শনিবার, ২৮ Jun ২০২৫, ০১:১৮ পূর্বাহ্ন

প্রধান পৃষ্ঠপোষকঃ মোহাম্মদ রফিকুল আমীন
উপদেষ্টা সম্পাদকঃ জহির উদ্দিন স্বপন
সম্পাদক মণ্ডলীর সভাপতিঃ এস. সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টু
প্রধান সম্পাদকঃ লায়ন এস দিদার সরদার
সম্পাদকঃ কাজী মোঃ জাহাঙ্গীর
যুগ্ম সম্পাদকঃ মাসুদ রানা পলাশ
সহকারী সম্পাদকঃ লায়ন এসএম জুলফিকার
সংবাদ শিরোনাম :
সংবাদ সম্মেলন করে কয়েকটি স্থানীয় পত্রিকা ও অনলাইন নিউজ পোর্টালের বিরুধ্যে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশের অভিযোগ আনলেন গৌরনদীর বিএনপি নেতা সজল সরকার স্বানাপ সিন্ডিকেটে বন্ধি জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতাল গৌরনদীতে বিএনপি’র গণঅবস্থান কর্মসূচি পালিত কোন অন্যায়কে প্রশ্রয় দেননি বলেই বেগম জিয়া ‘একজন আপোষহীন নেত্রী’-আবু নাসের মো: রহমাতুল্লাহ আন্তর্জাতিক সাংবাদিক আইনি প্রতিকার ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এক জাঁকজমকপূর্ণ ইফতার দোয়া মাহফিল রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মকান্ডে প্রশংসিত বরিশাল উত্তর জেলা নারী নেত্রী বাহাদুর সাজেদা বরিশালে সাংগঠনিক সফরে আসছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব ডা: মাহমুদা মিতু দুই দিনের সফরে আজ বরিশাল আসছেন অতিথি গ্রুপ অব কোম্পানির এমডি লায়ন সাইফুল ইসলাম সোহেল  পিরোজপুর ভান্ডারিয়ার যুব মহিলা লীগ নেত্রী জুথি গ্রেফতার গৌরনদীতে তিন দফা দাবি আদায়ে ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল উপজেলা প্রশাসনকে ১৫ দিনের আল্টিমেটাম
করোনা প্রার্দুভাবের রেস না কাটতেই, অ্যাসাইনমেন্টের নামে স্কুলগুলোতে অধিক টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ

