দখিনের খবর ডেস্ক ॥ করোনাভাইরাসের টিকা নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে প্রায় ৭৫ শতাংশ মানুষ (১৮ বছরের বেশি বয়সী)। দেশের আট জেলায় সাড়ে তিন হাজারের বেশি মানুষের ওপর করা এক জরিপে টিকা নেয়ার এ বিষয়টি উঠে এসেছে। রাজধানীর নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্লোবাল হেলথ ইনস্টিটিউট এ জরিপ করেছে। জরিপে সহায়তা করেছে সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার, রংপুর হাইপারটেনশন রিসার্চ সেন্টার ও ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ (ইউল্যাব)। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব হেলথ অ্যান্ড লাইফ সায়েন্সের ডিন হাসান মাহমুদ রেজা এবং নর্থ সাউথের গ্লোবাল হেলথ ইনস্টিটিউটের পরিচালক আহমদ হোসেন এ জরিপে নেতৃত্ব দেন। জরিপের বিষয়ে হাসান মাহমুদ রেজা জানান, এ জরিপের মাধ্যমে মানুষের মনোভাব বোঝার চেষ্টা করা হয়েছে। টিকা দেয়ার আগে এ সম্পর্কে মনোভাব জানা জরুরি। কারণ, অনেক লোক টিকা নিতে না চাইলে এমন কৌশল নিতে হবে, যেন সবাই টিকা নিতে আগ্রহী হয়। জানা গেছে, গত ১২ ডিসেম্বর ২০২০ থেকে ৭ জানুয়ারি ২০২১ পর্যন্ত রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী, খুলনা, জামালপুর, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও পিরোজপুরে জরিপ করা হয়। মোট ৩ হাজার ৬৪৭ জন এ জরিপে অংশ নেন। শহর, গ্রাম ও বস্তি থেকে দৈবচয়ন পদ্ধতিতে অংশগ্রহণকারীদের বাছাই করা হয়। মুখোমুখি সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীদের আর্থসামাজিক অবস্থা ও টিকা-সম্পর্কিত ভাবনার তথ্য সংগ্রহ করা হয়। জরিপের ফলাফল বলছে, একটি কার্যকর ও নিরাপদ টিকা নিতে আগ্রহী ৭৪ দশমিক ৬ শতাংশ উত্তরদাতা। ৭ দশমিক ৮ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, তারা টিকা নিতে একেবারেই ইচ্ছুক নন। আর ১৭ দশমিক ৬ শতাংশ উত্তরদাতা টিকা নেয়ার ব্যাপারে দ্বিধাগ্রস্ত ছিলেন। জরিপে অংশগ্রহণকারী ৭৬ শতাংশ পুরুষ ও ৭৩ শতাংশ নারী টিকা নিতে ইচ্ছুক। জরিপে দেখা গেছে, দিনমজুরদের মধ্যে টিকার গ্রহণযোগ্যতা অন্য পেশাজীবীদের তুলনায় কম। রিকশাচালক, ফেরিওয়ালা, ঠেলাগাড়ি চালকদেরও দিনমজুর হিসেবে এ গবেষণায় বিবেচনা করা হয়েছে। ৪৬ দশমিক ৮ শতাংশ দিনমজুর টিকা নেয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। চিকিৎসক ও নার্সদের ৮১ শতাংশ টিকা নিতে আগ্রহী। বসবাসের স্থানের সঙ্গে টিকা বিষয়ে আগ্রহের তারতম্য দেখা গেছে। গ্রামের ৬৪ শতাংশ মানুষ টিকা নিতে তাদের ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন। শহরে এ হার ৮১ শতাংশ। আর শহরের বস্তিতে এ হার ৫৩ শতাংশ। জরিপের ফলাফল বলছে, ৬০ বছরের বেশি বয়সী ৬১ শতাংশ মানুষ টিকা নিতে চান। ৩০ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে এ হার ৭৪ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ এবং ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সীদের মধ্যে এ হার যথাক্রমে ৭৩ ও ৭৮ শতাংশ। গত ২০ জানুয়ারি বাংলাদেশকে শুভেচ্ছাস্বরূপ সিরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ২০ লাখ ডোজ করোনার টিকার পাঠায় ভারত। আগামী ২৭ জানুয়ারি টিকা দেয়া শুরু হবে। এ ছাড়া গতকাল সোমবার বেলা ১১টা ২০ মিনিটে সরকারি অর্থায়নে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের চুক্তি হওয়া করোনা টিকাও দেশে এসে পৌঁছেছে।
Leave a Reply