নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ তৃতীয় ধাপের পৌরসভা নির্বাচনে বরিশাল বিভাগের ৬ পৌরসভায় নির্বাচন আজ। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, বিস্ফোরণসহ অশান্ত ছিল সংশ্লিষ্ট পৌর এলাকাগুলো। পৌর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীও চূড়ান্ত সতর্কতায় রয়েছে। বরগুনা: আজ বরগুনা পৌরসভার ভোট। তৃতীয় ধাপের পৌরসভা নির্বাচনের অংশ হিসেবে বরগুনা পৌরসভা নির্বাচনে এবার মেয়র পদে ৯, সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ১৪ এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩৩ জনসহ মোট ৫৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করেছেন। ভোট দেবে ২৬ হাজার ভোটার। সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য জেলা নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে সকল প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে। পৌরসভার ৯ টি ওয়ার্ডের প্রতিটি কেন্দ্রে ১ জন করে ৯জন, মোবাইল টিমে ৩ জন, স্ট্রাইকিং টিমে ৩জন ও ৩ জন জুডিশিয়াল মেজিস্ট্রেট সহ মোট ১৮ জন মেজিস্ট্রেট দ্বায়িত্ব পালন করবেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ২ প্লাটুন বিজিবি, ১০ জন করে ৩টি টিমে র্যাবের ৩০ জন সদস্য, মেবাইল পুলিশের ৩ টি, স্ট্রাইকিং ফোর্সের ৫টি টিম এছাড়াও প্রতিটি কেন্দ্রে ৭জন করে পুলিশ সদস্য সহ ১০ জন করে আনসার সদস্য দ্বায়িত্ব পালন করবেন। সকালে কেন্দ্রগুলোতে পাঠানো হবে ব্যালট পেপার। নির্বাচনে অ্যাডভোকেট কামরুল আহসান মহারাজের বড় প্রতিদ্ব্ন্দী হিসেবে ভাবা হচ্ছে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী মো. শাহাদাত হোসেন ও বিএনপির অ্যাডভোকেট আবদুল হালিমকে। জেলা রির্টানিং কর্মকর্তা দিলীপ কুমার হাওলাদার গণমাধ্যমকে বলেছেন, সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করার জন্য নির্বাচন কমিশন সকল প্রন্তুতি গ্রহন করেছে। গৌরনদী: ১৯৯৬ সালের ২৬ ডিসেম্বর গঠিত গৌরনদীর পৌরসভার মোট আয়তন সাড়ে ১১ বর্গকিলোমিটার। ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত ‘ক’ শ্রেনীর এই পৌরসভায় মোট জনসংখ্যা অর্ধ লক্ষাধিক। ৩৩ হাজার ৪শ’ ৮জন ভোটার অধ্যুষিত এই পৌরসভা নারী ভোটার ১৬ হাজার ৬শ’ ৯জন এবং ১৬ হাজার ৭শ’ ৯৯জন পুরুষ ভোটার। এখানে ১৪টি কেন্দ্রে ভোট কক্ষ ৯৬টি। আগামি ৩০ জানুয়ারি ভোটে জনবান্ধব একজনকে মেয়র পদে বসাতে চায় স্থানীয় ভোটাররা। এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন আওয়ামী লীগ দলীয় বিদায়ী মেয়র হারিছুর রহমান হারিছ এবং বিএনপি’র জহির সাজ্জাদ হান্নান। আওয়ামী লীগ প্রার্থী হারিছ নৌকার পক্ষে জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে দাবি করেন। এই অবস্থা বজায় থাকলে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী তিনি। অপরদিকে সুষ্ঠু ভোট নিয়ে শংকা বিএনপি প্রার্থী জহির সাজ্জাদ হান্নানের। ভোটাররা যার যার ভোট নিজে দিতে পাড়লে ধানের শীষের সু-নিশ্চিত বিজয় দেখেছেন তিনি। সকলের সহযোগীতায় সুষ্ঠু-সুন্দর নির্বাচনের ব্যাপারে আশাবাদী রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুরুল আলম। নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য প্রতিটি ওয়ার্ডে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এব্ং পুলিশ ছাড়াও, র্যাব, বিজিবি মোতায়েন মোতায়েন রাখার কথা বলেন তিনি। একই দিন অনুষ্ঠিত হবে জেলার মেহেন্দিগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচন। সেখানে আওয়ামী লীগের কামাল উদ্দিন খান, বিএনপি’র জিয়াউদ্দিন সুজন এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ইঞ্জিনিয়ার জাহাঙ্গীর হোসেন খোকন মেয়র পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। ৩ প্রার্থীই তাদের জয়ের ব্যাপারে আশাবাদের কথা জানিয়েছেন। মেহেন্দিগঞ্জ পৌরসভায় মোট ভোটার ২৫ হাজার ৮শ’ ৮৮। