বানারীপাড়া প্রতিনিধি ॥ উজিরপুরের গুঠিয়ায় স্ত্রীর যৌতুক মামলায় মাইনুল ইসলাম খান (৩০) নামের এক প্রবাসীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মামলা সূত্রে জানা গেছে ২০১২ সালে উজিরপুর উপজেলার গুঠিয়া মডেল ইউনিয়নের চাঙ্গুরিয়া গ্রামের মৃত মোতালেব হোসেন খানের ছোট ছেলে সিঙ্গাপুর প্রবাসী মাইনুল ইসলাম খানের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী বিমানবন্দর থানার চন্দ্রপাড়া গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সেনা বাহিনীর সদস্য ফারুক আহম্মেদের মেজ মেয়ে তৎকালীন গুঠিয়া আইডিয়াল কলেজের বিএ প্রথম বর্ষের ছাত্রী শাকিলা আক্তারের সামাজিক ভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর পরই শাকিলার কাছে মাইনুল ও তার স্বজনেরা বাড়িতে বিল্ডিং করার কথা বলে ৫ লাখ ও স্বর্নালঙ্কার,টিভি ও ফ্রিজ সহ আসবাব পত্র ক্রয় করে দেবার জন্য যৌতুক দাবী করেন। ্ বিয়ের এক মাস পরে মাইনুল তার কর্মস্থল সিঙ্গাপুরে চলে যায়। সেখানে যাওয়ার পর সে মুঠোফোনে শাকিলাকে তার ওই যৌতুকের দাবীতে অব্যাহত চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। মাইনুল ছাড়াও তার মা মনোয়ারা বেগম,বড় ভাই মিজানুর রহমান খান ও ভাইয়ের স্ত্রী সীমা যৌতুকের দাবীতে শাকিলার ওপর মানসিক ও শারিরীক নির্যাতন করতে থাকে। তাদের এ নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে এক পর্যায়ে শাকিলা ২০১৫ সালে তার বাবার বাড়িতে এসে আশ্রয় নেয়। এর কিছুদিন পর মাইনুল তার সঙ্গে সম্পূর্ণ যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। মাইনুল ও তার পরিবার যৌতুকের দাবী থেকে সরে গিয়ে সংশোধন হয়ে তাকে ফিরিয়ে নেবে এ প্রত্যাশার শাকিলা তখন কোন আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ না করে অপেক্ষার প্রহর গুনতে থাকেন। মাইনুল প্রায় ৬ বছর পরে দেশে ফিরে গত ২৮ মে চন্দ্রপাড়া গ্রামে হঠাৎ করে শাকিলার বাবার বাড়িতে গিয়ে হাজির হয়ে পূনরায় যৌতুক দাবী করে। তার দাবী পূরণ করা হলে তাকে ফিরিয়ে নেওয়া হবে অন্যথায় ৭ দিনে মধ্যে সে অন্যত্র বিয়ে করবে বলে শাকিলাকে হুমকি দেয়। শাকিলা যৌতুক দিতে তার বাবার অক্ষমতার কথা জানালে মাইনুল এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে মারধর করে । এসময শাকিলাকে যৌতুক লোভী মাইনুল রক্তগঙ্গা বইয়ে দেওয়া ও এসিড মেরে মুখ জ্বলসে দেওয়ার হুমকিও দেয়। এ ঘটনায় শাকিলা আক্তার বাদী হয়ে মাইনুল ইসলাম খান,শাশুরী মনোয়ারা বেগম,ভাসুর মিজানুর রহমান খান ও জা সীমার বিরুদ্ধে বরিশাল আদালতে যৌতুক ও নারী নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় বিচারক আসামী মাইনুল খানের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারী করলে গত ২৮ মে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে উজিরপুর থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠায়। এদিকে মাইনুল খান গ্রেফতার হওয়ার পরে তার স্বজন ও ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা এসিড মেরে মুখ জ্বলসে দেওয়া,রক্ত গঙ্গা বইয়ে দেওয়া ও প্রাণ নাশ সহ নানা হুমকি ধামকি দেওয়ায় শাকিলা ও তার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতার মাঝে অনেকটা গৃহবন্দি অবরুদ্ধ অবস্থায় দিনাতিপাত করছেন। মাইনুল খান জামিনে বের হয়ে বড় ধরণের কোন ক্ষতি করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন শাকিলা ও তার পরিবার।
Leave a Reply