নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ নতুন বছরে বরিশাল নগর সড়কগুলোকে যানজট ও চাঁদাবাজমুক্ত করে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাকে পুরোপুরি ডিজিটালাইজড করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। তার সঙ্গে সঙ্গে নগরের প্রবেশদ্বার দপদপিয়া, কালিজিরা ও রহমতপুর থেকে শুরু করে পুরো নগরকে সিসি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসা হবে। এর মাধ্যমে সড়কের বাস্তব চিত্র দেখা যাবে এবং সড়কে দুর্ঘটনা ঘটলে ভিডিও ফুটেজ দেখে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. জাকির হোসেন মজুমদার। সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরের ব্যস্ততম এলাকাগুলোতে ট্রাফিক পুলিশের তৎপরতা বাড়াতে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন নগরবাসী। হেলমেট ও লাইসেন্স বিহীন মোটরসাইকেল চালকদের প্রতি কঠোর নজরদারি থাকায় দিন দিন মামলার সংখ্যা বেড়েই চলছে। সড়কে উন্নয়নের নামে বিভিন্ন মহলের চাঁদাবাজি বন্ধ করতে রূপাতলী ও নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ট্রাফিক পুলিশের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। চলতি বছরের শুরু থেকেই নগরবাসীকে মহামারি করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় স্বাস্থ্যবিধি মানা, জনসচেতনতা বাড়াতে নগরবাসীর মধ্যে মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, লিফলেট ও স্টিকার বিতরণ করে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে নগর ট্রাফিক বিভাগ। জাকির হোসেন জানান, ২০২০ সালে মহামারি করোনার মধ্যেও নয় হাজার ২১৮টি মামলা হয়েছে। এতে জরিমানা করা হয়েছে আট কোটি ৭৩ লাখ ৮০ হাজার ৫০০ টাকা। এরমধ্যে আট হাজার ৪৬১টি মামলা নিষ্পত্তি হয়ে দুই কোটি ৪১ লাখ পাঁচ হাজার ৯০০ টাকা রাজস্ব আদায় করা হয়েছে। বাকি ৭৫৭টি মামলা নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে। তিনি আরও জানান, ২০২০ সালে ৯৩৮টি যানবাহন আটক করা হয়েছে। এরমধ্যে ৮৪৭টি যানবাহন অবমুক্ত করা হয়েছে। মুলতবি করা হয়েছে ৯১টি। উপ-পুলিশ কমিশনার জানান, ২০১৯ সালের ১ নভেম্বর থেকে সড়ক পরিবহন আইন বলবৎ করা হলেও নতুন আইনে সাজার পরিমাণ বেশি হওয়ায় জনগণকে নতুন আইন সম্পর্কে সচেতন করার লক্ষ্যে প্রথম ৫/৬ মাস জনসচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারণা চালানো হয়েছে। এ সময় অল্প পরিসরে মামলা দেওয়া হয়েছে। পরে মহামারি করোনার কারণে নানা রকম প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করায় মামলার পরিমাণ কম হয়েছে। এছাড়া করোনাকালে নগর ট্রাফিক বিভাগের ১৫ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তারা সুস্থ হয়ে বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বলেন, দেশে বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। মানুষ ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরছেন এবং কর্মচঞ্চল হয়ে উঠছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে নতুন সড়ক পরিবহন আইন কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হবে। এজন্য ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে নিয়মিত পথসভা ও প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে। জনগণ সচেতন হলে সড়কে শৃঙ্খলা চলে আসবে। যানজট কমে যাবে। তাই নগরবাসীকে নতুন সড়ক পরিবহন আইন মেনে চলতে উদ্বাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
Leave a Reply