নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ নানা রোগের চিকিৎসার নামে প্রতারনা এবং নারীদের গায়ে হাত তোলার অভিযোগ উঠেছে বরিশাল নগরীর ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের গুরগা বাড়ীর পোল এলাকার বায়তুল হামদ জামে মসজিদের ইমাম আবু সাইদের বিরুদ্ধে। কুফরী ক্ষতি ও বানমারা প্রতিরোধ, পরকীয়া ও বন্ধাত্ব দূর ও প্রেমে মজানো সহ বিভিন্ন জটিল রোগ ভাল করার নামে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে স্থানীয়দের নানা তদবির দিলেও তারা সুফল পায়নি বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এতে ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা। অভিযুক্ত ইমাম নানা রোগ নিরাময়ের তদবির দেয়ার কথা স্বীকার করলেও মসজিদ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির দাবি, তাদের মসজিদের ইমাম কোন তদবির দেন না।
নাম না প্রকাশের শর্তে একাধিক ভূক্তভোগী জানান, ইমাম আবু সাইদ সকল ধরনের রোগীর চিকিৎসা করেন। বন্ধা নারীদের সন্তান জন্মদানের সক্ষমতার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি তদবীরের নামে নারীদের তার বাসায় নিয়ে গোসল করানোর নামে তাদের শরীরে বিভিন্ন স্থানে হাত বুলিয়ে ঝাঁড়ফুক ও শ্লীলতাহানী করে। শ্লীলতাহানীর পরও সন্মানহানীর আশংকায় অনেকেই বিষয়টি চেপে যাচ্ছেন।
ভূক্তভোগী আরেকজন জানান, তার স্ত্রী পরকীয়া প্রেম করে অন্য এক ব্যক্তির সাথে নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। তার স্ত্রীকে ফেরত এনে দেয়ার কথা বলে বিভিন্ন সময় তদবীরের নামে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। কিন্তু তার স্ত্রীকে ফেরত এনে দিতে পারেননি তিনি। স্ত্রীকে ফেরত আনার তদবিরের নামে বিভিন্ন সময় নানা অজুহাতে ইমাম আবু সাইদকে অর্থ দিতে দিতে তিনি সর্বশান্ত।
প্রেমিকাকে বস করে তার সাথে প্রেমের বন্ধন সফল করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এক এসএসসি পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে ইমাম আবু সাইদের বিরুদ্ধে। এছাড়াও ইমাম আবু সাইদের বিরুদ্ধে কুফরী ক্ষতি ও বানমারা প্রতিরোধ, পরকীয়া ও বন্ধাত্ব দূর ও প্রেমে মজানো সহ বিভিন্ন জটিল রোগ ভাল করার নামে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ করেছেন স্থানীয় ভূক্তভোগীরা।
ওই মসজিদের মুসুল্লীরা অভিযোগ করেন, ইমাম আবু সাইদ রাতভর জেঁগে তাবিজ সহ তার ঝাঁড়ফুক ব্যবসার উপকরন তৈরী করেন। এ কারনে প্রায়ই তিনি ফজরের নামাজে ইমামতি করতে আসতে পারেন না। স্থানীয় মুসুল্লীরা জানান, ইমাম আবু সাইদের এসব অন্যায় ও অপকর্মে বায়তুল হামদ জামে মসজিদের সুনাম ক্ষুন্নœ হচ্ছে। এতে তারা ক্ষুব্ধ। এসব অন্যায় তদন্ত করে বিচার দাবি করেছেন স্থানীয় ভূক্তভোগীরা।
মুঠোফোনে বায়তুল হামদ জামে মসজিদের ইমাম আবু সাইদ বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে ঝাঁড়ফুঁক এবং তদবির দেয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, বন্ধা কোন নারীকে তিনি নিজ হাতে গোসল করান না। তাদের স্বামীকে ডেকে পানি পড়া দেন। স্বামীরা তাদের স্ত্রীকে গোসল করান। আবু সাইদ বলেন, ভালো মন্দ সব আল্লাহর হাতে। তিনি শুধু তদবির দেন। কেউ ভালো হয়। কেউ হয় না। এ নিয়ে কারোর অভিযোগ থাকতেই পারে। মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি নুর হোসেন মিরন মুঠোফোনে বলেন, ইমাম আবু সাইদকে মাঝে মধ্যে পানি পড়া দিতে দেখেন। এ নিয়ে কারোর অভিযোগ আছে কি না তা তিনি জানেন না। তবে বায়তুল হামদ জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি নুরুল ইসলাম বাবুলের দাবি ইমাম আবু সাইদ কোন পানি পড়া বা তদবির দেন না। ইমাম সাহেবের ব্যাপারে কেউ হয় তো ভুল তথ্য দিয়েছে। ইমাম আবু সাইদ নয়, বরং তাদের আশপাশের অন্যান্য মসজিদের ইমামরা ঝাঁড়ফুঁক ও তদবির দিয়ে থাকেন বলে দাবি তার।
Leave a Reply