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৩ হাজার ১শ’ ৭৩ জন এবং নারী ভোটার ১২ হাজার ৭শ’ ১৫জন। ৯টি কেন্দ্রের ৭৫টি কক্ষে ভোট দেবেন তারা। তৃতীয় ধাপের পৌরসভা নির্বাচনে প্রচার প্রচারণায় সরগরম পিরোজপুর জেলার একমাত্র নির্বাচনী এলাকা নেছারাবাদ উপজেলার স্বরূপকাঠি পৌর সভার নির্বাচনী মাঠ। নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই নির্বাচনী প্রচারণায় মুখরিত হয়ে উঠছে গোটা পৌর এলাকা। সর্বত্র বিরাজ করছে নির্বাচনী আমেজ, সাজসাজ রব। হাট বাজার, পাড়ায় মহল্লায় সর্বত্রই ঝুলছে প্রার্থীদের ছবি ও প্রতীক সম্বলিত পোস্টার। পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে গোটা পৌর শহর। চলছে মাইকিং। নির্বাচনে মেয়র পদে ৬ জন, ৯টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩৭ জন এবং ৩টি ওয়ার্ডে সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ১২ জন প্রার্থী নির্বাচনী যুদ্ধে নেমেছেন। নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান মেয়র মো. গোলাম কবির নৌকা, বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সাবেক মেয়র মো. শফিকুল ইসলাম ফরিদ ধানের শীষ, বিএনপি,র বিদ্রোহী প্রার্থী বিএনপি নেতা মো. আবুল কালাম আজাদ নারিকেল গাছ, আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আওয়ামীলীগ নেতা মো. মাহমুদুর রহমান মোবাইল ফোন, আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী পৌর যুবলীগ সভাপতি শিশির কর্মকার জগ ও জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী মো. নুরুল ইসলাম লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে ভোটের লড়াইয়ে নেমেছেন। ৮ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী রেজাউল করিম মন্টুর মৃত্যুর কারণে ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদের নির্বাচন স্থগিত করেছে জেলা নির্বাচন অফিস। প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীরা ও তাদের কর্মী সমর্থকরা জোরেশোরে নির্বাচনী মাঠে নেমে পড়েছেন। ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। করছেন কুশল বিনিময় কামনা করছেন দোয়া ও সমর্থন। প্রচণ্ড শীতকে উপেক্ষা করে প্রার্থীরা ও তাদের কর্মী সমর্থকরা চালিয়ে যাচ্ছেন গণ সংযোগ, উঠান বৈঠক। প্রার্থনা করছেন কাংঙ্খিত ভোট। বিশেষ করে মহিলা ভোটারদের সমর্থনের আশায় বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন একের পর এক প্রার্থী ও তাদের কর্মী সমর্থকরা। চায়ের দোকান, হোটেল রেষ্টুরেন্ট, অফিস পাড়াসহ সর্বত্র চলছে প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনা পর্যালোচনা। প্রার্থীদের নিয়ে ভোটাররা কষছেন ভোটের হিসাব নিকাশ। সাধারণ ভোটাররা মুখ না খুললেও প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থীদের নিয়ে করছেন চুলচেরা বিশ্লেষণ। মিলাচ্ছেন ভোটের হিসাব নিকাশ। উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৬ দশমিক ৫১ বর্গ কিলোমিটার এলাকা নিয়ে ১৯৯৮ সনে স্বরূপকাঠি পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়। বিগত ২০০৫ সনে পৌরসভাটি দ্বিতীয় এবং ২০১২ সনে প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত হয়। সহকারি রিটানির্ং অফিসার ও উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো. ইউসুফ হারুন জানান স্বরূপকাঠি পৌরসভায় মোট ভোটার সংখ্যা ১৪ হাজার ৯২১ জন। যার মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭ হাজার ৩২৫ জন এবং মহিলা ভোটার ৭ হাজার ৫৯৬ জন। নির্বাচন কমিশন অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে বদ্ধপরিকর। আগামি ৩০ জানুয়ারি পৌরবাসি তাদের প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে নির্বাচন করবেন তাদের পৌর পিতা।
Leave a Reply