ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে অ্যাসাইনমেন্টে অংশগ্রহণ করতে হবে। অ্যাসাইনমেন্টের আওতায় ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন, সংক্ষিপ্ত উত্তর প্রশ্ন, সৃজনশীল প্রশ্ন, প্রতিবেদন প্রণয়ন ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। শিক্ষার্থীদের সাদা কাগজে নিজের হাতে লেখা অ্যাসাইনমেন্ট সপ্তাহে তিনটি করে জমা দিতে হবে। গত শনিবার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) থেকে এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা বিবেচনা করে সরকার প্রথাগতভাবে বার্ষিক পরীক্ষা না নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে তাদের অর্জিত শিখনফল মূল্যায়ন করা হবে। পুনর্বিন্যাসকৃত পাঠ্যসূচির ভিত্তিতে কোনো সপ্তাহে শিক্ষার্থীর কী মূল্যায়ন করা হবে, সেটা বিবেচনায় নিয়ে নির্ধারিত কাজ প্রণয়ন করা হয়েছে।
সপ্তাহের শুরুতে ওই সপ্তাহের জন্য নির্ধারিত অ্যাসাইনমেন্টগুলো দিয়ে দেওয়া হবে। সপ্তাহ শেষে শিক্ষার্থীরা তাদের অ্যাসাইনমেন্ট শেষ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জমা দিয়ে নতুন কাজ বুঝে নেবে। অ্যাসাইনমেন্ট অভিভাবক বা অন্য কারও মাধ্যমে বা অনলাইনে জমা দেওয়া যাবে।
নির্দেশনা অনুযায়ী, নির্ধারিত বিষয়গুলোর প্রস্তাবিত অ্যাসাইনমেন্ট জমা নেওয়া, মূল্যায়ন করা, পরীক্ষকের মন্তব্যসহ শিক্ষার্থীদের তা দেখানো এবং প্রতিষ্ঠানে সেটি সংরক্ষণ করার কাজ আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে।
এ ছাড়া ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে অংশগ্রহণ করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে মূল্যায়নের সব রেকর্ড যথাযথভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। অ্যাসাইনমেন্টের আওতায় ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন, সংক্ষিপ্ত উত্তর প্রশ্ন, সৃজনশীল প্রশ্ন, প্রতিবেদন প্রণয়ন ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। শিক্ষার্থীদের এটি সাদা কাগজে নিজের হাতে লিখে জমা দিতে হবে। অভিভাবক বা তার প্রতিনিধি স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে প্রতি সপ্তাহে এক দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে অ্যাসাইনমেন্ট সংগ্রহ করবে এবং তা জমা দেবে।
শিক্ষা অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ১৬ মার্চ পর্যন্ত মাধ্যমিকের ক্লাস হওয়ার পর কোভিড-১৯ মহামারির কারণে ১৮ মার্চ থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এতে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। এ কারণে ২০২০ শিক্ষাবর্ষের নির্ধারিত পাঠ্যসূচি পড়ানো সম্ভব হয়নি। তাই চলতি বছরের শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যসূচি সংক্ষিপ্ত করে পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে বলে নির্দেশনায় জানানো হয়েছে।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, কিশোর বাতায়নের মতো কিছু প্ল্যাটফর্মে ডিজিটাল ক্লাসগুলোকে এমনভাবে আপলোড করা হয়েছে, যাতে শিক্ষার্থীরা দেশের যেকোনো জায়গা থেকে ক্লাসগুলো দেখতে পায়। কিন্তু অনেকে এ সুযোগ থেকে বঞ্চিত। এ কারণে তাদের পাঠ্যসূচি পুনর্বিন্যাস ও অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে মূল্যায়নের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই মূল্যায়নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের অর্জিত শিখনফলের দুর্বলতা চিহ্নিত করে পরবর্তী শ্রেণিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
করোনাভাইরাসের কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি চলছে। দফায় দফায় ছুটি বাড়িয়ে তা ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে। করোনার বাস্তবতায় দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকায় প্রায় চার কোটি শিক্ষার্থীর পড়াশোনা অত্যন্ত ঝুঁকিতে পড়েছে।
করোনা পরিস্থিতির কারণে এর আগে প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি সমাপনী পরীক্ষা এবং জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা বাতিল করা হয়। এরপর গত ৭ অক্টোবর ঘোষণা দেওয়া হয়, এ বছরের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষাও হচ্ছে না। এরপর মাধ্যমিক স্তরের বার্ষিক পরীক্ষাও না নেওয়ার ঘোষণা আসে।
Leave a Reply