নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ দেশ স্বাধীনের ৪৯ বছর পেরিয়ে গেলেও পাকিস্তানী বাহিনীর সাথে সম্মুখযুদ্ধে শহীদ হওয়া বরিশালের আগৈলঝাড়ার ১৭শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের কবর আজও সংরক্ষণ করা হয়নি। মুক্তিযোদ্ধা এমএ তাহের ও মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হক হাওলাদার সাংবাদিকদের বলেন,৭১ এর রনাঙ্গন কাপানো ওই সকল শহীদ যোদ্ধাদের দরিদ্র পরিবার সদস্যদের আর্থিক সঙ্গতি না থাকায় পারিবারিক উদ্যোগে বা রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে তাদের কবরগুলো আজও সংরক্ষণ না করায় মুছে যেতে বসেছে শহীদদের শেষ স্মৃতিচিহ্ন কবরস্থান।
পরবর্তী প্রজম্ম জানবেও না দেশের স্বাধীনতার জন্য যারা শহীদ হয়েছেন তারা কে কোথায় চির নিদ্রায় শুয়ে আছেন? বছর ঘুরে বছর আসে, অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালিত হয় মহান বিজয় দিবস। আর বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে শহীদ পরিবার সদস্যদের সংবর্ধনার নামে ভাগ্যে জোটে একটি রজনীগন্ধার ডাটা ও সম্মাননার ৩শ টাকার প্রাইজবন্ড। আর্থিক সঙ্গতি থাকা দু’একটি পরিবার তাদের প্রিয়জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার কবরটি সংরক্ষণ করতে পারলেও অধিকাংশ কবরগুলো এখনও সংরক্ষণ করা যায়নি। কারণ, দারিদ্রতার কষাঘাতে জর্জরিত ওই পরিবারগুলোর ভাগ্যে জোটেনি সরকারী বা রাজনৈতিক কোন পৃষ্ঠপোষকতা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ থেকে ১৬ডিসেম্বর বিজয় দিবসের পতাকা ওড়া পর্যন্ত পাকহানাদার বাহিনীর সাথে সম্মুখযুদ্ধে শহীদ হওয়া আগৈলঝাড়া উপজেলার বীর যোদ্ধারা হলেন, গৈলা গ্রামের সিপাহী আলাউদ্দিন, শিহিপাশা গ্রামের মোস্তফা হাওলাদার, নুরুল ইসলাম হাওলাদার, মান্নান মোল্লা, সেরাল গ্রামের সিপাহী সিরাজুল ইসলাম, ভালুকশী গ্রামের আব্দুল মান্নান খান, বাশাইল গ্রামের গোলাম মাওলা, সেকেন্দার আলী, আব্দুল আজিজ শিকদার, বসুন্ডা গ্রামের আব্দুল হক হাওলাদার, পয়সা গ্রামের শামসুল হক, ফুল্লশ্রী গ্রামের মনসুর আহম্মদ, চাঁদত্রিশিরা গ্রামের তৈয়ব আলী বখতিয়ার, বেলুহার গ্রামের আব্দুস ছালাম, বরিয়ালী গ্রামের মহসীন আলী ও রতœপুর গ্রামের ফজলুল হক হাওলাদার। সেরাল গ্রামের সিপাহী সিরাজুল ইসলাম বরিশালের তালতলা যুদ্ধে শহীদ হন। ওই সময় তার কর্মস্থল বরিশালে কবর দেওয়া হলে পরবর্তীতে স্বজনদের ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অর্থ সংকটের কারণে আজও তার নিজ বাড়িতে প্রিয়জনের কবরটি স্থানান্তর করতে পারেনি স্বজনেরা।
এ ব্যাপারে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক সহকারী কমান্ডার মোঃ সিরাজুল হক সরদার সাংবাদিকদের বলেন, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ থেকে ১৭ শহীদের কবরস্থান সংরক্ষণ করার কোন ব্যবস্থা নেই। তবে ১৭ শহীদের কবরস্থান সরকার থেকে প্রকল্পের মাধ্যমে সংরক্ষণ করা হবে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.আবুল হাসেম বলেন, আমি নতুন এসেছি। আমি জেনে আপনাকে জানাবে। সাধারণত এগুলো বাস্তবায়ন করে এলজিইডি বিভাগসহ অন্যন্যা বিভাগ।’
Leave a Reply