লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থল বন্দর জামে মসজিদে কোরআন অবমাননার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি। গুজব ছড়িয়ে আবু ইউনুছ মো. সহিদুন্নবী জুয়েলকে প্রথমে মারধর এবং পরে পিটিয়ে হত্যা করে তার লাশ পুড়ে ফেলা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে ওই মসজিদের ঈমাম সৈয়দ আলী ও খাদেম জোবেদ আলী এমনটাই দাবি করেছেন।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ওই মসজিদে কোরআন অবমাননার অভিযোগ তুলে আবু ইউনুছ মো. সহিদুন্নবী জুয়েল নামের এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করে তার লাশ পুড়ে ফেলে স্থানীয় বিক্ষুদ্ধ জনতা। নিহত ব্যক্তি রংপুর শহরের শালবন মিস্ত্রি পাড়ার মৃত আবু ওয়াজেদ মিয়ার ছেলে। তিনি রংপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক লাইব্রেরিয়ান। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন সুলতান জোবায়ের আব্বাস (৪৫) নামের আরও এক ব্যক্তি। তিনি একই এলাকার শেখ আব্বাস আলীর ছেলে, পেশায় দলিল লেখক।
এ বিষয়ে মসজিদের খাদেম জোবেদ আলী বলেন, ‘আবু ইউনুছ মো. সহিদুন্নবী জুয়েল নামের ওই ব্যক্তি প্রথমে আসরের নামাজ আদায় করেন। এরপর তিনি নিজেকে র্যাব পরিচয় দিয়ে মসজিদের বিভিন্ন স্থানে অস্ত্র খুঁজতে থাকেন। তিনি কোরআনের ওপর পা দেননি। কিন্তু হঠাৎ করে মসজিদের বারান্দা থেকে হোসেন নামের এক ব্যক্তি তাকে আটক করে মসজিদের বাইরে নিয়ে গিয়ে জুতা খুলে মারধর করেন। মুহূর্তের মধ্যে শত শত লোক জড়ো হয়। পরে হাফিজুল ইসলাম নামে এক ইউপি সদস্য এসে তাকে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে যায়।’
মসজিদের ঈমাম সৈয়দ আলী বলেন, ‘আমি যখন মসজিদ থেকে বের হই, তখন ওই ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করেন। তার আচরণ দেখে আমার ভারসাম্যহীন মনে হয়েছে।’
লালমনিরহাট ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমি ওই মসজিদ পরিদর্শন করেছি। ঈমাম, খাদেম ও স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে মনে হয়েছে, গুজব ছড়িয়ে ওই ব্যক্তি হত্যা করা হয়েছে।’
লালমনিরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম বলেন, ‘পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আলামত সংগ্রহ করেছে। সিআইডিসহ অন্যান্য সংস্থা ঘটনার বিষয়ে তদন্ত করছে। এই ঘটনায় একাধিক মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলমান।’
Leave a Reply