বিশেষ প্রতিনিধি॥ অবশেষে সকল জল্পনা-কল্পনা ও গুজব-গুঞ্জনের অবসান ঘটিয়ে প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশাল সিটি কর্পোরেশন (বিসিসি) নির্বাচনে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক নৌকা পেলেন ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট কালরাতে বাবা ও মায়ের সঙ্গে অলৌকিকভাবে বেঁেচ যাওয়া স্বজনের রক্তে ভেজা সেই সময়ের দেড় বছরের শিশু আজকের বরিশালের রাজনীতির ‘আইকন’ যুবরতœ সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ। সকল সমীকরণ শেষে শেষ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি দেশরতœ শেখ হাসিনা সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর ওপরই আস্থা রাখলেন। শুক্রবার রাত ১০টার দিকে আওয়ামী লীগ সভাপতির ঢাকার ধানমন্ডি ৩/এ কার্যালয় থেকে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা স্বাক্ষরিত মনোনয়নের নৌকার টিকিট গ্রহণ করা হয়। এদিকে সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ সিটি নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ায় গোটা বরিশালে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা আনন্দে উদ্বেলিত। মনোনয়নের খবর পেয়ে বরিশাল নগরীসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় নেতা-কর্মীরা তাৎক্ষনিক আনন্দ মিছিল বের করে। প্রসঙ্গত সাদিক আব্দুল্লাহ স্বল্প সময়ের মধ্যে নিজের মেধা, প্রজ্ঞা ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতা দিয়ে পাদ প্রদীপের আলোয় এসে উদীয়মান মঙ্গল সূর্য নেতায় পরিণত হন। তার আলোয় আলোকিত বরিশালের আওয়ামী রাজনীতির অঙ্গন। বাবা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাগ্নে মন্ত্রী পদমর্যাদার পার্বত্য শান্তি চূক্তি বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ কমিটি ও স্থাণীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি এবং বরিশাল জেলা আ’লীগের সভাপতি সিংহ পুরুষ খ্যাত জাতীয় নেতা আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ এমপি’র পদাঙ্ক অনুসরণ করে মুজিব অন্তঃ প্রাণ সাদিক আব্দুল্লাহ নিজেকে শুধু যোগ্য উত্তরসুরী হিসেবেই নয় দলীয় নেতা-কর্মীদের আশা ও ভরসার প্রতীক হিসেবেও নিজেকে গড়ে তুলতে পেরেছেন। শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীও তার ওপর আস্থা রাখলেন। সাদিক আব্দুল্লাহকে ঘিরেই বরিশালের মেয়র পদটি পুনরুদ্ধার করার স্বপ্ন-সাধ বুকে লালণ করছে দলীয় নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা। বিএনপির কাছে বেদখল হয়ে যাওয়া সিটি মেয়রের পদটি পুনরুদ্ধার করার একমাত্র সক্ষমতা তারই রয়েছে বলে রাজনৈতিক অভিজ্ঞ মহলের ধারণা। তিনি বিজয়ী হলে বরিশাল নগরীকে তিলোত্তমা এক অপরূপা শহরে রূপান্তর করতে পারবেন বলেও সবার বিশ^াস। বিশেষভাবে উল্লেখ্য ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট কালরাতে রক্তঝরা অচিন্তনীয় বিয়োগান্তক অধ্যায়ের শোকগাথাঁয় জাতির জন্ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের সঙ্গে দাদা তৎকালীণ কৃষিমন্ত্রী ও কৃষক কুলের নয়নের মনি আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ও চার বছরের ভাই সুকান্ত আব্দুলাহ বাবুসহ পরিবারের অনেক স্বজনকে হারান সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ। সেদিন রাতে মৃত্যুর দুয়ার থেকে মহান আল্লাহ রাব্বুল আল আমিনের অপার কৃপায় অলৌকিকভাবে বাবা আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ, বুলেটবিদ্ধ মা শাহানারা আব্দুল্লাহ ও তার কোলে থাকা দেড় বছরের শিশু পুত্র সাদিক আব্দুল্লাহ প্রাণে বেঁচে যান। শরীরে বেশ কয়েকটি বুলেট বহন করে অসহ্য যন্ত্রনা নিয়ে মা শাহানারা আব্দুল্লাহ ও বাবা আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর মতো সাদিক আব্দুল্লাহও আ’লীগের সুখ-দুঃখের অংশীদার। ৭৫’র পর সেনাশাসক জিয়াউর রহমান, স্বৈরশাসক এরশাদ ও বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে (৯১-৯৬ ও ২০০১-২০০৬) মিথ্যা মামলাসহ নানাভাবে আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ ও তার পরিবারকে হয়রানির শিকার হতে হয়। ১/১১’র সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলেও ষড়যন্ত্রের শিকার হন তারা। তবে সকল চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রের মাঝেও এ পরিবারটি বরিশালে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের একমাত্র ভরসাস্থল ও শেষ ঠিকানা।
Leave a Reply