দখিনের খবর ডেস্ক ॥ চলমান পৌরসভা নির্বাচনে অনিয়ম নিয়ে কঠোর অবস্থানে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক্ষেত্রে ভোটের ফলাফল বাতিলসহ অনিয়মকারীদের শাস্তির আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি। ইসি কর্মকর্তারা জানায়, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত পৌরসভা নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে কয়েকটি পৌরসভায় বেশ অনিয়ম হয়েছে। সামনের দু’টি ধাপে যেন পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সেজন্য যে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট পৌরসভাগুলোকে তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। কর্মকর্তারা জানান, গত ৩০ জানুয়ারি তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত নলসিটি, ভূঞাপুর ও কলারোয়া পৌরসভার ফলাফল স্থগিত রাখার নির্দেশনা দিয়েছে কমিশন। তদন্তে অনিয়মের প্রমাণ মিললে বাতিল হতে পারে পুরো ভোট। এজন্য রিটার্নিং কর্মকর্তাদে দ্রুত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। সামনের নির্বাচনগুলো সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিশনাররা দফায় দফায় মাঠ প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করে দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন। সোমবার (৮ ফেব্রুয়ারি) নির্বাচন কমিশনার বেগম কবিতা খানম বৈঠক করেছেন রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের মাঠ প্রশাসনের সঙ্গে। চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের পৌরসভা নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারি) নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী বৈঠক করবেন। এছাড়া নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম খুলনা ও বরিশাল বিভাগের পৌরসভা নির্বাচন নিয়ে ১০ ফেব্রুয়রি বৈঠক করেছেন। আর জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি)। ইসির অবস্থান প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার বেগম কবিতা খানম বলেন, চতুর্থ ধাপে ৫৬টি এবং পঞ্চম ধাপে ৩১টি পৌরসভা নির্বাচন হতে যাচ্ছে। এই নির্বাচন কেন্দ্র করে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের যেখানে যেখানে নির্বাচন আছে সেখানকার রিটার্নিং অফিসার, ডিসি, এসপি, সহাকারী রিটার্নিং অফিসার, পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করেছি। আমার সঙ্গে ইসি সচিব অনলাইনে যুক্ত ছিলেন। ভোট যাতে কোনোভাবেই বিঘ্নিত না হয়, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি কঠোরভাবে যাতে নিয়ন্ত্রণ করা হয় এবং ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা যারা আছেন ভোটকেন্দ্র ও ভোটকক্ষের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য তাদের যেন সঠিকভাবে দিক নির্দেশনা দেওয়া হয় সেসব নিয়ে কথা হয়েছে। ‘সুষ্ঠু একটা পরিবেশ যেন বজায় থাকে, সুষ্ঠু একটা ভোট করার জন্য যা প্রয়োজন আইন-শৃঙ্খলা থেকে শুরু করে ভোটাদের ভোটকেন্দ্রে আসা এবং ভোট দিতে তারা যাতে কোনো রকম প্রতিবন্ধকতায় না পাড়েন, যেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং একটি সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আমরা প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়েছি। এজন্য পুলিশ ও প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি। ইতোপূর্বে রাজশাহী বিভাগের আগের ধাপের নির্বাচনগুলো সুষ্ঠু হয়েছে বলে তারা বৈঠকে জানিয়েছেন।’ তিনি বলেন, তৃতীয় ধাপে কয়েকটি পৌরসভা নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামান্য বিঘ্ন ঘটেছে। তিনটা জায়গায় আমরা পত্রিকার নিউজ দেখে রিটার্নিং অফিসারকে প্রতিবেদন দিতে বলেছি। কেন আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্ন ঘটেছে, কারা ঘটিয়েছে, কেন ভঙ্গ হলো, কারা দায়ী- এই বিষয়গুলো উপর তদন্ত করে একটি প্রতিবেদন পাঠাতে বলা হয়েছে। এই তিনটির বেসরকারি ফলাফলও আমরা স্থগিত করেছি। পৌরসভা তিনটি হলো- নলসিটি, ভূঞাপুর ও কলারোয়া। ‘প্রতিবেদন পাওয়ার যদি দেখা যায় যে অপরাধ ঘটেছে, তাহলে যে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার, তা আমরা নেবো। এক্ষেত্রে ফৌজদারি বা নির্বাচনী আইনে মামলা দায়ের করবো। এটা আমরা করতে চাই, যাতে একটা মেসেজ যায় যে, কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলায় কমিশন কঠোরভাবে এগুলো দমন করতে সব ধনের ব্যবস্থা নেবে। ’
Leave a Reply