করোনা প্রার্দুভাবের রেস না কাটতেই, অ্যাসাইনমেন্টের নামে স্কুলগুলোতে অধিক টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ করোনাকালে বিশেষ পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেয়ার জন্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিতে ব্যস্ত হয়ে পরেছেন বরিশাল জেলার বিভিন্ন উপজেলার বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো।এসব স্কুলের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জানান, জনপ্রতি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে দুই হাজার থেকে পাঁচ হাজার পর্যন্ত টাকা দাবি করছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। অপরদিকে টাকা তোলার বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মোঃ ইউনুস বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পরপরই বিদ্যালয়গুলোকে হুশিয়ারি দিয়ে নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। এভাবে টাকা তোলার কোনো অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের স্বীকৃতি স্থগিত করে বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, করোনার কারণে চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে দেশের সব সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ন্যায় বরিশালের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও বন্ধ রয়েছে। সর্বশেষ দেয়া নির্দেশনা অনুযায়ী, আগামী ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত খুলবে না স্কুল-কলেজ।
ক্লাস বন্ধ থাকলেও শিক্ষার্থীদের শ্রেণি উন্নয়ন প্রশ্নে মেধা যাচাইয়ের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।গত ৩১ অক্টোবর শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একটি নির্দেশনা পাঠানো হয় সব মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। তাতে ছয় সপ্তাহে ছয়টি মেধা যাচাই পরীক্ষার পাশাপাশি সিলেবাস নির্ধারণ এবং প্রশ্নের নমুনাও দিয়ে দেয়া হয় নির্দেশনায়। মন্ত্রণালয়ের ওই চিঠিতে অভিভাবকদের ডেকে সিলেবাস এবং নমুনা প্রশ্ন বিতরণের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে ছয় সপ্তাহে ছয়টি অ্যাসাইনমেন্ট সম্পন্ন করে স্কুলে জমা দিতে বলা হয়েছে।সূত্রে আরও জানা গেছে, মন্ত্রণালয় থেকে আসা চিঠিতে বলা হয়েছে অ্যাসাইনমেন্ট অনুযায়ী মেধা যাচাইয়ের কথা। তা-ও আবার বাড়িতে থেকে সেই মেধা যাচাইয়ে অংশ নেবে শিক্ষার্থীরা। স্কুলে গিয়ে সিলেবাস আর নমুনা প্রশ্নপত্র নিয়ে আসবেন অভিভাবকরা। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা বাড়িতে বসে অ্যাসাইনমেন্ট সম্পন্ন করবে এবং অভিভাবকরা তা স্কুলে জমা দেবেন।
সূত্রে আরও জানা গেছে, সবকিছু এভাবে স্পষ্ট থাকা সত্বেও ওই চিঠির সূত্র ধরেই বরিশালের প্রতিটি উপজেলায় শুরু হয় স্কুলের বেতন ও পরীক্ষার ফি বাবদ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের প্রতিযোগীতা। করোনা পরিস্থিতিতে যেখানে শিক্ষার্থীদের সুস্থ থাকা নিশ্চিত করতে স্কুল বন্ধ রেখেছে সরকার, সেখানে টাকা তোলার জন্য অনেক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অভিভাবকদের না ডেকে শিক্ষার্থীদের স্কুলে যেতে বলছে। এমনকি অভিভাবকদের কাছ থেকে টাকা আনতে কোমলমতি এসব শিক্ষার্থীদের ওপর চাঁপ সৃষ্টি করে বাধ্য করা হচ্ছে।গৌরনদী পৌর এলাকার পালরদী মডেল হাইস্কুল এন্ড কলেজের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক মোঃ শাহেআলম বলেন, স্কুল থেকে ফোন করে আমার সন্তানকে বিদ্যালয়ে নিয়ে দুই হাজার টাকা দিতে বলা হয়। মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি এসেছে উল্লেখ করে স্কুলের এক শিক্ষক বলেন, পরীক্ষার ফি এবং বকেয়া যতো পাওনা আছে তা মিলিয়ে এই টাকা দেয়া না হলে পরীক্ষা দেয়া যাবেনা।
নগরীর জগদীশ স্বারস্বত মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীর অভিভাবক বলেন, পরীক্ষার কথা বলে আমার মেয়ের কাছে স্কুল থেকে শিক্ষকরা ১ হাজার ৮০০ টাকা চেয়েছেন। নগরীর দলিলউদ্দিন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীর বাবা বলেন, আমাকে ২ হাজার ১০০ টাকা জমা দিতে বলা হয়েছে। আমি একজন ক্ষুদ্র চা বিক্রেতা। করোনার কারণে এমনিতেই সংসার চালানো মুশকিল হয়ে পরেছে। এখন স্কুলের শিক্ষকদের দাবিকৃত এই টাকা আমি কোথা থেকে দেব? খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার দশটি উপজেলার হাতেগোনা কয়েকটি স্কুল ব্যতিত অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে পরীক্ষার কথা বলে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেয়া হচ্ছে। মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার কাজীরহাট এলাকার একটি বিদ্যালয়ে টাকা নেয়া হচ্ছে ‘যে যা দিতে পারে’ সেই ভিত্তিতে। কোথাও কোথাও টাকা না দিলে পরীক্ষা দেয়া যাবেনা বলেও হুমকি দেয়া হচ্ছে। হঠাৎ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে এতো টাকা চাওয়ায় মধ্য এবং নিন্মবিত্ত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা পরেছেন মহাবিপাকে।টাকা তোলার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে পরীক্ষার নাম করে টাকা চাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়গুলোর প্রধানরা।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, যারা উপবৃত্তি পায়, তাদের কাছ থেকে কোনো টাকা নেয়া হচ্ছেনা। তারা আরও বলেন, করোনার শুরু থেকে অদ্যবর্ধি বিদ্যালয়ের কোনো আয় নেই। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। তবে কাউকে বাধ্য করা হচ্ছেনা দাবি করে শিক্ষকরা আরও বলেন, যারা সামর্থ্যবান, কেবল তাদের কাছ থেকেই টাকা নেয়া হচ্ছে।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পরীক্ষার নামে টাকা তোলার ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে রয়েছেন বাবুগঞ্জ উপজেলার পূর্ব চাঁদপাশা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক গিয়াস উদ্দিন জাহাঙ্গীর। ভূক্তভোগি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জানান, প্রধানশিক্ষকের বিরুদ্ধে অতীতের ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির মতো এবারও শিক্ষার্থীদের একপ্রকার জিম্মি করে জোরপূর্বক টাকা আদায় করা হচ্ছে।
বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ন সচিব মোঃ বজলুর রশিদ বলেন, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছ থেকে প্রধানশিক্ষকের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক পরীক্ষার নামে টাকা আদায়ের বিস্তার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরবর্তীতে কমিটির অন্যান্য সদস্যদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে প্রধানশিক্ষক গিয়াস উদ্দিন জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।তিনি আরও বলেন, ইতিপূর্বে ওই প্রধানশিক্ষক খামখেয়ালীভাবে স্কুলের বিভিন্ন ফান্ডের টাকা আত্মসাত ও শিক্ষার্থীদের পাশ করানোর নামে টাকা উত্তোলনের বিস্তার অভিযোগ রয়েছে। অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমান অর্থ আত্মসাতের মাধ্যমে তিনি (প্রধানশিক্ষক) বরিশাল নগরীর কাউনিয়া এলাকার জানুকি সিংহ রোডে গড়ে তুলেছেন শুভ ভিলা নামের দুই ইউনিটের পাঁচতলা বিশিষ্ট বিলাসবহুল বাড়ি। দুদকের মাধ্যমে যার সঠিক তদন্ত করলেই আসল রহস্য বেরিয়ে আসবে।এ ব্যাপারে অভিযুক্ত প্রধানশিক্ষক গিয়াস উদ্দিন জাহাঙ্গীরের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সকল অভিযোগ অস্বীকার করে এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ করেন।সচেতন নাগরিক কমিটির জেলা সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত প্রফেসর শাহ্ সাজেদা বলেন, করোনাকালে মানুষ এমনিতেই বিপদে আছেন। এসময়ে একসাথে ৭/৮ মাসের বেতন একসাথে চাওয়া অমানবিক। তাছাড়া এমপিওভুক্ত বিদ্যালয়গুলো সরকারের কাছ থেকে বেতনের সিংহভাগ পায়। বিদ্যালয় ভবন নির্মাণসহ আরও অনেক সহায়তা দেয় সরকার। সেখানে এভাবে টাকা তোলার কোনো যৌক্তিকতা নেই।সুত্র, আই নিউজ

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017-2024 Dokhinerkhobor.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com