা সাগরে জাল ফেলতে পারবেন না। কারণ অন্যান্য মাছ ধরতে গেলে ইলিশও ধরবে জেলেরা। তাই সাগরে জাল নিয়ে নামায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার। এজন্য জেলেদের ২০ কেজি করে চাল দেওয়া হচ্ছে।’ জানা গেছে, বরিশাল অঞ্চলে গত মৌসুমে লক্ষাধিক জেলে ভিজিএফ চাল পেয়েছিলেন। এ বছরও সমসংখ্যক জেলে সরকারের খাদ্য সহায়তা পেতে যাচ্ছেন। সরকারের পক্ষ থেকে এই অঞ্চলের জেলেদের ৫ হাজার ৬৯০ ট্রন চাল দেওয়া ঘোষণা ইতিমধ্যে দেওয়া হয়েছে। সংখ্যাগত দিক বিবেচনায় বরিশাল (৯৪০ মেট্রিক টন), পিরোজপুর (৩৪০ মেট্রিক টন), পটুয়াখালী (১১৬০ মেট্রিক টন), ভোলা (২৪০০ মেট্রিক টন), বরগুনা (৭৪০ মেট্রিক টন) এবং ঝালকাঠি (৭০ মেট্রিক টন) দিয়েছে সরকার। অনুরুপভাবে ফেনী (৫ মেট্রিক টন), ঢাকা (২০ মেট্রিক টন), মানিকগঞ্জ (১৫৮ মেট্রিক টন), মুন্সীগঞ্জ (৫৯.৪৪ মেট্রিক টন), ফরিদপুর (৪৪.৭৪ মেট্রিক টন), রাজবাড়ী (৯৪ মেট্রিক টন), নরসিংদী (৩০ মেট্রিক টন), শরিয়তপুর (৩৮০ মেট্রিক টন), মাদারীপুর (৮০ মেট্রিক টন), গোপালগঞ্জ (২০.০৪ মেট্রিক টন), টাঙ্গাইল (৩৫.৬২ মেট্রিক টন), কিশোরগঞ্জ (২০ মেট্রিক টন), নারায়ণগঞ্জ (২০ মেট্রিক টন), জামালপুর (১৬০ মে. ব্রাহ্মণবাড়িয়া (১৮ মেট্রিক টন), নোয়াখালী (৩০০ মেট্রিক টন), লক্ষ্মীপুর (৮০০ মেট্রিক টন). চাঁদপুর (১০০০ মেট্রিক টন),খুলনা (৪২ মেট্রিক টন), বাগেরহাট (২৪০ মেট্রিক টন), কুষ্টিয়া (৪০ মেট্রিক টন), রাজশাহী (৮০ মেট্রিক টন), চাঁপাইনবাবগঞ্জ (৪০ মেট্রিক টন), নাটোর (১০ মেট্রিক টন), সিরাজগঞ্জ (১০০ মেট্রিক টন), পাবনা (৬০ মেট্রিক টন), গাইবান্ধা (১১০ মেট্রিক টন) এবং কুড়িগ্রামের (১৫০ মেট্রিক টন) জেলেদেরও চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।’
Leave a Reply